শিরোনাম
◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে জামায়াতের কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল ◈ স্ত্রী আসলেই নারী কি না প্রমাণ দেবেন ম্যাখোঁ ◈ আগামী বছরের বইমেলার সময় পরিবর্তন ◈ সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা জানালো ভারত ◈ সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর: অবসরে বাড়ছে সুযোগ-সুবিধা, কমছে অপেক্ষাকাল ◈ আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকসহ আহত ৫

প্রকাশিত : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৪২ রাত
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৪২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নিছক ঠাট্টার নামে বাড়ছে সাইবার অপরাধ

কল্যাণ চক্রবর্তী : সোশ্যাল মিডিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে একটি শব্দ সকলেরই পরিচিত, আর তা হল ‘ট্রল’ বা ব্যঙ্গ করা। নিছক মজা হিসেবে এই কাজটি করা হলেও, এখন ধীরে ধীরে এটি সাইবার বুলিং এর রূপ ধারণ করছে। অনেক মানুষই সোশ্যাল মাধ্যমটিকে ব্যাবহার করছে অপর কোন ব্যক্তিকে মানসিক ভাবে আঘাত করতে, বা তার মানহানি করতে এবং সেটি একটি ছবি, ভিডিও, লেখা যেকোনো মাধ্যমেই হতে পারে।

একজন ব্যাক্তির ইচ্ছাকৃত কোন পোস্ট দ্বারা যদি অন্য ব্যক্তি মানসিক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন, যদি সমাজে তিনি অসম্মানিত হন তবে সেটি সাইবার অপরাধের অন্তর্গত। এসব অপরাধের জন্য রয়েছে বিভিন্ন শাস্তি। ১৮৬০ সালের দ-বিধিতে, মানহানির অপরাধের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। ধারা ৩৫৪ তে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি যদি কোন নারীর বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করে কোন পোস্ট, কমেন্ট বা কোন ছবি শেয়ার করে তবে তা যৌন হয়রানি হিসেবে ধরা হবে। ধারা ৫০৩ ব্যাখ্যা করলে এটি স্পষ্ট হয় যে, কোন ব্যক্তি যদি একজন নারীকে লক্ষ্য করে তার মানহানি করার জন্য কোন ভুল তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়ায় তবে তার শাস্তি নিশ্চিত। পর্নোগ্রাফি কন্ট্রোল অ্যাক্ট ২০১২ এর ধারা ৭ উল্লেখ করে যে, যদি কোন ভিডিও বা ছবি বা কন্টেন্ট বিশেষজ্ঞদের মতে যৌন বিষয়ক হয় এবং তা সাধারণ মানুষের দেখার অনুপযুক্ত হয় তবে সেটি পর্নোগ্রাফি হিসেবে বিবেচিত হবে।

২০১৮ সালের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে মানহানির শাস্তির আইন, অন্য সকল ধারার আইনগুলির চেয়ে গুরুতর। এই আইনের ধারা ২৪ এ বলা আছে, যদি কোন ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়াতে নকল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অন্যের বিরুদ্ধে কোনও মানহানিকর পোস্ট দেয় এবং সেই পোস্ট দ্বারা যদি ব্যক্তিটি যেকোনো ভাবে হুমকির শিকার হয়, তবে দোষীকে পাঁচ বছরের জন্য কারাদ- বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় সাজা দেয়া যাবে। যদি একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করা হয়, দোষীকে সাত বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় সাজা দেয়া হবে। ধারা ২৮ অনুসারে, যদি প্রথমবারের মতো কেউ ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে কোন কিছু প্রকাশ করে তবে তাকে পাঁচ বছরের কারাদ- বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় শাস্তি দেয়া হবে।

সুতরাং আইনের এতোগুলো ধারা ও শাস্তির ব্যবস্থা এটি প্রমাণ করে যে সাইবার অপরাধ বা সাইবার হয়রানির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। তবে প্রশ্ন হলো, এরকম ঘটনায় শতকরা কতজন মানুষ আইনের সহায়তা নেয় বা নেওয়ার সুবিধায় থাকে। প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ মানুষ জেনে বুঝে এই ট্রলিংয়ের নামে সাইবার অপরাধ করছে, যাদের সবার বিরুদ্ধে চাইলেও শাস্তির ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। ফলে শুধু শাস্তির ব্যবস্থাই এখানে যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা ও ন্যায়নীতির চর্চা। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যাচ্ছে এই বিভিন্নভাবে হয়রানি করা মানুষগুলো অল্প বয়সী কিশোর কিশোরী বা যুবক শ্রেণির। এদেরকে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক ভাবে শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন, প্রয়োজন অন্যের ক্ষত্রে তাদের মন মানসিকতা পরিবর্তনের। না হলে এই সমস্যা সমাজে বাড়তেই থাকবে।

লেখক : নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী, সম্পাদনা : নুসরাত শরমীন, আলমগীর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়