শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র স্মার্ট প্রাণিসম্পদ প্রকল্পে ৩৪ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিবে ◈ সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে কাঁচাবাজারে দাম কমবে: সাঈদ খোকন ◈ নরসিংদীতে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় মা-ছেলেসহ চারজন নিহত ◈ রোববার থেকে আবার গাউন পরতে হবে আইনজীবীদের ◈ সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে বাধা নেই: ডেপুটি গভর্নর ◈ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি ◈ দেশের জিডিপির পূর্বাভাস কমালো জাতিসংঘ, চিন্তা মূল্যস্ফীতি নিয়ে ◈ আমি ইন্ডিয়া জোটেই আছি: মমতা  ◈ হিজবুল্লাহ’র হামলায় ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে: গ্যালান্ট ◈ কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে অবাধে সাংবাদিকরা ঢুকতে পারে, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০১৯, ০১:৩৩ রাত
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০১৯, ০১:৩৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শৈশবে যৌন নিপীড়নের স্মৃতি মনে পড়ার পর নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে বিবিসিকে আফসান চৌধুরী

জিয়ারুল হক : বাংলাদেশে শিশুরা নিজেদের বাড়িতে বা পারিবারিক পরিমন্ডলে যে ধরনের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়, তার খুব কম ঘটনাই প্রকাশ পায়। বিশেষ করে ছেলেরাও যে শৈশবে পরিচিতজনদের যৌন নিপীড়নের শিকার হন, সেটা স্বীকারই করা হয় না। সুপরিচিত লেখক, গবেষক এবং সাংবাদিক আফসান চৌধুরী বাংলাদেশে শিশুদের ওপর এই যৌন নিপীড়নের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ১৯৯৮সালে কাজ করেছেন ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ নামের একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে শৈশবে তিনি নিজেও যে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন, সেই বেদনাদায়ক স্মৃতি ফিরে এসেছিলো। বিবিসির মাসুদ হাসান খানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রথম তিনি সেই ঘটনার কথা সবিস্তারে প্রকাশ করেছেন। বিবিসি

আমার তখন তিন কি চার বছর বয়স, আমরা তখন টিকাটুলিতে থাকতাম। আমাদের বাসায় গ্রাম থেকে আসা একটা লোক ছিলো।
এই লোকটি একদিন আমাকে তার যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলাচ্ছিলো। আমার তখন যে বয়স, তখন কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। লোকটা আমার সঙ্গে পায়ুমৈথুন করছিল না। সে আমাকে তার যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলাচ্ছিলো। আমার কোন আবেগ, অভিজ্ঞতা বা কষ্ট কিছুই হচ্ছিল না, আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।

আমার কপালটা ভালো। এরকম অবস্থায় আমার মা ব্যাপারটা দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কী ঘটনা ঘটছে।
ঐ লোকটা বয়স্ক ছিলো। আমার মা তখন এসে আমাকে নিয়ে যায়।ঐদিনের ঘটনা সম্পর্কে আমার দুটি জিনিস মনে আছে।
আমার মা আমাকে নিয়ে গিয়ে গোসল করাচ্ছিলেন। আমার মাকে আমি জিজ্ঞেস করছিলাম, আমি কি খারাপ কিছু করেছি। সন্ধ্যেবেলায় তো মানুষকে আর গোসল করায় না কেউ। আমার মা কোন উত্তর দিচ্ছিলেন না। বলছিলেন, ঠিক আছে, ঠিক আছে।

আর আমার মনে আছে আমার বাবা ঐ লোকটাকে কান ধরে উঠবস করিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন।
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের জরিপ যখন করি আমার অনেক বয়স। কিন্তু তারপরও আমার প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছিল। আমার প্রচন্ড অপরাধবোধ হচ্ছিলো।
যখন মনস্তত্ত্ববিদদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাকে বলেছিলেন, এরকমই হয়। নিজেকে অপরাধী মনে হয়, নিজেকে দোষী মনে হয়।
তবে আমি যেটা করেছি, এই ঘটনার কথা মনে পড়ে যাওয়ার পর এটা কখনো চেপে রাখিনি। আমি যেহেতু শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের ইস্যুতে কাজ করতাম, নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার কথা সেখানে আমি সবাইকে বলতাম এটা বোঝাতে যে, এটা যে কোন মানুষের জীবনেই ঘটতে পারে।

বাংলাদেশে শিশুরা যে কতটা অনিরাপদ, তাদের ওপর এরকম যৌন নিপীড়নের ঘটনা যে কত ব্যাপক, তা আমি জানতে পেরেছিলাম ১৯৯৮ সালে ঐ গবেষণা চালানোর সময়।

একবার একটি এলাকায় গিয়ে আমরা একদল ছেলে-মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম এ বিষয়ে। সেখানে একদল ছেলে-মেয়েকে আমি একটি করে কাগজ দিলাম। তাদেরকে বললাম, যারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা যেন কাগজে ক্রস চিহ্ন দিয়ে সেটি জমা দেয়। কাগজে কোন নাম লিখতে হবে না। তারা সবাই কাগজ জমা দেয়ার পর দেখলাম আট জনের মধ্যে ছয় জনের কাগজেই ক্রস চিহ্ন দেয়া। ঐ গ্রুপে ছেলে মেয়ের সংখ্যা ছিলো সমান সমান। কাজেই ধরে নিতে পারি ছেলে শিশুরাও বাংলাদেশে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।

একবার একটি ছেলে আমাকে জানিয়েছিলো, তাকে বয়স্ক লোকেরা পায়ুমৈথুন করেছিলো। নিজের বাবা-মার কাছে সে একথা জানিয়েছিলো। কিন্তু তার বাবা-মা বিষয়টা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলো। তারা নাকি বলেছিলো, বড় হতে হতে এরকম ঘটতে পারে। এ বিষয়টি অস্বীকার করার একটা প্রবণতা আমাদের সমাজে আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়