শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ২৪ মে, ২০১৯, ০৬:১০ সকাল
আপডেট : ২৪ মে, ২০১৯, ০৬:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কেন হেরে গেলেন রাহুল ?

ডেস্ক রিপোর্ট  : এবার আটঘাট বেঁধে নেমেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। ময়দানে নামিয়েছিলেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকেও। নির্বাচন প্রচারণায় মোদির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানে। ১৫ লাখ চাকরির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ ছিল। নোটবন্দি, জিএসটি থেকে বিজয় মাল্য, নীরব মোদি ইস্যুতে মোদিবিরোধী হাওয়া তুলতে চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। ‘ন্যায়’ প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কিছুই কাজে এল না।

নরেন্দ্র মোদির বিকল্প হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেন না রাহুল গান্ধী। গতবারের চেয়ে কয়েকটা আসন বেড়েছে বটে, কিন্তু তাতে ইতরবিশেষ কিছু হয়নি। ভরাডুবি কংগ্রেসের।

সপ্তদশ লোকসভা ভোটের ইভিএম খুলতেই দিকে দিকে বিজেপির জয়ধ্বনি। গতবারের চেয়েও আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার গড়ার পথে এনডিএ জোট।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তাই মনে করছেন, মোদির পরিবর্ত হিসেবে রাহুলকে দেশবাসী গ্রহণ করেননি। কিন্তু কেন?

প্রথমত, দিশাহীনতা। ভোটের আগে পর্যন্ত রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস স্পষ্ট লক্ষ্য স্থির করতে পারেনি। তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি), তৃণমূল কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), সমাজবাদী পার্টি (এসপি) নেতৃত্ব যখন বিজেপি বিরোধী মঞ্চ গড়ে একজোট হওয়ার চেষ্টা করেছেন, তখন কংগ্রেস তাদের সঙ্গে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’র মতো অবস্থান বজায় রেখেছে।

কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া র‌্যালিতে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন, অথচ বাংলায় জোট হয়নি। দিল্লিতে কেজরিওয়ালের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেননি। উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপি জোটে শামিল না হয়ে আলাদা করে লড়েছেন। টিডিপি সুপ্রিমো চন্দ্রবাবুর সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করছেন, অথচ অন্ধ্রপ্রদেশে আলাদা লড়াই করেছেন।

জোট বলতে শুধু ইউপিএর শরিকদের সঙ্গে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, বিহারের মতো কয়েকটি রাজ্যে আসন সমঝোতা হয়েছে। তা ছাড়া, ভোটের পর এই জোটে সামিল হবেন কি না, নিজেরা সরকার গড়ার মতো অবস্থায় গেলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাননি সাধারণ মানুষ। বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি কংগ্রেসের এই দোদুল্যমান অবস্থান।

কয়েক মাস আগেই হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্য, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড়, রাজস্থানে বিজেপিকে হারিয়ে প্রায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। কিন্তু সেই সব রাজ্যেও লোকসভায় শোচনীয় ফল কংগ্রেসের। কেন?

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিধানসভা ভোট এবং লোকসভা ভোট হয় আলাদা সমীকরণে। আমজনতার চাওয়া-পাওয়া থেকে নেতাদের প্রতিশ্রুতি, সবই আলাদা হয়। এই তিন রাজ্যের ভোটাররা সেই পরিণত মস্তিষ্কের সাক্ষ্যই রেখেছেন লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে আলাদা আলাদা রায় দিয়ে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই তিন রাজ্যে কংগ্রেসের জয় এসেছিল আঞ্চলিক রাজনৈতিক সমীকরণ মেনে এবং দীর্ঘ দিনের বিজেপি শাসনে মানুষের বীতশ্রদ্ধ হওয়ার প্রতিফলন। রাহুল ফ্যাক্টর সেখানে কাজ করেছে খুব সামান্যই।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কংগ্রেসের ঋণাত্মক প্রচার। ক্ষমতায় এলে কী করবেন, সেটার থেকেও রাহুল গান্ধীল প্রচারে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে মোদিবিরোধিতা। ‘ন্যায়’ প্রকল্পে গরিব কৃষকদের বছরে ৭২ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা ছাড়া সেভাবে কোনও সদর্থক বার্তা ছিল না রাহুলের প্রচারে। অর্থনীতি, শিক্ষা, চাকরি, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উন্নয়ন করতে কংগ্রেসের রোড ম্যাপ কারও কাছেই স্পষ্ট হয়নি। বরং মোদি জমানায় কী কী দুর্নীতি হয়েছে, কীভাবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের চেষ্টা হয়েছে, নোটবন্দি-জিএসটিতে কী ক্ষতি হয়েছে, সে সবের কোনও দিশা ছিল না রাহুল তথা কংগ্রেসের প্রচারে।

উল্টো দিক থেকে দেখলে, এই সব জায়গাতেই এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ, শৌচালয়, রান্নার গ্যাসের মতো সরকারি প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরে উন্নয়নের খতিয়ান এবং ক্ষমতায় এলে আরও উন্নয়নের স্বপ্ন ফেরি করেছেন মোদী। তার সঙ্গে জুড়েছেন উগ্র জাতীয়তাবাদ আর দেশাত্মবোধের হাওয়া। মোক্ষম সময়ে হাতে পেয়ে গিয়েছেন বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযান, অভিনন্দন বর্তমানের ডগ ফাইটের মতো ইস্যু। অথচ এই দেশাত্মবোধের হাওয়ার বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার মতো জুতসই কোনও ব্যাখ্যা বা জবাব দিতে পারেনি রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস।

(ঢাকাটাইমস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়