শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৭:২৭ সকাল
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৭:২৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাল্যবিয়ে থেকে পালানো মেয়ের স্বর্ণজয়

দেশ রূপান্তর : সহপাঠীদের সঙ্গে বেনী দুলিয়ে স্কুলে যাওয়ার বয়সে তাকে বসাতে চেয়েছিল বিয়ের পিড়িতে। তবে বাল্যবিবাহের বলি হতে চায়নি ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া মেয়েটি। বিয়ের দিন-তারিখও ঘনিয়ে আসে। সে সময়ই নিজ জেলা চুয়াডাঙ্গায় দেখেন চলছে আরচারির প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচী। হয়তো সেখানেই মুক্তির পথ দেখছিলেন ইতি। যোগ দেন উন্মুক্ত ট্রায়ালে। স্থানীয় এক কোচের সহযোগিতায় তীর-ধনুকের প্রথম পরীক্ষায় উতরেও যান।

তারপরও বিয়ের চাপ চলতেই থাকে। তাই তিনি বিয়ের পিড়ি থেকে পালিয়ে যান। ‘নিশানাভেদটা’ সেদিন ভালো করেছিলেন বলে কোচের মাধ্যমেই চলে আসেন জাতীয় পর্যায়ে। প্রতিভা বুঝতে পেরেই তাকে দলে নিয়ে নেন তীরন্দাজ সংসদ। সেখানেই তার আরচারির পাঠ। সেখান থেকেই আজ তিনি দক্ষিণ এশিয়ার সেরা আরচারদের একজন।

মাত্র ১৪ বছর বয়সে ইতি অংশীদার হয়েছেন বাংলাদেশের দু’টি দলগত সোনার পদকের। সোমবার তার সামনে হাতছানি একক ইভেন্টে সেরা হওয়ার।

খোদ আরচারি ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল ইতিকে পরিচয় করিয়ে দিতে চান ‘বিস্ময় বালিকা’ হিসেবে। কাল মেয়েদের রিজার্ভ দলগত ইভেন্টে সোনা জয়ের পর তারকা রোমান সানার সঙ্গে জিতেছেন মিক্সড টিম সোনা।

তীরন্দাজ সংসদের আরচার ইতিকে নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন চপল, ‘ইতি আসলে একটা বিস্ময় বালিকা। এত অল্প বয়সে এখানে কেউ খেলেনা। ২০১৭ সালে প্রতিভা অন্বেষণের সময় তাকে পেয়েছি। সোহেল আকরাম নামে এক কোচ চুয়াডাঙ্গায় খোঁজ পান ইতির। তিনিই আমার বড় ছেলেকে ওই সম্পর্কে জানালেন। আমার ছেলেও তাকে পরিচর্জার ভার নিয়ে নিল। শুনেছি তখনই নাকি ওর বিয়ে পাকা হয়ে গিয়েছিল। অল্প বয়সে বিয়ে থেকে বাঁচতেই তিনি আরচারিকে অবলম্বন করেছিলেন। বড় বিপদ থেকে এই খেলাটাকে তাকে বাঁচিয়েছে। তাই আজ এর ঋণ শোধ করলো ইতি।’

ইতিকে কেবল দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হিসেবেই দেখতে চান না চপল। ওর মাঝে সহজাত প্রতিভা দেখতে পেয়েই ওকে দিয়ে আকাশ ছোঁয়ার কথা বললেন চপল, ‘ইতির তো স্বপ্ন ও কারো মতো হবে না। ও নিজের মতো করেই একসময় বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেবে। ওর বাবা-মা একসময় ওকে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। আর ও চেয়েছিল পড়ালেখা করে মানুষ হতে। আর এখন ও রীতিমত দেশ বরেণ্য আরচারে পরিণত হয়েছে’।

ইতি আসলে বড় রেসের ঘোড়া সেটা বোঝা গেছে যখন সেমিফাইনালে তিনি সদ্য এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ২০২০ অলিম্পিকের কোটা প্লেস পাওয়া ভুটানি আরচার কারমাকে ৬-০ সেটে হারিয়ে দেন।

চপল বলেন, ‘যদি আপনারা ওর কালকের খেলা দেখতেন। ভুটানের কারমা অলিম্পিকে নাম লিখিয়েছে। তার কারণেই ইতি কোটা পায়নি। সেই প্রতিশোধটাই আজ নিয়ে নিল ইতি।’

ইতির মধ্যে চপল দেখেন এক সময়ের দেশ সেরা আরচার শেখ সজিবের মতো প্রতিভা। তবে তিনি চান না ইতি সজিবের মতোই অল্পসময়েই ইতি টানুক ক্যারিয়ারের। বরং স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে ইতি হোক আরচারির নতুন নক্ষত্র।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়