ইউসুফ বাচ্চু: জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চেহলাম (চল্লিশা) উপলক্ষে আগামী ৩১ আগস্ট সারাদেশে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ আগস্ট এরশাদের চল্লিশার দিন পূর্ণ হলেও সেদিন হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্মাষ্টমী উৎসব হওয়ায় ৩১ আগস্ট দোয়া মাহফিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভায়।
শনিবারের সভায় বেশ কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য পার্টির গঠনতন্ত্র অনুসারে চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতা হওয়ার প্রস্তাব দেন। সভায় এরশাদের চেহলাম পালনে প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের এক লাখ টাকা করে পার্টির ফান্ডে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।
জাপার বনানী কার্যালয়ে এ বৈঠক বেলা ১১টায় শুরু হয়ে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চলে। সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সভায় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ ৩৫ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় মূল আলোচনা হয়েছে এরশাদের চল্লিশা পালন ও বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন প্রসঙ্গে। এরশাদের শূন্য আসন রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
সুত্র জানায়, সভায় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা বলেন, এরশাদের চেহলাম কেন্দ্রীয়ভাবে রংপুরে করা উচিত। যেহেতু তাকে সেখানে সমাহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুসারে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেই বিরোধী দলের নেতা করা প্রয়োজন।
অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, পার্টির সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গঠনতন্ত্র বিধান অনুসারে চেয়ারম্যান যেকোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান চাইলে বিরোধী দলের নেতা হতে পারেন।
প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতা করা উচিত। কারণ, তার সঙ্গে পার্টির তৃণমূলের সম্পর্ক রয়েছে। চেয়ারম্যান বিরোধী দলের নেতা হবেন, এটাই স্বাভাবিক।
প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান বলেন, গঠনতন্ত্র অনুসারে দল পরিচালনা করতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুসারে সর্বসম্মতিক্রমে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন করতে হবে।
জাপার আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, পার্টির গতিধারা অব্যাহত রাখতে জিএম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলের নেতা করা দরকার। তিনি এ দায়িত্ব নেবেন- এটা নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রত্যাশা।
সভা সূত্র জানায়, পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের তার বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে। জনগণের কল্যাণে যে ধরনের কর্মসূচি নেয়া দরকার, তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিরোধী দলের নেতা কে হবেন, সে বিষয়ে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, যেন পার্টিতে কোনো বিভেদের সৃষ্টি না হয়। রংপুরের উপ-নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপ-নির্বাচনে রংপুরের স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে প্রার্থী হিসেবে চারজনের নাম চাওয়া হবে। সেটার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সভা শেষে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুসারে চেয়ারম্যানকে সুপ্রিম পাওয়ার দেয়া আছে। আমাদের দলের মাঝে কোনো বিরোধ নেই। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিরোধীদলের নেতা ও রংপুর-৩ আসনে মনোনয়ন দেয়া হবে।’
সম্পাদনা: অশোকেশ রায়
আপনার মতামত লিখুন :