শিরোনাম
◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম  ◈ গৌরনদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে অবরোধ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩

প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০৪:১৪ সকাল
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০৪:১৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নারীবাদ মানে ‘পুরুষবিদ্বেষ’ নয়

সজীব সরকার : পৃথিবীর নানা দেশে নানা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে নারীবাদী আন্দোলন চলছে। যেদেশে নারীদের যে সমস্যা বেশি, সেদেশের নারীবাদী আন্দোলনে সাধারণত সেই সমস্যাকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। এটিই স্বাভাবিক। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেও আমরা দেখি, একটি নির্দিষ্ট সময়ে গোটা বিশ্বের নারীরা যে সাধারণ সমস্যার শিকার হয়, ওই সময়ের আন্দোলনের ধারায় সেই বিশেষ সমস্যাটি গুরুত্ব পায়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে বিশ্বের নানা প্রান্তেই নারীবাদী আন্দোলন কিছু সমস্যার সম্মুখীন। নারীবাদী আন্দোলনের ভেতরকার কিছু ত্রুটি এজন্য অনেকাংশে দায়ী।

নারীবাদ কী, এর আলোচ্য কী বা এর পদ্ধতি কী.. ইত্যাদি বিষয় আজও সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি বা যায়নি। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, নারীবাদ মানে কেবল নারীর বিষয় নয় বরং নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে সমতাপূর্ণ ও শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়। নারীবাদীরা জনসাধারণকে বিশেষ করে পুরুষদের এটি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। পুরুষসমাজ সাধারণভাবে মনে করে, নারীবাদীরা পুরুষবিদ্বেষী। এই ব্যর্থতার দায় আমি বলবো, মূলত নারীবাদী আন্দোলনের কর্মীদেরই নিতে হবে। পাশাপাশি পুরুষদেরও দায় রয়েছে। নারীবাদকে শুরুতেই পুরুষবিদ্বেষী বা পুরুষবিরোধী মনে করে নিয়ে এর আকণ্ঠ বিরোধিতা করা। পুরুষরা নারীবাদ কী ও কেন এর দরকার হলো... এই বিষয়ে পড়তে নারাজ, জানতে নারাজ, মানতে নারাজ। বিশেষ করে এশিয়ায় এই সমস্যা বেশ প্রবল। আমরা দেখি, নিজেকে ‘নারীবাদী’ দাবি করে অনেক নারী যেসব মতামত-মন্তব্য-বক্তব্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তার প্রায় শতভাগই পুরুষের প্রতি ঘৃণা থেকে উৎসারিত ও বিদ্বেষসঞ্জাত। অবশ্যই স্বীকার করছি, শত-সহ¯্র বছর ধরে নারীরা যেভাবে পুরুষ কর্তৃক বঞ্চনা-অবহেলা-নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছেন, তাতে এই বিদ্বেষ জন্মানোটা স্বাভাবিক।

কিন্তু যখন হাজারো বছর ধরে প্রচলিত একটি ভুল সমাজ ব্যবস্থা পাল্টানোর জন্য আন্দোলন চলছে, ভারসাম্যহীন সমাজকে ভারসাম্যপূর্ণ করার আন্দোলন চলছে, তখন পুরুষসমাজকে ‘শত্রু’ বানিয়ে সেই আন্দোলনে সফল হওয়াটা কঠিন। এজন্য নির্বিচারভাবে সব পুরুষকে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে পুরুষদের মধ্যে কার কী ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, সেগুলোকে বরং যতোটা সম্ভব নৈর্ব্যক্তিকভাবে আন্দোলনের এজেন্ডায় তুলে আনা উচিত। অবশ্যই ব্যক্তি বিশেষের অন্যায় বা অপরাধের বিচার হবে, তবে তা যথাযথ উপায়ে, সামাজিক ও আইনি প্রক্রিয়ায়। পুরুষ ধর্ষণ করে বলে পৃথিবীর সব পুরুষকে নির্বিচারে ধর্ষক বললে সেটি নারীবাদী আন্দোলনের কৌশলগত ভুলই হবে, কেননা এর ফলে নারীবাদী আন্দোলন একেবারে গোড়াতেই সমাজের অর্ধেক অংশের সমর্থন হারাবে। যারা নিজেদের নারীবাদী বলে ভাবেন বা দাবি করেন, সেই নারী ও পুরুষ উভয়েরই উচিত হবে শুরুতে নারীবাদ কী-কেন-কীভাবে, এই মৌলিক পড়াশোনাটুকু করে নেয়া। শুরুতেই এটি বোঝা দরকার, নারীবাদের মৌলিক উদ্দেশ্য হলো সমাজে নারী ও পুরুষ, উভয়ের মধ্যে সমতাপূর্ণ, শ্রদ্ধাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা, সমাজ থেকে পুরুষকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা নয়। পুরুষতন্ত্র বা নারীবাদ নয়, সত্যিকার আদর্শিক আন্দোলন যেজন্য হওয়া উচিত, তাহলো ‘মানবতাবাদ’। অন্তত নারীবাদী আন্দোলনের লক্ষ্য সেটিই হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি এবং এ আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সেটিই বলে আমি বিশ্বাস করি। লেখক : সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়