শিরোনাম
◈ ফলকার টুর্ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করল ভেনেজুয়েলার পার্লামেন্ট ◈ ভোলায় স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: প্রধান আসামিসহ তিনজন গ্রেপ্তার, অভিযুক্ত নেতারা দল থেকে বহিষ্কৃত ◈ মুরাদনগরে মাদককারবারির অভিযোগে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা, একজন গুরুতর আহত ◈ গণঅভ্যুত্থান সরকারের কেউ কেউ ‘লুটপাট’ করে বেহুঁশ হওয়ার দশা: ইশরাক হোসেন ◈ যে কারণে পিআর পদ্ধতি চায় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন ◈ ‘মেগাস্টার’ শব্দকাণ্ডে বিতর্ক: “আমি মানুষটা ছোট, অন্যকে ছোট করব কীভাবে” — জাহিদ হাসান ◈ এবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শিল্পকলার চারুকলা পরিচালক ◈ কেশবপুর পৌরসভার  সাবেক মেয়র রফিকুল গ্রেফতার ◈ বেনাপোল কাস্টমসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় ◈ পার্বত্য চট্টগ্রামের একশ স্কুলে এবছরই ই-লার্নিং চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৫:১৬ সকাল
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৫:১৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রয়োগ না থাকলে সেই আইনে লাভ কি?

ব্যারিস্টার আল আমিন রহমান : বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা একটি বিপদজনক প্রবণতা। বর্তমানে এটিই দেশটির প্রধান সামাজিক সমস্যা। নারীর ওপর অমানবিক হামলা ও সহিংস কর্মকা-ের হার দেশজুড়ে দিন দিন বিপদজনকভাবে বাড়ছে।

নারী ও মেয়েশিশুর বিরুদ্ধে যত ধরনের সহিংসতা রয়েছে তার মধ্যে আমাদের দেশে সবচে’ বেশি যেটা ঘটছে তা হলো- ইভ টিজিং। এর ফলে অনেক মেয়েই আত্মহত্যা করে। আবার যারা ইভ টিজিং এর শিকার হয় তাদের আত্মীয়-স্বজন বা তাদেরকে যারা রক্ষা করার চেষ্টা করে, তাদেরকে খুন করা হয়। রাস্তায়, বাড়িতে, যানবাহনে, সিনেমা হলে, রেল-বাস বা লঞ্চ স্টেশনে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, কর্মস্থল ছাড়াও জনসম্মুখেই ইভ টিজিং এর ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে স্বনামধন্য বেসরকারি সংস্থা- বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি’র নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট সালমা আলী হাইকোর্টের কাছে কিছু নির্দেশনা চেয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে আদালত চারটি অন্তবর্তী নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে:

১. নারী ও মেয়ে শিশুদের যারা শারীরিক, মানসিক, আবেগীয় বা যৌন হয়রানি করছে, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যেসব উত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তাদেরকে সাথে সাথেই আটকের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

২. উত্যক্ত করা বা ইভটিজিংকেও অন্যান্য অপরাধের মতো মনে করতে হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আলাদা ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে দেশের সর্বত্র সকল জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

৩. ইভ টিজিং এর শিকার হওয়া পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা দিতে ও উত্যক্তকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপার ও পুলিশ স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে। সেই সাথে সুশীল সমাজকেও ইভ টিজিং এর বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

৪. ইভ টিজিং-এর ভয়াবহতা ও উত্যক্তকারীদের পরিণতি সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে গণমাধ্যম বিশেষ করে, ইলেকট্রনিক মিডিয়া যেমন: রেডিও-টেলিভিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সাধারণ জনতাকে ইভ টিজিং এর বিরুদ্ধে সচেতন করে তুলতে এনজিও ও সুশীল সমাজকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে নারীদের নিজেদের রক্ষার কৌশল শেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও ইভ টিজিংকে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের অধীনে যৌন অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে হাইকোর্ট। ইভ টিজিং এর মামলা পরিচালনার জন্য দেশের সব পুলিশ স্টেশনে আলাদা সেল গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এই নির্দেশাবলীই আইন হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছে আদালত। এছাড়া যতদিন না নতুন আইন প্রনয়ণ বা প্রাসঙ্গিক আইনের সংশোধন না হচ্ছে, ততদিন মোবাইল কোর্টগুলিকে এ সংক্রান্ত মামলা পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এসব নির্দেশাবলী ছাড়াও নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। তারপরও দেশব্যাপী ইভ টিজিং বা নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হয়েছে কি? এখনও স্কুল-কলেজসহ সবখানেই নিয়মিতভাবেই হামলার শিকার হচ্ছে মেয়ে শিশু ও নারীরা। এর অর্থ হতে পারে, এই নির্দেশাবলীর কোনটাই সঠিকভাবে বিবেচনা করা হয়নি বা আইনের প্রয়োগ হয়নি। প্রশ্ন হলো- এই অপরাধ বন্ধ করতে আদালতের এই নির্দেশাবলী কেন প্রয়োগ করা হচ্ছে না? আর যদি এই নির্দেশাবলীর প্রয়োগ না হয়, তাহলে এগুলো জারি করেই বা কি লাভ ?

লেখক : আইনজীবী, সুপ্রিমকোর্ট । (মূল ইংরেজি লেখা থেকে অনূদিত ও ইষৎ সংক্ষেপিত)

সম্পাদনা : নুসরাত শরমীন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়