মুফতি আবদুল্লাহ তামিম: শয়তান মানুষের শত্রু। মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ ও শয়তানের মধ্যে এই শত্রুতা চলে আসছে। কেয়ামত পর্যন্ত বহাল থাকবে এ শত্রুতা। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বাকারাহ-৩১৬)। আদি পিতা আদম ও আদি মাতা হাওয়া (আ.)-এর জান্নাত থেকে দুনিয়ায় অবতরণের বাহ্যিক হেতু ছিল শয়তানের পাতা ফাঁদ। সে নিজেকে তাদের হিতাকাক্সক্ষী রূপে প্রকাশ করে আল্লাহর নামে শপথ করে আল্লাহর নিষিদ্ধ গাছের ফল খেতে তাদের প্ররোচিত করে।
আল্লাহ শয়তানকে চিরদিনের জন্য মানুষের শত্রু করেছেন। আর সেই থেকেই শয়তান মানুষের অনিষ্ট করতে আর তাকে গোমরাহ করতেই পছন্দ করে। তার কাজই এটা, মানুষকে কিভাবে আল্লাহর সঠিক পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে। শয়তান সবচেয়ে বেশি খুশি হয় যখন কোনো স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বাঁধাতে পারলে। আর তাফসীরে মাজহারিতে উল্লেখ আছে শয়তানদের সর্দার প্রতিদিন পানির ওপর তার সিংহাসন বসিয়ে শয়তানদের কারগুজারি শুনে। শয়তানদের মধ্যে যে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ বা ঝগড়া বাঁধিয়েছে বলে কারগুজারি শোনায় ইবলিস তার প্রতি খুশি হয়। সে ওই শয়তানকে পুরস্কারও দেয়। সুলাইমান আ. এর যুগে মানুষ শয়তানদের থেকে যাদু-মন্ত্র শিখে এর মাধ্যমে মানুষের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতো। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বাঁধাতো। কুরআনে এ বিষয়ে বলা হয়, তারা তাদের কাছে এমন জাদু শিখতো যা দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো যায় (সুরা বাকারাহ-১০২)
এছাড়া মহান আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে শয়তান মহা খুশি হয়। চাই তা বড় শিরক হোক বা ছোট শিরক। কারণ এতে বান্দার ঈমান নষ্ট হয়। তার জন্য জান্নাতের পথ বন্ধ হয়। লোক দেখানো আমল করলেও শয়তান মহা খুশি হয়। কারণ এ ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। সব ক্ষেত্রে নবী মুহাম্মাদ সা.কে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ না করা। পরিপূর্ণরূপে তাঁর অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকা। বিদাতে লিপ্ত হওয়া। কেননা এ ধরনের পাপকর্মে লিপ্ত হওয়াতে শয়তান বেশি খুশি হয়। এর আরেকটা কারণ হলো সাধারণ পাপকর্ম থেকে তওবা করা হয় কিন্তু বিদআত থেকে তওবা করা হয় না। তাছাড়া বিদআত পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত আল্লাহ্ তা‘আলা তার তওবা কবুল করেন না। (তারগীব তারহীব) তাই শয়তান প্রচ- রকমের খুশি হয়। বান্দা যখন এ গুনাহগুলো করেও তওবা না করে।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে আদায় না করলে ও বিনয়-ন¤্রতার সাথে নামাজ আদায় না করলেও শয়তান খুশি হয়। মসজিদে গিয়ে আদায় না করলে শয়তান খুশি হয়। তাই আমাদের আল্লাহর দরবারে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় কামনা করতে হবে। লেখক: কবি ও সাংবাদিক