শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধা হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব এমন দাবি করে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর ফলে পুরোনো কোষগুলো মারা যাবে না। মানবদেহের কোষের বয়স হয়ে গেলে এগুলোর ডিএনএ ছোট হয়ে যায় ফলে প্রতিবার নতুন কোষ জন্ম নিলেও তা আকারে কিছুটা ছোট হয়ে যায়। এই ডিএনএ’র শেষ প্রান্ত টেলোমেরেস দ্বারা রক্ষিত থাকে। ঠিক যেমন আমাদের জুতার ফিতার অগ্রভাগ প্লাস্টিকের আবরণ দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে যাতে তা বিনষ্ট না হয়। কিন্তু মানবশরীরের টেলোমেরেস ব্যবহারের মাধ্যমে নি:শেষ হয়ে গেলে কোষগুলো মরতে শুরু করে। ফলে তা আর নতুন করে জন্মায় না। এপর্যায়কে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বলক্ষণ বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সানডিয়াগোর শালক ইনস্টিটিউটের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবশরীরের টেলোমেরেস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর্যায় ব্লক করে দেয়ার পদ্ধতি যা তাদের ভাষায় ‘অটোফ্যাগি’ এবং এর মাধ্যমে ক্যান্সার যাতে মানবকোষে আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ না পায় তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞানীরা এধরনের মানবকোষের এধরনের পর্যায় সম্পর্কে জানতে পারা খুবই উত্তেজনাপূর্ণ বিষয় বলছেন কারণ এরফলে ক্যান্সার সম্পর্কে আরো অজানা রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। শালক ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষক কার্লসেডার এ প্রসঙ্গে বলেন, মানবকোষের এধরনের পরিবর্তন প্রক্রিয়ার পর্যায় সম্পর্কে জানতে পারা বিস্ময়কর। কারণ অনেকগুলো চেকপয়েন্ট রয়েছে যা কোষগুলিকে নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে এবং ক্যান্সারযুক্ত হতে বাধা দেয় কিন্তু আমরা মোক্ষম সেই সময়ে ক্যান্সার হওয়ার প্রক্রিয়াকে ব্লক করে দিতে পারি যা এতদিন জানা ছিল না।
গবেষকরা এও দেখতে পেয়েছেন, মানবশরীরের টেলোমেরেস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর্যায় ব্লক করে দেয়ার পর কোষগুলো পুনরায় তার রুপান্তর প্রক্রিয়া আগেরমতই শুরু করেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আরো দেখতে পেয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোর ক্রোমোজমগুলো বিন্যস্ত হয়ে গেছে যা ক্যান্সার হবার পূর্বলক্ষণ হিসেবে ধরা যেতে পারে।
অধ্যাপক কার্লসেডার আরো বলেন, আমরা জানতাম না যে মানবকোষের পক্ষে সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব। সংকটের সময় কোষ কিভাবে মরে যায় বা এর জেনেটিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব। এবিষয়গুলো ক্যান্সার হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ পর্ব নিশ্চিত করার এক বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করেছে। স্টার ইউকে
আপনার মতামত লিখুন :