শিরোনাম
◈ যুদ্ধ বন্ধের শর্তেই ইসরায়েলি জিম্মিদের ছাড়বে হামাস ◈ হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়  ◈ বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ◈ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে  প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা ◈ যে কোনো ভিসাধারী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন  ◈ পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফে'র গুলিতে বাংলাদেশি নিহত ◈  কমবে তাপমাত্রা, মে মাসেই কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা ◈ বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া মে মাসে, নজর রাখবে ভারত ◈ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, যান চলাচল শুরু ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভারত, চীন বা রাশিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত নয়: মার্কিন কর্মকর্তা

প্রকাশিত : ২০ মে, ২০১৮, ১২:০৪ দুপুর
আপডেট : ২০ মে, ২০১৮, ১২:০৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাইভেট টিউশনে ছুটছে ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাইভেট টিউশন একটি বৈশ্বিক বিষয়। এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও গার্হস্থ্য অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে পারে। ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্ববাজারে এর অর্থমূল্য দাঁড়াবে ২২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্যমান প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থীই প্রাইভেট টিউশনের পেছনে ছুটছে। প্রাইভেট টিউশন গ্রহণের বিষয়টি 'প্রাইভেট পড়া' নামে দেশের সর্বমহলে পরিচিত।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থার (ইউনেস্কো) পৃথক দুটি প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এর মধ্যে 'গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং (জিইএম) প্রতিবেদন ২০১৭-১৮' আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে প্রকাশিত হয় গত ১৬ মে।

এতে বলা হয়েছে, আজারবাইজান, চীন এবং স্পেনসহ বহু দেশে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থী জরিপে দেখা গেছে, এদের অন্তত অর্ধেকের ক্ষেত্রে প্রাইভেট টিউশন একটা বাস্তবতা। কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে প্রাথমিক স্তরের ৮১ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্কুলের ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী ২০১৪ সালে এমন শিক্ষা গ্রহণ করে। ২০২২ সাল নাগাদ এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাজারে অর্থমূল্য দাঁড়াবে ২২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের (বিএনসিইউ) সচিব মনজুর হোসেন বলেন, প্রাইভেট টিউশন বলতে শ্রেণিকক্ষের বাইরে কোচিংসহ যত ধরনের শিক্ষা রয়েছে, তাকে বোঝানো হচ্ছে। তবে অর্থনৈতিক হিসাবের বিষয়টি তিনি পরিস্কার করতে পারেননি। প্রাইভেট টিউশন নেয় ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী :ইউনেস্কোর পৃথক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থীই প্রাইভেট টিউশন গ্রহণ করে। যদিও প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ হার ৫০ শতাংশ। শিক্ষা ব্যবস্থায় পরীক্ষার ধরন ও শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে গত বছর এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশে এ গবেষণা পরিচালনা করে ইউনেস্কো। এর অংশ হিসেবে এ অঞ্চলের নয়টি দেশের বিভিন্ন স্তরের পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন গবেষকরা। এতে উঠে আসে পরীক্ষায় প্রস্তুতি নিতে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশকে শ্রেণিকক্ষের বাইরে প্রাইভেট টিউশন গ্রহণ করতে হয়। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে সম্প্রতি 'দ্য কালচার অব টেস্টিং : সোসিওকালচারাল ইমপ্যাক্টস অন লার্নিং ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক' শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে ইউনেস্কোর ব্যাংকক কার্যালয়।

গবেষণাটির বাংলাদেশ অংশের কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, অধ্যাপক ফজলুর রহমান ও সহযোগী অধ্যাপক শাহ্‌ শামীম আহেমদ।

এ প্রসঙ্গে শাহ্‌ শামীম আহেমদ বলেন, মূলত উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ওপর তারা গবেষণা পরিচালনা করেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও যশোর শহর ও গ্রামপর্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। সেখানে দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ কোচিং সেন্টারের ওপর নির্ভরশীল। কোথাও কোথাও প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই প্রাইভেট টিউশনের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। প্রাইভেট টিউশনের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন।

তিনি বলেন, প্রাইভেট টিউশন গ্রহণ মূলত পরীক্ষাকেন্দ্রিক। পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের কোচিংয়ে পাঠাচ্ছেন- এমন চিত্রই তারা পেয়েছেন।

মানসিক ও গার্হস্থ্য অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে পারে : জিইএম প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানোর অনুমতি প্রদান স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তারপরও বহু শিক্ষক তাদের স্বল্প বেতন পুষিয়ে নিতে ব্যক্তিপর্যায়ে পাঠদান করেন। এ ক্ষেত্রে আরেকটি কারণ, স্কুলে পড়ানোর মতো যথেষ্ট সময় থাকে না। এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও গার্হস্থ্য অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে পারে। তাই কিছু দেশে প্রাইভেট পাঠদানে শিক্ষকের সম্পৃক্তির বিষয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক আইন আছে।

২০১০ সালে শিক্ষকদের নৈতিক আচরণবিধি অনুযায়ী জর্জিয়ায় শিক্ষকরা তাদের নিজেদের শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিপর্যায়ে পাঠদান করতে পারেন না। জাপানে শিক্ষকদের জন্য সার্বক্ষণিক প্রাইভেট কোচিং নিষিদ্ধ। বিপরীত পক্ষে, উজবেকিস্তানে শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতে পারেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রাইভেট টিউশনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে কোচিং সেন্টারের সংখ্যা খুবই দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামে সবখানেই সমান প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সন্তানের ভালো ফল লাভে পিতা-মাতার উচ্চ প্রত্যাশাকেই এর অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্র: সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়