সমীরণ রায় : কর্মক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে না ভুগে আত্মবিশ্বাসী হতে প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে সেসব সমাধানের নির্দেশনাও দেন তিনি।
রোববার বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে ১১০, ১১১ এবং ১১২তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, কর্মক্ষেত্রে সব থেকে বড় কথা আত্মবিশ্বাস। কোনো একটা কাজ করতে গেলে কিভাবে করব, কিভাবে হবে, কিভাবে টাকা আসবে, কোত্থেকে টাকা আসবে, এতো দুশ্চিন্তা না করে মনে রাখতে হবে এ কাজটা করতে হবে। কিভাবে করতে হবে সেটা নিজেই খুঁজে বের করতে হবে। নিজের ভেতর ইনোভেটিভ চিন্তা থাকতে হবে। দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগলে চলবে না। মনে করতে হবে অবশ্যই পারব। আমি এটুকুই অনুরোধ করব, যেখানে যাবেন শুধু চাকরির জন্য চাকরি না। জনসেবা করা, দেশ সেবা করা, দেশকে ভালোবাসা, দেশের মানুষকে ভালোবাসা এই কথাগুলো মনে রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মাঠ প্রশাসনে যারা কাজ করবেন ওখানকার মানুষের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে হবে। সমাধানের পথ বের করতে হবে। তারা যেন ন্যায় বিচার পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। শুধু গতানুগতিকভাবে দেশ চালালে চলবে না। দেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত চলতে হবে। কারণ আমরা ঘোষণা দিয়েছি প্রত্যেকটা গ্রামের মানুষ শহরের সুযোগ পাবে। সেভাবে কিন্তু আমরা গ্রামকে গড়ে তুলতে চাই। সেভাবে কিন্তু আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থাও গড়ে তুলছি।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, খেয়াল রাখতে হবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক যেন আমাদের সমাজকে ধ্বংস করতে না পারে। প্রতিটি অর্থ জনগণের অর্থ এটা মাথায় রাখতে হবে। আমরা বেতন-ভাতা যা পাচ্ছি সেটা এদেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের অর্থ, এটা মাথায় রাখতে হবে। তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের উন্নতি করা এটাই আমাদের কর্তব্য।
নবীন কর্মকর্তাদের সঠিক ইতিহাস জানার বিষয়েও গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস জানতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের পরে আমাদের কয়েকটা প্রজন্ম বাংলাদেশের বিজয়ের ইতিহাস, সংগ্রামের ইতিহাস জানতে পারেনি। ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল, এটা একটা জাতির জন্য সবচেয়ে সর্বনাশের ব্যাপার। কারণ আমরা যদি বিজয়ের ইতিহাস জানতে না পারি। পরাজিতদের পদলেহন করতে থাকি আমরা তাহলে উঠে দাঁড়াব কিভাবে? জনপ্রশাসনের উন্নয়নে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এম আশিকুর রহমান, জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর কাজী রওশন আক্তার প্রমুখ।