বাংলা ট্রিবিউন : নওগাঁর রাণীনগরে দ্বিগুণ দামে সেচের পানি কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা। গভীর ও অগভীর নলকূপের মালিকরা বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা নিচ্ছেন। তারা জানান, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গভীর নলকূপের পানির দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি ঘণ্টা ১২৫ টাকা। আর পুরো মৌসুম ১২৫০ টাক। অথচ চাষিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।
গোনা গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী বলেন, ‘আমি গত বছর বিঘাপ্রতি ১৫০০ টাকা করে দিয়েছি। আর এ বছর দিলাম ২০০০ টাকা।’
একডালা গ্রামের কৃষক সলতান আলম বলেন, ‘পানির দাম ঠিক করে না দেওয়ায় আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা নিচ্ছে। গত বছর ১৫০০ টাকা দিলেও এবার দিতে হলো ২২০০ টাকা।’
বড়গাছা ইউনিয়নের পানলা গ্রামে স্থাপিত বরেন্দ্র ডিপের অপারেটর এরশাদ আলী বলেন, ‘আমি এখনও কোনও কৃষকের কাছ থেকে টাকা নেইনি বা পানির দামও নির্ধারণ করিনি।’
রাণীনগর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য তিতুমীর রহমান বলেন, ‘চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত পানির দাম নেওয়ার অভিযোগ এখনও কোনও এলাকা থেকে পাইনি। আমাদের অফিসের আওতায় ২৬২টি গভীর নলকূপ রয়েছে। অফিসের নির্ধারিত রেট প্রতি ঘণ্টা ১২৫ টাকা করে। কৃষকের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি টাকা কেউ নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা সেচ কমিটির পক্ষ থেকে জমির শ্রেণি নির্ধারণের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক জরিপ চলছে, দুই-একদিনের মধ্যে এলাকাভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণ করা হবে।’
চাষিরা জানান, রাণীনগর উপজেলার সিম্বা, খাগড়া, ছয়বারিয়া, লোহাচূড়া, কাশিমপুর, এনায়েতপুর, গোনা, রাজাপুর, খট্টেশ্বর, বালুভরা, পানলা, দেউলা, বড়গাছা, বেলঘরিয়া, বরিয়া, বরবরিয়া, তেবারিয়া, একডালা, আমগ্রাম, করজগ্রাম, পারইলসহ প্রায় সব মাঠেই ধান রোপণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। অথচ উপজেলা সেচ কমিটির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত পানির দাম নির্ধারণ করেনি। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে। এসব জমিতে চলতি মৌসুমে মোট ২ হাজার ২৩৬টি গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে সেচ চলছে।
এই বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সেচ কমিটির সভাপতি আল মামুন বলেন, ‘সরকারিভাবে পানির দাম নির্ধারণ করা আছে। কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত পানির দাম নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :