বিভুরঞ্জন সরকার : বিজেপিকে ‘সাম্প্রদায়িক’ দল বলায় অনেকেই দেখি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। কেউ বলেছেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল নয়। হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল। কেউ আবার বলেছেন, হিন্দুত্ববাদ খুব ভালো বিষয়। আমার তো এখন অবস্থাই কাহিল। হিন্দু জাতীয়তাবাদ যদি সাম্প্রদায়িক না হয় তাহলে মুসলিম জাতীয়তাবাদ সাম্প্রদায়িক হয় কি করে? ধর্মভিত্তিক জাতীয়তা অসাম্প্রদায়িক হলো কবে, সেটা আমার জানা নেই। সেই কবে থেকে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে জেনে এসেছি। বিজেপির পূর্বসূরী জনসঙ্ঘও তাই ছিলো। এতোদিনের জানাটা ভুল ছিলো, সেটা এখন জানছি। হিন্দুরা যদি বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল মনে না করেন, তাহলে মুসলমানরা জামায়াত-বিএনপি-মুসলিম লীগকে সাম্প্রদায়িক দল মনে করবে কেন?
না, আমি কোনো তত্ত্ব আলোচনায় যাবো না। আমি কেবল সাধারণ বুঝের প্রশ্ন তুলছি। আমরা একটি দলকে সাম্প্রদায়িক বলবো কখন? রাজনীতিতে ইসলাম ধর্মের ব্যবহার পরিত্যাজ্য হলে হিন্দু ধর্মের ব্যবহার গ্রহণযোগ্য হবে কেন? হিন্দু হলে অসাম্প্রদায়িক, আর অন্য ধর্ম হলে সেটা সাম্প্রদায়িক - এটা কোনো যুক্তির কথা? একটি বিষয় লক্ষ করছি : এখন আমি হিন্দু হলে মুসলমানের কাছে ধর্মনিরপেক্ষ বা অসাম্প্রদায়িক আচরণ আশা করি। আর মুসলমান হলে হিন্দুর কাছে চাই অসাম্প্রদায়িক মনোভাব। আমি এদেশে যেমন শরীয়া আইন চাই না, তেমনি ওদেশেও ধর্মীয় শাসন চাই না। এবার নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি কোনো সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা নাকি বলেনি। সাম্প্রদায়িক প্রচারণা জিনিসটা আসলে কেমন? কোন কথা বললে মনে হবে, সাম্প্রদায়িক?
যারা ভাবছেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক সংগঠন নয়, তারা অপেক্ষা করুন। দেখতে থাকুন। মানুষ ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। আমি মানুষের এই মতদানকে শ্রদ্ধা করি। ভোট নিশ্চয়ই রাজনৈতিক আদর্শ বিবেচনার শেষ মাপকাঠি নয়। আমার কোনো মতান্ধতা নেই। বিজেপি যদি সত্যি ‘সব কা সাথ’ চলতে পারেন, আমার তো তাতে ব্যক্তিগতভাবে অখুশি হওয়ার কিছু নেই।
লেখক : গ্রুপ যুগ্ম সম্পাদক, আমাদের নতুন সময়
আপনার মতামত লিখুন :