মাসুদ রানা : পশ্চিবঙ্গের বামেরা এবার পূর্ববঙ্গের বামেদের স্তরে... বিরল প্রজাতির স্তরে... এসে পৌঁছেছে। এটি একটি ভালো লক্ষণ। কারণ এদের বিনাশ না হলে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি আত্মপরিচয় বোধ জেগে উঠবে না। যাক পূর্ববঙ্গে যেহেতু ধর্মনিরেপক্ষ বাঙালি-আত্মপরিচয় ধারণ করে কেউ রাজনীতি করে না, এখানে বামেরা একটি সাম্যবাদী, ধর্মনিরপেক্ষ, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক রিপাবলিক গঠনের লক্ষ্য ও কর্মসূচিতভিত্তিক রাজনীতি শুরু করলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে একটি অদম্য শক্তি হিসেবে সামনে চলে আসবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, শেক্সপিয়ারের ভাষায় : (টু বি অর নট টু বি. দ্যাট ইজ দ্য কুয়েশ্চন!)
দুই. বিজেপি মোটেও হিন্দু মৌলবাদী দল নয়। যারা অন্য একটি ধর্মের মৌলবাদের সমান্তরাল হিসেবে বিজেপিকে হিন্দু মৌলবাদী দল বলেন, তারা ভুল বলেন। হিন্দু মৌলবাদে ব্রাহ্মণ ও শূদ্র এক জাতির নয়। আর বিজেপি বলছে, ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রীয়-বৈশ্য-শূদ্র সকলেই মিলেই হিন্দু জাতি। এমনকি এরা মুসলমানকেও হিন্দু হতে আহবান জানায়। ফলে বিজেপি হিন্দু মৌলবাদী হতে পারে না। এরা হচ্ছে একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল।
তিন. ভারতে হিন্দুত্বের বিকল্প কী?‘ভারতীয় জাতি’ বলতে কোনো জাতি নেই। কিন্তু ভারত রাষ্ট্র-শাসিত বিভিন্ন ভাষাভাষী জাতির মধ্যে চর্চিত বিভিন্ন প্রকারের পৌত্তিলকতাকে একটি নিষ্ঠুর-চতুর সামরিক-সামাজিক প্রকৌশলের মাধ্যমে একটি অভিন্ন পৌত্তলিক ধর্মরূপে ‘হিন্দুত্ব’ নাম দিয়ে, তার ভিত্তিতে তথাকথিত ‘ভারতীয় জাতি’ গঠনে চেষ্টা চলছে। ভারত রাষ্ট্রে হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে লড়তে পারে একমাত্র ভাষা-ভিত্তিক ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ, যার অনিবার্য পরিণতি হবে অনেকগুলো স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্রের উত্থান। আমার ধারণা, ইতিহাসের গতি সেদিকেই। ফেসবুক থেকে॥