শিরোনাম
◈ প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিউইয়র্ক পুলিশ প্রস্তুত ◈ এমপিদের পেনশন, গাড়ি কেনা নিয়ে ক্ষেপল এশিয়ার আরেক দেশের জেন-জি ◈ আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির ◈ ১৬ দিনে এলো ২০৪১০ কোটি টাকার প্রবাসী আয় ◈ কিছু মহল এখনো নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে: প্রধান উপদেষ্টা ◈ নির্বাচন পিআর এর মাধ্যমে হবে না, সেটা তো হবে সংবিধান সংশোধনের পরে: নজরুল ইসলাম  খান  ◈ এদেশের প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় অধিকারের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল : বিবৃতিতে তারেক রহমান ◈ ভোট দিতে পারবেন না শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা  ◈ নোয়াখালীতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, চালক নিহত ও আহত ১২ ◈ আনুপাতিক ভোটপদ্ধতি ‘ফ্যাসিবাদের পথ সুগম করবে’: রিজভী

প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৪:২৭ সকাল
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৪:২৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দক্ষিণ আসামে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি

তৈমুর রাজা চৌধুরী : পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে লড়াই চালিয়েছিলেন তা অভূতপূর্ব। প্রতিবেশী দেশ আমাদের মাতৃভূমি ভারতবর্ষ এই লড়াইয়ে নিপীড়িত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে সার্বিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছিল।

আসামের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের সাংস্কৃতিক নৈকট্যের কথা ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। দেশ বিভাগের পূর্ব পর্যন্ত দক্ষিণ আসামের বরাক উপত্যকা এবং বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলকে সাংস্কৃতিক অভিন্নতার জন্য সুরমা নদীর নামে একত্রে সুরমা উপত্যকা বলে চিহ্নিক করা হত। তাই মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশি পড়েছিল বরাক উপত্যকায়। বিপর্যস্ত আর্ত মানুষেরা আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে ছুটে এসেছিলেন আমাদের দেশে।

আসামের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। দক্ষিণ আসামের প্রাণকেন্দ্র শিলচর শহরের পৌরসভা মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে একাধিক প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল। এসব বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে সংশ্লিষ্ট সংস্থার নথিপত্রে।

এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরা আর এক ধরনের সহযোগিতা করেছিলেন। যার বিবরণ ইতিহাসের খুব একটা জায়গা পেয়েছে বলে মনে হয় না। সাধারণ মানুষের রচনা করেছিলেন গ্রামীণ সাহিত্য। যেকোনো আন্দোলনকে উপলক্ষ করেই সাহিত্য রচিত হয়। এর অধিকাংশই হয় গান। কারণ কথার সঙ্গে সুর-তালের সমন্বয়ে গান মানুষকে উদ্বেলিত করে বেশি। দক্ষিণ আসামে গানের একটি ধারার নাম ‘ভট্টসঙ্গীত’। বিশেষ কোনও ঘটনাকে উপলক্ষ করে ভট্টকবিরা সাংবাদিকসুলভ দক্ষতায় গান রচনা করে হাটে-বাজারে গেয়ে বেড়াতেন। সংবাদ প্রতিবেদনের মতো নানা তথ্যে পরিপূর্ণ এসব গান শুনে সাধারণ মানুষ বিশেষ ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত হতেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে একাধিক ‘ভট্টসঙ্গীত’ রচিত হয়েছিল। বিগত শতকের সাতের দশকে যখন সংবাদপত্রের ব্যাপক প্রচার ছিল না তখন এসব ভট্টকবিতাই মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবহিত করেছিল। শ্রব্য মাধ্যমে সংবাদ পড়া হয় গদ্যে। কিন্তু ‘ভট্টসঙ্গীত’ যেহেতু গান- তাই শ্রোতারা আগ্রহ ভরে এসব গান শুনতেন। এরকম একটি গান অমরচাঁদ আচার্যের লেখা ‘জয়বাংলার কবিতা’। ওই সময় গানটি গেয়ে বেড়াতেন পল্লীকবি মো. আলাউদ্দিন খাঁ।

আর এক ধরনের গান লিখেছিলেন শরনার্থীরা। সোনার বাংলার দুর্দশায় উদ্বিগ্ন দেশ ছেড়ে আসা মানুষেরা তাদের গানে মুক্তিযুদ্ধের সাফল্য কামনা করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকুন্ঠ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন। এরকম কয়েকটি গান লিখেছিলেন সোনাখিরা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া কবি অশ্বিনী।

লেখক : সম্পাদক দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ, আসাম, ভারত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়