মুসফিরাহ হাবীব: ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সারদা দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বাসায় হাজির হওয়ার পর কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসে চরম সংঘাত শুরু করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রোববার কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের এ ছবি স্পষ্ট হতেই বিভিন্ন মহলে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতির শাসন চালু করার কথাও শোনা যেতে থাকে। তবে পরে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে আগামীকালই শুনানি।
“বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ায় এখন আর রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের সম্ভাবনা নেই” বলেই জানিয়েছেন এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে জেরার প্রসঙ্গে চূড়ান্ত কথা বলবে সুপ্রিম কোর্টই। রোববার দিন-রাত টানাপোড়েনের পর সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্র। প্রস্তুত রাজ্য সরকারও। জানা গেছে, রাজ্যের হয়ে সওয়াল করবেন কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
এখন রাজীব কুমারকে জেরা করা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বে সুপ্রিম কোর্টই চূড়ান্ত রায় দেবে। সোমবার বেলা গড়ালে ছবিটা স্পষ্ট হবে।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্র সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে দেশের সব গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে ফেলছে। এ কারণে গণতন্ত্র রক্ষা করতে এবং দেশকে বাঁচাতেই তিনি ধর্নায় বসেছেন।
কলকাতার ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে অবস্থান নিয়ে সেখানেই রাত কাটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের বাংলায় এ ধরনের অবস্থান কর্মসূচিকে বলে ধর্না। আর মমতা তার এই প্রতিবাদকে মহাত্মা গান্ধীর ভাষায় বলতে চাইছেন ‘সত্যাগ্রহ’।
রোববার সন্ধ্যায় সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের বিরোধ যে নজিরবিহীন চেহারা নিয়ে প্রকাশ্য হয়েছিল, রাতভর ধর্নায় বসে মমতা তাকে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাতের মাত্রায় নিয়ে যান।
বছর ছয়েক আগে সারদা ও রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিতে এমএলএম ব্যবসার ফাঁদে ফেলে সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি রুপি হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে মমতার তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল ওঠে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে থাকা বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাসহ তৃণমূল নেতাদের বাঁচাতেই তথ্যপ্রমাণ গায়েব করেছেন রাজীব কুমার।