শিরোনাম
◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৭ বস্তা টাকা, গণনা চলছে ◈ তীব্র তাপপ্রবাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধের দাবি ◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:৪৮ সকাল
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সমাজ থেকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জোর প্রতিরোধ গড়ে না উঠলে শুধু আইনি তৎপরতা দিয়ে এটি বন্ধ করা যাবে না বলে মনে করেন রোকেয়া কবীর

নাঈমা জাবীন : বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেছেন, বাংলাদেশে নারীর সমান অধিকারের অন্যতম প্রধান বাধা অবশ্যই পুরুষতান্ত্রিক সমাজমানস। আমাদের সমাজে এখনও পুরুষের প্রাধান্য কদর্যভাবে প্রকট। কন্যাসন্তান জন্ম নিলে এখনও সিংহভাগ পরিবারে বিষাদের কালো মেঘ ঘনিয়ে আসে। জন্মপূর্বকাল থেকেই নারীদের উপেক্ষিত হওয়া শুরু হয়, যা চলতে থাকে মৃত্যু পর্যন্ত। চার দেয়ালের বাইরে নারীর স্বাধীন চলাফেরা ও কাজ সমাজ এখনও পছন্দ করে না। সমাজ নারীকে মজুরিবিহীন গার্হস্থ্য শ্রমেই ব্যস্ত দেখতে ও রাখতে চায়, তবে প্রচার করে নারী হলো পরিবারের ‘বোঝা’। যার ফলে বাল্যবিয়ে আমাদের সমাজে এখনও প্রকটভাবে গ্রহণযোগ্য। সংবিধানের অঙ্গীকার অনুযায়ী সর্বক্ষেত্রে সমান সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নারী। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগের দ্বার বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সূত্র : যুগান্তর
সমাজের কাছে অগুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকা নারীকে পুরুষালি মনস্তত্ত্ব ভোগ্যবস্তু হিসেবে সাব্যস্ত করে। ফলে যে কোনো বয়সের নারীকেই এদেশে যখন তখন নির্যাতনের আশঙ্কার মধ্যে দিনপাত করতে হয়। পুলিশ সদর দফতরের হিসাব অনুযায়ী গত পাঁচ বছরে ধর্ষণের মামলা হয়েছে ১৯ হাজারের বেশি, যার গড় দৈনিক ১১টি। একই প্রতিবেদন থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার ফরিদা ইয়াসমিনের বরাতে জানা যায়, ধর্ষণের সব ঘটনায় মামলা হয় না। ধর্ষণের শিকার বিকারগ্রস্ত হলে, গুরুতর আহত হলে বা সবাই জেনে গেলে তখনই পরিবার মামলা করে। অর্থাৎ ধর্ষণ, দলীয় ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা ঘটনার সংখ্যা উল্লিখিত সংখ্যার চেয়ে আরও অনেক বেশি। এ তো গেল কেবল ধর্ষণের হিসাব। এর বাইরে ধর্ষণ চেষ্টা থেকে শুরু করে যৌন হয়রানি, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন ও অন্যান্য বিচিত্র ধরনের নির্যাতনের ঘটনা দেশে আরও অনেক অনেক বেশি ঘটে থাকে।
রোকেয়া কবীর বলেন, দেশে নারী নির্যাতন রোধে প্রয়োজনীয় আইন আছে, অনেক ঘটনায় মামলাও হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা থাকলেও অনেক আসামি গ্রেফতার হচ্ছে, সংখ্যায় কম হলেও অনেক মামলার আইনানুগ নিষ্পত্তিও হচ্ছে। তবু, নারী নির্যাতন উল্লেখযোগ্য হারে কমছে না। যে কারণে নারী নির্যাতন এখনও এদেশে নারীর অগ্রগতির একটা বড় প্রতিবন্ধক হিসেবেই টিকে আছে।
এটি এতোদিনে প্রমাণিত যে, সমাজ থেকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জোর প্রতিরোধ গড়ে না উঠলে শুধু আইনি তৎপরতা দিয়ে এটি বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সমাজ এক্ষেত্রে বরাবরই প্রায় নিশ্চুপ থাকে। যেন কোথাও কিচ্ছুটি হয়নি বা হলেও সেগুলো বড় কোনো ঘটনা নয়! অথচ আমরা দেখতে পাই, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সমাজের এই নিশ্চুপতাকে জোরদার করার জন্য একদল ধর্ম ব্যবসায়ী নির্বিঘেœ নগ্ন ভূমিকা রেখে চলেছে। চিন্তাচেতনায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন দেশের সিংহভাগ মানুষ এ গোষ্ঠীর প্রধান ভোক্তা। চিহ্নিত এ ধর্মান্ধ গোষ্ঠী মানুষের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনমানসিকতাকে আশ্রয় করে ধর্মীয় ওয়াজ, খুতবা ও তালিমের নামে নারীবিরোধী রক্ষণশীলতাকে উসকে দিচ্ছে, যা প্রকারান্তরে নারীর প্রতি ঘৃণ্য আচরণ ও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে। সমাজে যে নারীবিরোধী মনস্তত্ত্ব ক্রিয়াশীল, এ গোষ্ঠীর ঘৃণ্য প্রচারণা তার ভিত্তিকে আরও মজবুত ও বদ্ধমূল করে। কাজেই এটিও নারীর অগ্রগতির প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলোর একটি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়