মৌরী সিদ্দিকা : ভিসা সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় (টিওইআইসি) প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত বহু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে অন্যায়ভাবে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল অডিট অফিসের এক তদন্ত প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। শুক্রবার ( ২৪ মে) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতারণার অভিযোগে হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের কাজে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দফতর। সেকারণে ভুল করে অনেক নিরাপরাধ শিক্ষার্থীর ভিসাও বাতিল হয়েছে। এসব বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীও রয়েছে। - বাংলা ট্রিবিউন
২০১৪ সালে বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ব্রিটিশ কলেজগুলোতে টেস্ট অব ইংলিশ ফর ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশন (টিওইআইসি) পরীক্ষায় প্রতারণার কিছু চিত্র উঠে আসে। এ ঘটনায় তদন্তে নামে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা ৩৩ হাজার ৭২৫টি পরীক্ষার ফল অবৈধ বা অকার্যকর ঘোষণা করে। এছাড়া ২২ হাজার ৬৯৪টি পরীক্ষার ফল প্রশ্নবিদ্ধ বলে সিদ্ধান্ত দেয়। যাদের ফল প্রশ্নবিদ্ধ ছিল তাদেরকে রিভিউ-এর সুযোগ দেওয়া হলেও অন্যদেরকে কোর্স বাতিল করতে বলা হয়। এমনকি অনেককে স্বদেশে ফেরতও পাঠানো হয়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরব হয়ে ওঠে অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা ব্রিটিশ সংগঠন মাইগ্রেন্ট ভয়েস। তাদের তৎপরতার জেরে গত মাসে এই ইস্যুতে তদন্ত শুরু করে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল অডিট অফিস।
শুক্রবার ন্যাশনাল অডিট অফিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এটা স্পষ্ট যে ব্যাপক প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে কিছু ভুল মানুষকে ভুলভাবে দায়ী করা হয়েছে এবং তাদেরকে অন্যায়ভাবে যুক্তরাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের প্রসঙ্গে ন্যাশনাল অডিট অফিসের প্রধান আমিয়াস মোরসে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন ব্যাপকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে, ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় প্রতারণায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বহিষ্কার ও সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া শুরু করে তখন আমরা ভেবেছিলাম প্রতারণায় জড়িত না থাকা ব্যক্তিদের সুরক্ষাকেও তারা একইরকম গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। খুব কম ক্ষেত্রেই আমাদের অনুমান ঠিক হয়ে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তা ঘটেনি।’