শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ২৪ মে, ২০১৯, ০৮:১৪ সকাল
আপডেট : ২৪ মে, ২০১৯, ০৮:১৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারতীয়রা ইলিশ ধরবে আমরা কেন পারবো না অনুযোগ বাংলাদেশী জেলেদের

জাবের হোসেন : চলতি মাসের ২০ তারিখ থেকে বাংলাদেশের সাগরে ৬৫ দিনের জন্য সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলে ইলিশ ধরেন এমন জলেরা বিপাকে পড়েছেন। ডয়েচ ভেলে

মা ইলিশ ডিম পাড়ে নদীতে। সমূদ্রের এই মাছটি তাই প্রজনন মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে চলে আসে ডিম পাড়তে। এ কারণে প্রতি বছর ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সব ধরনের ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। তবে এবার থেকে সাগরে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নতুন এই আদেশের ফলে ইলিশ ধরা জেলেরা বিপাকে পড়েছেন। তাদের কথা এটাই সাগরে ইলিশ ধরার মৌসুম, এখন না ধরতে পারলে তাদের সারা বছর আর কোনো উপার্জন থাকবে না।

এখন থেকে পরবর্তী ৫ মাস জেলেরা সাগরে ইলিশ ধরেন। আর সারা বছর সেই আয় দিয়ে চলেন। হঠাৎ করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও জেলেদের সহায়তার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সাগরে ৬৫ দিন মাছ না ধরার এই আদেশে বিক্ষুব্ধ হয়ে উছেছেন দেশের উপকূলীয় ১২ জেলার জেলে সম্প্রদায়। তারা মাছ ধরার নৌকা নিয়ে নদীতে মানবন্ধন ছাড়াও সভা সমাবেশ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছেন। তাদের প্রশ্ন এই সময়ে ইলিশ ধারতে না পারলে আমরা খাবো কী?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৫ সালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দেশের সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধি করতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু এতদিন এটা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এবার তা বাস্তবায়ন করা হলো। তবে স্থানীয় নদ-নদী এই নিষেধাজ্ঞা মুক্ত আছে।
উপকুলীয় জেলা বরগুনার সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, তিনটি কারণে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একটি কারণ হলো এই সময়ে সাগরে মাছের প্রজনন হয়। তিনি আরো জানান, এই সময়টি অন্য মাছের প্রজনন মৌসুম হলেও ইলিশ মাছের প্রজনন মৌসুম নয়। সাগরে ইলিশ ডিমও দেয় না।

বাংলাদেশ ফিশিং বোট মৎসজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, এখন থেকে পরবর্তী ৫ মাসই সাগরে ইলিশ ধরার সময়। এখন ইলিশের প্রজননের সময়ও নয়। বলা হচ্ছে, এখন মাছ ধরলে সাগরের অন্য মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হবে। পোনা মাছ ও রেণু জালে আটকা পড়ে মারা যাবে। কিন্তু আমরা ফিশিং বোটে যে জাল ব্যবহার করি তার ফাঁস ৪ ইঞ্চি। এতে কোনোভাবেই ছোট মাছ আটকায় না। আমাদের ওপর জুলুম করা হচ্ছে। জেলেরা সাগরে যাওয়ার জন্য নৌকা প্রস্তুত করেছে। এখন হঠাৎ এই নিষেধাজ্ঞা তাদের কাছে গজবের মতো। এটা অনেকেই মানবে না।

তিনি আরো বলেন, সাগরে আমাদের ফিশিং বোটের বাইরে ২৫৫টি ফিশিং জাহাজ আছে। তারা বেহুন্দি জাল দিয়ে সব ধরনের মাছ ধরে। তাদের জালের ফাঁস এক ইঞ্চি। তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা হতে পারে। আর এই সময়ে কিন্তু ভারতের জেলেরা ইলিশ মাছ ধরবে। তাহলে আমরা পারব না কেন?

মৎস্য গবেষণা ইন্সটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান বলেন, বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে ৮ মাস ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। তাছাড়া এটা ইলিশের প্রজনন মৌসুমও নয়। তাই এটা নিয়ে আলোচনা চলছে যে সাগরে অন্য মাছের প্রজনন নিরাপদ রেখে এই সময়ে ইলিশ ধরা কিভাবে অব্যাহত রাখা যায।

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান জেলেদের যুক্তি মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, ৮ মাস জাটকা ধরা বন্ধ থাকে, তখন তো তঁরা বড় ইলিশ ধরতে পারেন। পুরোপুরি বন্ধ থাকে মাত্র ২২ দিন। আর সমূদ্রের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও বাড়াতে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময়ে তারা নদীতে মাছ ধরতে পারবে। সারা বছরই তো ইলিশের মৌসুম। এই সময়ে ১২টি জেলার চার হাজারের বেশি জেলে পরিবারকে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান এটা দ্রুতই দেয়া শুরু হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়