স্বপ্না চক্রবর্তী : জানুয়ারী মাস শেষ। আর এই শেষের মধ্যে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাণিজ্যমেলার সমাপনীর সুর বাজতে শুরু করেছে। তাই দিন দিন ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েই চলেছে। বিক্রি বাড়াতে বিক্রেতারাও অবলম্বন করছেন নানা কৌশল। একটি কিনলে দুইটি ফ্রিসহ দিচ্ছে পাওয়া যাচ্ছে ক্যাশ ভাউচার পর্যন্ত।
সোমবার সরেজমিনে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, দেশী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের টিভি বা ফ্রিজ কিনলে বিভিন্ন ধরণের ছাড়ের সাথে সাথে ভাগ্যবান ক্রেতারা পাচ্ছেন ১লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ভাউচার। মেলার ২৩নম্বর প্যাভিলিয়নে গিয়ে তাই দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। তাদের সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রয়কর্মীদের। রুমানা নামের বিক্রয়কর্মী জানান, মেলা উপলক্ষে আমাদের ফ্রিজ এবং টেলিভিশনে ১০শতাংশ থেকে ১৫শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছি। তবে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষন ১লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারের দিকেই।
ওয়ালটন গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইভা রিজওয়ানা জানান, ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা উপলক্ষে দেশব্যাপী ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-৪ চালুর ঘোষণা দিয়েছিলাম আমরা। এর আওতায় ওয়ালটন পণ্য কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পাবেন সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। পেতে পারেন মোটরসাইকেল, এয়ার কন্ডিশনার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, এলইডি টিভি, ওভেনসহ বহু পণ্য ফ্রি। সেই সাথে রয়েছে নিশ্চিত ক্যাশব্যাক। অনলাইনের মাধ্যমে ওয়ালটন ই-প্লাজা থেকে পণ্য কিনেও এসব সুবিধা পাবেন ক্রেতারা। তিনি বলেন, বাণিজ্যমেলার পুরো মাস জুড়ে সারা দেশে মিলবে এসব সুবিধা। ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের আগের সিজনগুলোতে গ্রাহকদের ব্যাপক সাড়া বিবেচনায় নিয়ে নতুন বছর ও ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০১৯ উপলক্ষে সিজন-ফোর শুরু করল ওয়ালটন।
ক্যাশ ভাউচার না পেলেও ১৫শতাংশ ছাড়ে ঘরের জন্য অত্যন্ত জরুরি ফ্রিজ কিনতে পেরে মহাখুশি গৃহিনী এলি রহমান। তিনি বলেন, মেলা ছাড়া অন্য সময় কিনতে গেলে ১টাকাও ছাড় পাওয়া যায় না। তাই মেলা কিছু টাকা বাঁচাতে পেরে ভালো লাগছে খুব।
হাতে গুনে আর মাত্র ১০দিন বাকি আছে মেলার। তাই ওয়ালটন ছাড়াও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন স্টলে দেখা যায় ছাড়ের ছড়াছড়ি। বিশেষ করে থ্রি-পিছের দোকানগুলোতে প্যাকেজ হিসেবে মিলছে একসাথে তিনটি ড্রেস কোথাও ৯০০টাকা, কোথাও ১২শ টাকা। বেøজারগুলোও বিক্রি হচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম দামে। মেলার প্রায় ১০টি প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন কোম্পানীর বেøজারের স্টল রয়েছে। এগুলোর সাইজে বড়গুলো ক্রেতারা কিনতে পারছেন ১২০০টাকা থেকে ১৬০০টাকায়। আর ছোটগুলো কিনতে হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০টাকায়। মেলার শেষ পর্যন্ত একই দাম থাকবে বলে জানান একটি স্টলের বিক্রয়কর্মী রহমত আলী। তিনি বলেন, মেলা উপলক্ষেই আমাদের বেøজারগুলোর এই বিশেষ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মেলা শেষ না পর্যন্ত একই দাম থাকবে। তবে এগুলোর মান নিয়ে সন্তুষ্ট নন অনেক ক্রেতাই। রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে মেলায় আসা বিপ্রজিত বলেন, গত বছর ১৬০০টাকা দিয়ে একটা বেøজার কিনেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে তা গায়ে দেওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। তাই এইবার আর ওই দোকানগুলোর ধারে কাছেও যাইনি।
মেলার সহযোগী আয়োজক রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, ৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া মেলার পর্দা নামবে ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে মেলা চলছে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য মেলার টিকেটের মূল্য ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০টাকা। প্রথমবারের মতো এবার মেলার টিকিট এবার অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে। মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাসহ মোট স্টলের মোট সংখ্যা রয়েছে ৬০৫টি। এর মধ্যে রয়েছে প্যাভিলিয়ন ১১০টি, মিনি-প্যাভিলিয়ন ৮৩টি ও রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য স্টল ৪১২টি।