শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১০:৩০ দুপুর
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১০:৩০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মূলত ভোটের যুদ্ধ হবে আ. লীগ-বিএনপির

ডেস্ক রেপার্ট: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলায়ও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। এই জেলায় নির্বাচনী আসন দুটি। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজার, গ্রামগঞ্জে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ চালিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। জেলার সর্বত্র সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রধান আলোচনার বিষয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিশেষ করে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে কে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন, তা জানতে সবাই উদ্গ্রীব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার দুটি আসনে বিজয় ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি চাচ্ছে হারানো আসন দুটি পুনরুদ্ধার করতে। মূলত প্রধান দুই দলের মধ্যেই এই দুই আসনে মূল ভোটযুদ্ধটা হবে।

রাজবাড়ীর দুটি আসনই দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দখলে। ১৯৯১ সালের পর একবার মাত্র বিএনপির দখলে গিয়েছিল আসন দুটি। বর্তমানে টানা ৯ বছর আওয়ামী লীগের দখলে। তাই ক্ষমতাসীনরা চাইছে একাদশ সংসদেও আসন দুটি ধরে রাখতে।

অন্যদিকে আগামী নির্বাচনে বিএনপির লক্ষ্য আসন দুটি পুনরুদ্ধার করা। যদিও এখন পর্যন্ত দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠপর্যায়ে প্রচার-প্রচারণায় খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। তবে জেলা ও উপজেলা সদরে দলটির কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে থাকার চেষ্টা করছে।

আওয়ামী লীগ

রাজবাড়ী-১ আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও জেলা

আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আকবর আলী মর্জি, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ও রাজবাড়ী জেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী কামরুন নাহার চৌধুরী ওরফে লাভলী, জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এস এম নওয়াব আলীর নাম শোনা যাচ্ছে।

রাজবাড়ী-২ আসনে প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুল হাকিম এমপি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সনাল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা কমিটির নির্বাহী সদস্য নুরে আলম সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় উপকমিটির সদস্য সলিসিটর মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের নাম শোনা যাচ্ছে।

রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী জানান, গত ৯ বছর তিনি তাঁর আসনে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছেন। এই উন্নয়নের ধারাকে সমুন্নত রাখতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। তাই আবারও দরকার শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না এলে উন্নয়নের এ ধারা বন্ধ হয়ে যাবে। যে কারণে আগামী সংসদ নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে হবে। নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। এর বিকল্প নেই।

রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুল হাকিম জানান, শেখ হাসিনা তাঁকে চারবার রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনবার তিনি বিজয়ী হন। এলাকার মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করার পাশাপাশি তিনি শিক্ষিত তরুণদের কর্মসংস্থান এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ, যোগাযোগব্যবস্থা, অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন। ফলে তিনি মনে করেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে এবং তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সনাল জানান, রাজবাড়ী-২ আসনে তাঁর ব্যাপক সমর্থক রয়েছে। তিনি দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছেন। নিয়মিত তিনি এলাকায় আসেন। প্রধানমন্ত্রী চাইলে এবার তিনি এমপি প্রার্থী হবেন।

বিএনপি

রাজবাড়ী-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম এবং জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম এ খালেক, রাজবাড়ী-২ আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নাছিরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কালুখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শিল্পপতি লায়ন অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক খান ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের নাম শোনা যাচ্ছে।

তবে রাজবাড়ীতে বিএনপি নেতাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও নাছিরুল হক, হারুন অর রশিদ ও অ্যাডভোকেট এম এ খালেকের মধ্যে রয়েছেন বিরোধ। তার পরও জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই।

রাজবাড়ী-১ আসনে আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম এবং রাজবাড়ী-২ আসনে নাছিরুল হক সাবু দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন তা এক প্রকার নিশ্চিত। কারণ এই দুটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হিসেবে খৈয়ম ও সাবুকেই ভোটাররা চেনে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে আলাপ করেও এর সত্যতা পাওয়া গেছে। তারাও মনে করে, ভোটের মাঠে বিএনপির এই দুই প্রার্থীকে মোকাবেলা করা কঠিন হবে। খৈয়ম ও সাবু মাঠপর্যায়ে যেমন জনপ্রিয়, তেমনি ভোটারদের মাঝে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।

জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম জানান, তিনি তিনবার রাজবাড়ী পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং একবার রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ছিলেন। তাঁর সময়ে রাজবাড়ী জেলা শহরের যে উন্নয়ন হয়েছে তার ছিটেফোঁটাও এখন হচ্ছে না। তিনি আরো জানান, বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল, এ দলে নেতা অনেক। তবে সব কিছুর ঊর্ধ্বে দল। দলের ক্রান্তিকালেও তিনি পিছপা হননি। তিনি মনে করেন, দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে। মনোনয়ন পেলে তিনি রাজবাড়ী-১ আসনটি পুনরুদ্ধার করবেন।

রাজবাড়ী-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি নাছিরুল হক সাবু জানান, শত নির্যাতন উপেক্ষা করে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে রয়েছেন। তিনি রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ইতিপূর্বে বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনের সাধারণ মানুষ, ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁকে ভালোবাসে। যে কারণে সরকারদলীয় এমপি ও নেতাকর্মীদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তিনি দলকে চাঙ্গা রেখেছেন। তিনি মনে করেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রী তাঁকেই মনোনয়ন দেবেন। আর তিনি মনোনয়ন পেলে এই আসনটি আবার পুনরুদ্ধার করবেন।

জাতীয় পার্টি

রাজবাড়ীতে জাতীয় পার্টির একটা শক্ত অবস্থান রয়েছে। জেলার পাঁচটি উপজেলা ও ৪২টি ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে তাদের। নিয়মিত তারা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছে। তবে মহাজোটগতভাবে গত দুটি নির্বাচন হওয়ায় কেন্দ্রীয় নির্দেশে তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে। এবার রাজবাড়ী-১ আসনে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চু এবং রাজবাড়ী-২ আসনে জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি ও কালুখালী উপজেলা জাপার সভাপতি আবুল হোসেন মিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে।

এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ ছোট ছোট রাজনৈতিক দল জোট মহাজোটের সঙ্গে দর-কষাকষিতে ব্যস্ত আছে। সূত্র: কালের কন্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়