ডেইলি স্টার বাংলা: কৃষকরা ধান নিয়ে কষ্টে আছেন। যদিও বা ভাগ্যক্রমে শ্রমিক মেলে তো শ্রমিকের মজুরি মেলানো দায় হয়ে যায়। সরকার নির্ধারিত প্রতিমণ ধানের দাম এক হাজার ৪০ টাকা হলেও বাজারে ধানের দাম মণপ্রতি ৬০০ টাকা। ক্ষেত থেকে ধান কাটতে শ্রমিকের মজুরি ৮৫০ টাকা। মানে খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি।
তার মানে মোটা দাগে সমস্যা দুইটি। এক- ধান কাটার লোক নেই, দুই- ধানের দাম নেই।
অবস্থা যখন এই রকম তখন স্বেচ্ছায় বিভিন্ন জনে বিভিন্ন জায়গায় ধান কেটে দিচ্ছেন কৃষকের কষ্ট লাঘবে। কোথাও স্কাউট, কোথাও কলেজের ছাত্র, কোথাও এলাকার যুবকেরা। মানুষও তা বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেছেন বলে মনে হয়।
ছাত্রলীগ যখন তার কমিটি ইস্যুতে বেশ সমালোচনার মুখে, তখন কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো নিঃসন্দেহে মহৎ উদ্যোগ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যদি আন্তরিকভাবে কাজটি করতে পারতেন, তবে নিশ্চয় মানুষের বাহবা পেতেন। সরকারি ধান সংগ্রহে অনিয়ম নতুন কিছু নয়। সরকারি দলের পছন্দের কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ কিংবা মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে কেনার অভিযোগ পুরোনো।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাজ মাঠে-মাঠে ঘুরে ধান সংগ্রহ করা নয়। যদি ডিসি বা ইউএনওকে এই কাজ করতে হয়, তবে সাধারণ মানুষের কাছে কী বার্তা যায়। তবে কি খাদ্য কর্মকর্তারা ব্যর্থ বা তারা কি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত? যার কারণে তাদের উপর ভরসা করা যাচ্ছে না। সরকারি কর্মকর্তারা কি মিডিয়ায় প্রচার চাচ্ছেন, তাদের আন্তরিকতা প্রমাণে? ছাত্রলীগের ধান কাটা বা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডিসি-ইউএনওদের ধান কেনা কোনো সমাধান নয়। কৃষকের সমস্যা লাঘবে দরকার স্থায়ী সমাধান।
ডিজিটাল বাংলাদেশে এখন বোতাম টিপে চোখের পলকে ২০ তলায় উঠা যায়। কিন্তু, কৃষি যেনে কোথায় আটকে আছে। যদি প্রতি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র থাকতো, তবে নিশ্চিত কৃষকদের এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
কৃষিপ্রধান দেশে সবার আগে কৃষিতে ডিজিটালাইজেশন দরকার। ডিসি বা ইউএনওদের মাঠে-মাঠে গিয়ে ধান সংগ্রহের দরকার নেই। যার কাজ তাকে করতে দিন। আপনারা শুধু সঠিকভাবে নজরদারি করুন। তাহলেই কৃষকের দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হবে। না হলে আপনাদের সব দৌড়াদৌড়ি মাঠে মারা যাবে।
সম্পাদনা: অশোকেশ রায়
আপনার মতামত লিখুন :