শিরোনাম
◈ ৩২ বছর পর হতে যাচ্ছে জাকসু নির্বাচন, তারিখ ঘোষণা ◈ মানবিক করিডর আসলে কী, বিশ্বের কোথায় কতটা কার্যকর? ◈ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কি আসন্ন, হুঙ্কার-পাল্টা হুঙ্কার ◈ ব্রাজিলের কোচ হওয়ার স্বপ্ন সফল হ‌লো না আনচেলত্তির, রিয়াল মা‌দ্রিদেই থাক‌তে হ‌চ্ছে ◈ বাংলাদেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী চীন ◈ উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ, ব্যানার কেড়ে নেয়ায় ওসির গায়ে হাত তুলতে তেড়ে আসেন বিক্ষোভকারীরা (ভিডিও) ◈ আজ মহান মে দিবস ◈ নতুন আইন হচ্ছে র‍্যাবকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার ঠেকাতে ◈ চলতি মাসে ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার ◈ মন্ত্রিপরিষদকে নির্বাচন কমিশনের ১২ প্রস্তাব

প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২০ দুপুর
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মতিন মেহেদী জেলে বসেই চালাচ্ছেন নিষিদ্ধ সংগঠন আল্লাহর দল

আমাদের সময় : নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের প্রধান সংগঠক আবদুল মতিন মেহেদী ১৩ বছর ধরে কারাবন্দি। বন্দিদশায় থেকেই নতুন করে গুছিয়ে সুসংগঠিত করেছেন সংগঠনটি; কোটি কোটি টাকার তহবিলও সংগ্রহ করেছেন। জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযান পরিচালনাকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত ৬ নভেম্বর ‘দেশের শান্তিশৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যক্রম পরিচালনা’ ও ‘জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’ হওয়ায় আল্লাহর দল/আল্লাহর সরকারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি টানা অভিযানে সংগঠনটির শীর্ষস্থানীয় কিছু নেতাসহ কয়েক ডজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্স র্যা ব। বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে একটি মামলায় আল্লাহর দলের প্রধান মতিন মেহেদীকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে র্যা ব-১ কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে কারাগারে বসে জঙ্গি সংগঠন গোছানো ও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি এবং হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মতিন মেহেদীর অনুপস্থিতিতে আব্রাহিম আহমেদ হিরো আল্লাহর দলের ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনিই কারাগারে গিয়ে মতিন মেহেদীর সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন নির্দেশনা নিয়ে আসতেন। মতিন মেহেদীর নির্দেশনাতেই সংগঠনের কার্যক্রম চলত।

এ ছাড়া যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও মতিন মেহেদী নির্দেশনা দিতেন বাইরে থাকা সংগঠনের নেতাকর্মীদের। এভাবে গত ১৩ বছরে সারাদেশে দুই শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক এবং অর্থদাতা তৈরি করেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মতিন মেহেদী।

গত ১৯ আগস্ট রাজধানী থেকে তিন সহযোগীসহ আব্রাহিম আহমেদ হিরোকে গ্রেপ্তার করে র্যা ব। তিনিই জিজ্ঞাসাবাদে জানান, কারাবন্দি মতিন মেহেদীর নির্দেশনাতেই এখনো চলছে তাদের সংগঠন।

আল্লাহর দল সংগঠনটি ১৯৯৫ সালে জাতীয় সংসদের তৎকালীন প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আবদুল মতিন মেহেদী ওরফে মুমিনুল ইসলাম ওরফে মহিত মাহবুব ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে মতিনুল হকের নেতৃত্বে গঠিত হয়। ২০১৪ সালে কারাগারে বসে মতিন মেহেদী সংগঠনের নাম পাল্টে ‘আল্লাহর সরকার’ নামকরণ করেন। প্রথম দিকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও সাদুল্যাহপুর থানা এলাকা থেকে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ করা হয়। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার সঙ্গে আল্লাহর দলের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পায় পুলিশ-র্যাব। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে ধানমন্ডির গ্রিন রোডস্থ সরকারি কোয়ার্টার থেকে মতিন মেহেদীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামি মতিন মেহেদী ঢাকার বাইরের কয়েকটি কারাগার ঘুরে এখন কাশিমপুর কারাগারে বন্দি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কারাগারে বসে সংগঠন গোছানোর পাশাপাশি আর্থিকভাবে সচ্ছল করার কাজও করেছেন মতিন মেহেদী। তদন্তে নেমে বিভিন্ন ব্যাংকের বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টে আল্লাহর দলের নামে কোটি কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। নিজে সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় আর্থিক অনুদান সংগ্রহের ক্ষেত্রে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি মতিন মেহেদীর। এ সংগঠনকে আর্থিকভাবে সহায়তা (ইয়ানত) প্রদান করা ব্যক্তিদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামও রয়েছে। এ অর্থ দিয়ে সম্ভাব্য হামলার অংশ হিসেবে অস্ত্র কেনারও পরিকল্পনা ছিল সংগঠনটির।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যা বের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল অনুকূল পরিবেশে দেশের অভ্যন্তরে নাশকতায় লিপ্ত হয়ে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করা। এর মাধ্যমে শান্তিশৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার বড় ধরনের নীলনকশা ছিল জঙ্গিদের। তাদের নিজেদের কাঠামো অনুযায়ী দেশের শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্য ছিল সংগঠনটির। তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে এবং ধর্মের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশন ও ভ্রান্ত ইসলামী সংগীতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করে। তাদের সব ধরনের কার্যক্রম নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। অনুলিখন : ওয়ালি উল্লাহ, সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়