মো. শাহরিয়ার আলম : ‘মোল্লা’ সাহেবের হাতের রান্না আমার ব্যবসায়িক অফিসে যখন বসতাম মন্ত্রী হওয়ার আগে, চারঘাট-বাঘার হাজারো মানুষ খেয়েছে। তিনি চলে গেছেন ৮ অক্টোবর ভোর তিনটায়। ২০০৫ সালে নিজে হজ করার পর তার অনুরোধে তাকে প্রথম হজ করতে পাঠিয়েছিলাম। ফিরোজ ভাই একজন সফল ব্যবসায়ী। দিল্লিতে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করার পর প্রায় সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। দুদিন আগে হঠাৎ করে ইনফেকশন হয়ে ইন্তেকাল করলেন। আনোয়ার চাচার কণ্ঠ ছিলো শুনতে থাকার মতো। পাড়ার চাচা হলেও বড় ভাইয়ের মতো, চাচির সঙ্গে। আশির দশকে রাজশাহী বেতার আর আমাদের ক্রিকেটে অনুপ্রেরণা দেয়া ছিলো তার মূল কাজ। তার দুই ছেলেই ক্রিকেটে অনেকদূর গিয়েছে। অনেকদিন ধরে ঢাকায়।
আমার দুলাভাই। আফতাবউদ্দিন। ১৯৭১-এ দেরাদূন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেনা কর্মকর্তা। জীবনে প্রথম আমার গাড়িতে চলা তার সঙ্গে লালমনিরহাটে। ১৯৮৭ সালে যেবার আমার স্বপ্নের সমাপ্তি হতে চলেছিলো সেবার এসে ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনির তার বাসাতেই আমার প্রথম ঠাঁই। কোচিং করতাম কলাবাগানে বুয়েটে ভর্তির জন্য। দুলাভাইয়ের আব্বার মৃত্যুর সময় আমি তার শয্যা পাশে, সম্ভবত ১৯৮৮ সালে। সম্প্রতি দুলাভাইও চলে গেলেন। আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন আমি বাইরে যাবার আগে। আমি পারিনি। বুয়েটের আবরারকে আমি দেখিনি কখনো। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তিরও যোগ্যতা অর্জন করেছিলো। ঠিক যেমনটি পেয়েছিলো আমার দুই অত্যন্ত মেধাবী বন্ধু মাসুদ ও আতাউল ১৯৮৭ সালে। আবরারও হয়ে উঠতে পারতো তাদের মতোই সফল অথবা তাদের চেয়েও বড় কেউ। অন্যরা ইন্তেকাল করেছেন অনেকটা পরিণত বয়েসেই, কিন্তু আবরার তো আমার সন্তানের বয়সী। হত্যাকারীরা অসময়ে সমাপ্ত করে দিয়েছে তার এগিয়ে চলা। কঠিন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই তাদের। আর চাই সবার সহনশীলতা। আল্লাহতায়ালা রাব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করি তিনি যেন সবাইকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন। ফেসবুক থেকে