শিরোনাম
◈ ত্রিপুরায় নিহত ৩ বাংলাদেশি ছিলেন চোরাচালানকারী: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়  ◈ ডিবি হারুন-অর-রশিদের ‘মুখোমুখি ইউনূস’ ভিডিও ভুয়া: যুক্তরাষ্ট্রে তিনি প্রকাশ্যে আসেননি ◈ জুলাই সনদে সই করেছেন যেসব দলের নেতারা ◈ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন ৪ কর্মকর্তার রদবদল ◈ আমেরিকায় গ্রিন কার্ড লটারি থেকে ৩ বছরের জন্য বাদ ভারত ◈ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে রেকর্ড রাজস্ব আদায় ◈ আবারও জেন জি’দের বিক্ষোভ, এবার উত্তাল পেরু, পদত্যাগে অস্বীকৃতি প্রেসিডেন্ট হোসে জেরির, জরুরি অবস্থা জারি (ভিডিও) ◈ আসামে সেনা ক্যাম্পে উলফা জঙ্গিদের গুলিবর্ষণ, তিন সেনা সদস্য আহত ◈ জুলাই সনদ স্বাক্ষরের দিনে ‘জুলাই যোদ্ধাদের রাস্তায় নামা লজ্জাজনক’, মন্তব্য জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের ◈ আসলে জুলাই যোদ্ধা কারা, গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের নিয়ে কেন বিতর্ক?

প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:১৩ সকাল
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:১৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মিডিয়ায় নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে নারীর নিজেদেরও সবিশেষ ‘অবদান’ আছে

লুৎফর রহমান হিমেল : ১. বসকে আকর্ষণে যে রঙে ঠোঁট রাঙাবেন! ২.গণধর্ষণ করে অর্ধনগ্ন মহিলাকে ঘোরানো হলো গ্রামে, ৩. একজন বিমানবালার গোপন ‘স্বীকারোক্তি’! ৪. রগরগে যৌন দৃশ্যে শাহিদ কাপুর ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে এই শিরোনামগুলো পড়েছি। এখনো গুগলে সার্চ করলে শিরোনামগুলো পাবেন। নারীকে অপদস্থ করতে এ রকম অসংখ্য শিরোনাম ও সংবাদ আমাদের গণমাধ্যমে এখন দেখি অহরহ। মিডিয়ায় নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে নারীদের নিজেদেরও সবিশেষ ‘অবদান’ আছে। কারণ তারা নিজেরাও এ ব্যাপারে সচেতন নয়। অধিকার নিজেদেরই আদায় করে নিতে হয়। রবি ঠাকুর যেমনটা বলেছেন, ‘‘আমারে তুমি করিবে ত্রাণ/ এ নহে মোর প্রার্থনা/ তরিতে পারি শক্তি যেন রয়।’ পুরুষনির্ভরতা কাটিয়ে নারীকে মানুষ হয়ে ওঠার জন্য তার নিজেকেই সচেতন হতে হবে, জেগে উঠতে হবে। তাহলেই তার সার্থকতা। নারীর আজকের এই নিগ্রহ, এটা কিন্তু প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। একটু ভাষাচিত্রে চোখ রাখি। নারী : রমণী, রামা, বামা, অবলা, মহিলা, স্ত্রী, মেয়ে, মেয়েমানুষ, ললনা, মানবী, মানবিকা, কামিনী, আওরত, জেনানা, যোষা, বালা, বণিতা, ভামিনী, শর্বরী, দুহিতা- আরো কতো বাহারি নাম। রমনী মানে? রমন করিবার নিমিত্বে যারা। অবলা মানে শক্তিহীন। কামিনী শব্দে ‘কামে’র সরব উপস্থিতি। জেনানা মানে নিষিদ্ধ। দুহিতা অর্থ দোহনকারিণী। ভাবা যায়? কতোটা অপমানসূচক শব্দগুলো।
খেয়াল করে দেখুন, এসব নামে ইতিবাচকতা নেই। সব নেতিবাচক। কিন্তু কেন? কারা বানালো এসব শব্দবন্ধ? কবে থেকে চলে আসছে এসব? শুধু বাংলা শব্দেই নয়, ইংরেজিটাও দেখুন, গবহ শব্দটার আগে ডড় ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ম্যানের সাথে ঝুলে থাকাই যেন (ডড়) নারীর নিয়তি।
কেন, ম্যান শব্দটার অর্থ নারী হতে পারতো না? আর ওম্যান অর্থ পুরুষ। সমস্যা কী ছিলো? নারীর অধিকারবঞ্চিত হবার ইতিহাস জানতে এই শব্দখেলার ইতিবৃত্তও জানা দরকার।
আর হ্যাঁ, এ নেতিবাচক শব্দগুলো কবুল করে নেয়ার জন্য নারীরাও দায়ী। তারা পারফিউমের বিজ্ঞাপনে পুরুষের পঙ্গপাল হিসেবে হাজির হন! ওদিকে গলা ফাটিয়ে অনেক ‘প্রগতিশীল নারী’ নারীবাদী হন। এর কাউন্টারে অবশ্যম্ভাবীরূপে চলে আসে পুরুষবাদ। নারীবাদ ধারণাটা এসে পুরুষবাদটাকে সমাজে অলিখিত একটা শক্ত ভিত্তি দিয়ে দেয়।
বাংলা একাডেমির ডিকশনারিতেও ‘মানুষ’ শব্দের অর্থ খুঁজলে পাওয়া যায় মানব, মনুষ্য, লোক, জন, নৃ, নর। ‘মানুষ’ শব্দের অর্থের মধ্যে ‘নর’ বিদ্যমান কিন্তু ‘নারী’ উধাও। একইভাবে ‘মানব’ শব্দের অর্থ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে মানুষ, মনুষ্য, নৃ, নর। এখানেও ‘নারী’ শব্দটি গুম হয়ে গেছে। কিন্তু ‘নর’ শব্দটি ঠিকই আছে। আসলে আমরা যেই আঁধারে ছিলাম, সেই আঁধারেই রয়ে গেছি। এখনো অনেক পরিবারে ছেলে সন্তানের জন্য পুরোটা ডিম, আর মেয়ে সন্তানের জন্য অর্ধেক ডিম বণ্টনের রেওয়াজ রয়ে গেছে। রাষ্ট্রের সবচেয়ে ছোট ইউনিট পরিবারে যখন মেয়ে এবং ছেলে দু’জনই ‘মানুষ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে, তখনই নারী দিবস অর্থপূর্ণ হবে। প্রকাশিত বই : সাংবাদিকতা সুসাংবাদিকতা কুসাংবাদিকতা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়