বরিশাল প্রতিনিধি : শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডে ওষুধের পার্শপ্রতিক্রিয়ায় ১৮ জন রোগী একত্রে অসুস্থ্য হয়ে পরেছে। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটলে রোগীসহ তাদের স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। যদিও ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সদের হস্তক্ষেপে অল্পসময়ের মাঝেই রোগীরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
এ ঘটনার পরপরই একই ব্যাচ নম্বরের সকল সেফিউরক্সিম ইনজেকশন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হাসপাতাল প্রশাসন। হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টার দিকে নির্ধারিত সময়ে ওয়ার্ডের মোট ৯৪জন রোগীর মধ্যে ২১জন রোগীকে হাসপাতালে সরকারীভাবে সরবরাহকৃত সেফিউরক্সিম ইনজেকশন (৭৫০ মিলি), অমিটিড ইনজেকশনসহ (৪০ মিলি) ব্যাথানাশক ইনজেকশন দেয়া হয়। এর কিছু সময় পরেই আকস্মিকভাবে রোগী কুদ্দুস, ইমতিয়াজ, বিকাশ চন্দ্র হাওলাদার, অলিয়ার রহমান, এনামুলহকসহ ১৮জন রোগী ঝাঁকুনি ও কাঁপুনি দিতে থাকে এবং অসুস্থ্য হয়ে পরে।
ওয়ার্ডের কর্মরত নার্স জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সেফিউরক্সিম ইনজেকশন পুশ করার পর পরই ওইসকল রোগীরা কাঁপতে কাঁপতে ঝাকুনি দিয়ে তারা অসুস্থ্য হয়ে পরে। বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানোর পর তারা (চিকিৎসক) তাৎক্ষণিক এসে কটসন ওষুধ দিয়ে তাদের সুস্থ্য করে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, হাসপাতালের সরবরাহকৃত ওষুধের মেয়াদ রয়েছে ২০২০ সাল পর্যন্ত কিন্তু তারপরেও কেন এমনটা হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়। তবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সমস্যা সৃষ্টিকারী ইনজেকশনের বোতল সরবরাহ করা হয়েছে।
ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও সহকারী রেজিষ্ট্রার সুদীপ কুমার হালদার জানান, সেফিউরক্সিম ইনজেকশন দেয়া ১৮জন রোগীরই সমস্যা হয়েছে। আর একত্রে এতো রোগীর কাপুনি দেয়া ও ঘাম দেয়ার লক্ষন ওষুধের পার্শপ্রতিক্রিয়ায় হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক রোগীদের অন্য ওষুধের মাধ্যমে স্বাভাবিক করা হলেও একজন রোগী বমিও করেছেন বলে জানিয়ে সুদীপ কুমার বলেন, ১৫ দিন আগেও তিনজন রোগীর ক্ষেত্রে একই সমস্যা দেখা দিয়েছিলো। তবে সমস্যা আজকের মতো বড় আকার ধারণ করেনি। আজকের এ ঘটনার পরপরই হাসপাতাল পরিচালককে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তার নির্দেশে ওয়ার্ড তথা হাসপাতালে চলমান ব্যাচের সেফিউরক্সিম ইনজেকশন ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, ওয়ার্ডে ব্যবহৃত ওষুধের বোতল (ভায়েল) সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। যা টেষ্টের জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হবে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। পাশাপাশি সমস্যা দেখা দেয়া একই ব্যাচের ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করে ওয়ার্ডে নতুন ব্যাচের ওষুধ সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।