রবিন আকরাম : লেখক ও ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্য তার ফেসবুকে প্রশ্ন রেখে লিখেছেন, ছাত্রদের শ্লোগানের ভাষা কী অশ্লীল? জর্মান ভাষায় "ব্যাড" বা "খারাপ" এই শব্দের দুইটি প্রতিশব্দ আছে। একটা "শ্লেষট" আরেকটা "ব্যেসে"।
এলিটেরা নিচুতলার মানুষদের সন্মন্ধে ব্যবহার করে "শ্লেষট" যা দিয়ে এলিটেরা নিচুতলার মানুষদের ভাষাকে অশ্লীল, অযোগ্য, খারাপ বলে চিহ্নিত করতে ব্যবহার করে। আর "ব্যেসে" শব্দটা ব্যবহার করে সমাজের নিচুতলার মানুষেরা উপরতলার মানুষদের উদ্দেশ্যে যা দিয়ে বোঝানো হয়, অপরিচিত, অনিয়মিত, অভাবনীয়, বিপদজনক, ক্ষতিকর, নিষ্ঠুর এই ধারনাগুলি।
তাহলে সমাজের নিচুতলার মানুষ আর এলিটেরা শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিশেষ বিশেষ বিবেচনায় শব্দ বাছে। কে নিজেকে এক্সপ্রেস করতে কী শব্দ ব্যবহার করছে সেটা রুচির নয়, শ্রেণীর প্রশ্ন; আরো বিশেষ ভাবে বললে ক্ষমতার প্রশ্ন।
এভাবেই আমরা ভদ্রলোকের একটা ভাষা আবিষ্কার করেছি। ভদ্রলোক কী ভাষায় নিজেকে এক্সপ্রেস করবে সেটার একটা প্রমিত রূপ দেয়া হয়েছে। আর ছোটলোক বা নন এলিটদের আমরা ভাষার ব্যবহার দিয়ে রুচিহীন বলে চিহ্নিত করি।
আজকের আন্দোলনে ছাত্রদের ব্যবহৃত শ্লোগানের তথাকথিত অপ্রমিত ভাষাকে যারা সমালোচনা করছে দেখবেন, তারা কোন না কোনভাবে ক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত। ক্ষমতাই শব্দগুলোকে অশ্লীল বলে চিহ্নিত করছে।
"পুলিশ কোন চ্যাটের বাল" এই ভাষা মজলুমের, ক্ষমতাহীনের। এই ভাষার শ্লেষ সহ্য করার শক্তি ক্ষমতাবানের নাই।
বিপ্লবের "প্রথম খুন" বের হয় ভাষা দিয়ে। ছাত্রদের শ্লোগানের ভাষা এক নতুন বিপ্লবের জন্ম দিচ্ছে। এই ভাষা সুন্দর, এই ভাষা শৈল্পিক, অশ্লীল নয় মোটেই।