মুসবা তিন্নি : এমন এক বিয়ে, সিনেমার গল্পকেও হার মানায় যা। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এক প্রেমিক জুটি দীর্ঘ বছর পর এসে পরস্পরকে আবিষ্কার করলেন এক বৃদ্ধাশ্রমে। এরপর ঘটে অপূর্ব সেই মিলনের মুহূর্ত। ভারতের কেরালায় এই ঘটনা ঘটে। - জি নিউজ বাংলা
জি নিউজ জানায়, শনিবার ত্রিশূরের সরকারি বৃদ্ধাশ্রম রামবর্মাপুরম গভর্নমেন্ট ওল্ড এজ হোমে দেখা যায় অভূতপূর্ব এক দৃশ্য। এখানকার দুই ষাটোর্ধ্ব বাসিন্দা বিয়ে করেছেন।
পাত্র হচ্ছেন ৬৭ বছর বয়সী কোচিয়ান আর পাত্রী দুই বছরের কম বয়সী লক্ষ্মী আমল।
এমন ঘটনার সাক্ষী হতে এদিন বৃদ্ধাশ্রমে এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় মেয়র, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। রীতিমতো এক উৎসবে মেতেছিলেন সবাই।
বিয়ের আগে মিষ্টি একটি প্রেমের গল্প ছিল কোচিয়ান ও লক্ষ্মীর মধ্যে। এক সময় লক্ষ্মীর স্বামীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন কোচিয়ান। সেই সুবাদেই লক্ষ্মীর সঙ্গে তার পরিচয়। স্বামী মারা যাওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন লক্ষ্মী।
তখন লক্ষ্মীর পাশে ছিলেন একমাত্র কোচিয়ানই। তাদের মধ্যে গাঢ় হয় বন্ধুত্ব। বন্ধ্বুত্ব থেকে প্রেম। ২১ বছর ধরে লক্ষ্মীর নানা বিপদ আপদের সঙ্গী ছিলেন কোচিয়ান।
জীবনের এক পর্যায়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন দুজন। এমনকি লক্ষ্মীর ফোন নম্বরও হারিয়ে ফেলেন কোচিয়ান। মাঝখানে পার হয়ে যায় অনেকগুলো বছর। স্ত্রী মৃত্যুর পর বৃদ্ধাশ্রমে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এর মধ্যে একদিন রাস্তায় অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন কোচিয়ান। এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে ত্রিশূরের বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যান। সেখানেই তিনি পেয়ে যান দীর্ঘ বছর আগে হারিয়ে ফেলা লক্ষ্মীকে। এই যেন সিনেমাকেও হার মানায়।
কোচিয়ান ও লক্ষ্মীর দুই যুগ আগের সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে তাদের বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দারা। এ যেন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের লাভ ইন দ্য টাইম অব কলেরা, দীর্ঘ অপেক্ষার পর শেষ বয়সে এসে ফ্লোরেন্তিনো-ফারমিনার মতো পূর্ণতা পায় কোচিয়ান-লক্ষ্মীর প্রেম। সম্পাদনা:জেরিন