সালেহ্ বিপ্লব : বরকনে দু’জনেই বেঁচে গেছেন, তবে এই বেঁচে থাকাটাকেই তাদের কাছে মনে হচ্ছে অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক। হাসি আর আনন্দে উজ্জ্বল-উচ্ছ্বল বিয়ের অনুষ্ঠানে নারকীয় আত্মঘাতী হামলার কথা তারা কিছুতেই ভুলতে পারবেন না। মানুষের রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন দেহগুলো তাদের জীবনের সব সুখ কেড়ে নিয়েছে, কোনোদিন সুখী হতে পারবেন বলে বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউই। কনে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন, দুর্বলতায় কথা বলারও সাধ্য নেই। বর মিরওয়েইস এলমি ‘তোলো নিউজ’-এর সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, তারা কী দুর্বিসহ যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছেন। বিবিসি
৬৩ জনের মৃত্যু আর ১৮০ জনের আহত হওয়ার এই মর্মান্তিক ঘটনার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপ। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি এই হামলাকে বর্বরোচিত বলে অভিহিত করেছেন। এই সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্র তৈরির জন্য তিনি তালিবানকে অভিযুক্ত করেছেন। অবশ্য জাতিসংঘের সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়ায় থাকা তালিবান নিন্দা জানিয়েছে কাবুলের বিয়ের আসরে ওই হামলার।
কনে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই, বরও প্রচণ্ড শকড। এর মাঝে তোলো নিউজ সাক্ষাতকার নিয়েছে বর মিরওয়েইস এলমির। তিনি বিয়ের আসরে স্বজন ও অতিথিদের হাসিমাখা মুখ আর প্রাণময় উপস্থিতি এখনো তার চোখে ভাসছে। পলকেই আবার সেই সুখছবি হারিয়ে যাচ্ছে শোকের কালো ছায়ায়। জানালেন তার কনে এবং দুই পরিবারের মানুষ ভয়ংকর আঘাতে স্তব্ধ হয়ে গেছে। কথা বলার মতো অবস্থায় নেই কেউ।
তিনি বলেন, আমি আমার ভাইদের হারিয়েছি, বন্ধুদের হারিয়েছি। স্বজনদের হারিয়েছি। আমি জীবনে কোনোদিন সুখী হতে পারবো না। আমি প্রচণ্ড দুর্বলতা বোধ করছি। জানাজায় যেতে পারছি না, দাফনে অংশ নিতে পারছি না। আমি জানি, আফগানদের জীবনে এটাই শেষ নয়, আরো কষ্ট সামনে আছে।
কনের বাবা জানিয়েছেন, হামলায় তার পরিবারের ১৪ জন নিহত হয়েছেন। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট টুইটারে লিখেছেন, এখন তার প্রধান দায়িত্ব শোকাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকা। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কী ঘাটতি আছে, তা পর্যালোচনার জন্যে বৈঠক ডাকবেন বলেও জানান তিনি। রাজধানী কাবুলের শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চলটি বার বার জঙ্গীদের হামলার টার্গেট হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :