শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৪:২৬ সকাল
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৪:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়বে কি?

মোহাম্মদ জমির: জানা কথা, জ্বালানি শক্তি সুলভ হলেই বাড়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি। শিল্প, কৃষি, ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবন – সবখানেই জ্বালানির বিকল্প শুধুই জ্বালানি। তাই দেশে দেশে অতিরিক্ত জ্বালানি পাবার তাগিদে নির্ভরতা বাড়ছে কয়লা, তেল আর প্রাকৃতিক গ্যাসের মত হাইড্রোকার্বন জাতের জ্বালানির ওপর। কিন্তু এই প্রবণতা জন্ম দিয়েছে এমন একটা সাধারণ ধারণা যে, হাইড্রোকার্বন ও জীবাস্ম জ্বালানির (ভড়ংংরষ ভঁবষ) অতিরিক্ত ব্যবহারে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন আর জলবায়ু পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে। আর সেজন্যই বিকল্প জ্বালানির উৎস হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি আলোচনায় এসেছে। সৌরশক্তি, জৈব গ্যাস ও তেল এবং বায়ুশক্তি তাই এখন সারা বিশ্বে খুব আলোচিত কিছু নাম।

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধানতম ভুক্তভোগী। এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর তাগিদ তাই তার বেশি। আশার কথা, নানা রকমের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার এখন সারা বাংলার গ্রামে গ্রামে শুরু হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, এখন দেশে নব্বই লাখেরও বেশি বাড়িতে সৌরশক্তি ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহৃত হচ্ছে। আগে যেখানে সন্ধ্যার পরে মানুষের তেমন কিছু করার থাকতো না, সেখানে সৌর বিদ্যুতের আলোতে পড়াশুনা, টিভি দেখা, মোবাইল ফোন চার্জ দেয়ার কাজ চলছে। একইভাবে কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব করেছে সৌরশক্তি। এতে মানুষের জীবনে যেসব পরিবর্তন সূচিত হয়েছে তা মেপে বলা সম্ভব নয়।

সৌর বিদ্যুৎ এর উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়াতে সরকার এরই মধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এ খাতের উন্নয়নের একটা বড় বাধা জমি অধিগ্রহণ। বলা হচ্ছে সৌর বিদ্যুতের কারণে কমে যাচ্ছে ফসলী জমি। একটি ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জমি লাগে ৩০০ একর। আশা করা যায় প্রাযুক্তিক উন্নয়ন সৌর বিদ্যুতকে আরো জনপ্রিয় করতে পারবে।

ইউএস ডিপার্টমেন্টে অফ এনার্জির এক সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ুচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সম্ভাবনা অনেক বেশি। যেখানে বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য ২.৫ মিটার প্রতি সেকেন্ড বায়ু থাকাই যথেষ্ট, সেখানে বাংলাদেশের উপকূলে নয়টি স্থানের গড় বায়ুগতি ৫ থেকে ৬ মিটার প্রতি সেকেন্ড।

খবরটিতে বাংলাদেশের খুশি হওয়া উচিত। কারণ, বায়ুবিদ্যুৎকেই আধুনিক বিশেষজ্ঞরা অন্যতম সাশ্রয়ী নবায়নযোগ্য জ্বালানী হিসেবে দেখছেন। ঐ গবেষণায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলকে অধিক সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ জ্বালানি নবায়নযোগ্য করার যে লক্ষ্য বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে তা পূরণ করা সহজ হবে।

এই মুহুর্তে কুতুবদিয়ায় ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র তিনটি বায়ুচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল আছে। যদিও এগুলোর ব্লেডগুলো ভূমি থেকে মাত্র ১৮ মিটার উচ্চতায় থাকায় সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহারে এই কেদ্রগুলো অপারগ। ফেনির বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্লেড ভূমি থেকে ৫০ মিটার উপরে। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত সেখানে ৫,৮৮,৩৩৪ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে।

বোঝাই যায়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রশ্নে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক। আমরা আশা করতেই পারি, এসব চ্যালেঞ্জ সঠিক জ্ঞান ও প্রত্যয় দিয়ে মোকাবেলা করতে বাংলাদেশ সফল হবে। সেজন্য প্রয়োজন হবে সরকার ও ব্যক্তিখাতের যুগপৎ যুগলবন্দী।

লেখক : সাবেক রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক। (মূল ইংরেজি থেকে অনূদিত ও ঈষৎ সংক্ষেপিত।) সম্পাদনা : ইকবাল খান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়