সাজিয়া আক্তার : নির্বাচনী ইশতিহারে যে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ছিলো সেটা এই বাজেটে সামগ্রিক বাস্তবতায় প্রতিফলিত হয়নি বলে জানিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকালে সিপিডি কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। সময় টিভি, ১৯.০০
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজস্ব আহরণ এবং রাজস্ব কাঠামো নিয়ে তাদের আগে যে বক্তব্য ছিলো সেটি প্রতিফলিত হয়েছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, উনি বাস্তবসম্মত একটি বাজেট তৈরি করতে চেয়েছেন। তিনি তা চেষ্টা করেছেন, কিন্তু এই বাজেটে তার বাস্তবসম্মত প্রতিফলন দেখা যায়নি। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা উনি কমিয়ে নিয়ে এসেছেন, কিন্তু প্রকৃত অর্থে এটা ৮৫ হাজার কোটি টাকার কম হবে বলে আমাদের বিবেচনায় আছে।
তিনি আরো বলেন, বাজেট উপস্থাপনায় নতুনত্ব ছিলো সেজন্য সাধুবাদ জানাই, কিন্তু প্রস্তাবনার ভিতরে সেই নতুনত্ব ছিলো কিনা বা অভিনবত্ব কতখানি প্রতিফলিত হবে সেটাই দেখার বিষয়। এটি দেখার জন্য আমরা কয়েকটি আঙ্গিক ব্যবহার করছি। প্রথম যে বিষয়টি সামনে এনেছি সেটি হলো সামষ্টিক অর্থনীতির পরিস্থিতি সম্মন্ধে, তা বিরাজমান বাস্তবতায়, এই বাজেট কতটুকো ধারণ করে? নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে এই বাজেট অসম্প‚র্ণ।
গত দুদিন আগে সিপিডির পক্ষ থেকে তিনটি বিষয় সম্পর্কে জোর দিয়ে সামনে নিয়ে আসা হয়েছিলো যে অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলোর তিনটি জায়গাকে আমরা নির্দিষ্ট করেছিলাম প্রাধিকার বলে। কাজেই আগামী অর্থবছরের সূচনাবিন্দুর যে বিবেচনা সেটা আবার ভ্রান্ত হয়ে গেলো। একইভাবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়নেও যেটা আশা করা হচ্ছে তিনমাসের মধ্যে হবে সেটা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবসম্মত না। এর কারণে আগামী বছরের প্রাক্কলনগুলো বাস্তবতার ভিত্তিতে রচিত হলো না। এটা একটি বড় সমস্যার জায়গা। এর ফলে যে ঘাটতি হচ্ছে সেটার ক্ষেত্রেও অভ্যন্তরীণ উৎস এবং বৈদেশিক উৎসের যে প্রাক্কলন সেগুলোও এই অতিক্রান্ত বছরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়াতে আগামী অর্থ বছরের প্রাক্কলনগুলো অসর্ম্পূন হয়ে গেলো।
দ্বিতীয়ত, এই পুরো পরিস্থিতিকে কাজে লাগানোর জন্য এবারের বাজেটে আর্থিক ব্যবস্থাপনা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ মূদ্রানীতি এবং বাণিজ্যনীতির বিষয়াদি। এই বাজেটে যে অনুমিত বিনিময় হার দেয়া হয়েছে বাস্তবতার সাথে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বড় সমস্যার মধ্যে রয়েছে অনাদায়ী ঋণ এবং তারল্য সংকট এটা বড় সমস্যা। এই তারল্য সম্পদ কিভাবে মিলবে? এবারের বাজেটে যে তারল্য ঘাটতি অর্থায়নের কথা বলা হয়েছে, সে ঘাটতি হবে ৪৭ কোটি টাকা। ব্যাংক এ টাকা কোথা থেকে দেবে? ব্যাংক ব্যবস্থা আরো চাপের মধ্যে পড়বে। রাজস্ব কাঠামো, বিনিময় হার এবং ব্যাংক খাতের সংস্কার, এই তিনটির প্রতিফলন বা কর্মসূচি আমরা বাজেটে লক্ষ্য করিনি। সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন
আপনার মতামত লিখুন :