রাজেকুজ্জামান রতন : একটা জাতির ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করার জন্য যত ধরনের ষড়যন্ত্র আছে অথবা যত ধরনের দুর্নীতি আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা। দ্বিতীয়ত হচ্ছে একটা জনগোষ্ঠীকে মাদকাসক্ত করা। আমাদের দেশে আমরা এ দুটোর ভয়াবহ প্রকোপ দেখতে পাচ্ছি। একদিকে মাদকের ছোবলে আমাদের তরুণদের ভবিষ্যৎ বিপর্যস্ত হচ্ছে । আরেক দিকে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বা জনশক্তি শারিরিক ভাবে বড় হবে কিন্তু দক্ষতায় তারা ছোট হয়ে থাকবে।
এরই একটা অংশ হিসেবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে ধ্বংস করার বিভিন্ন রকম আয়োজন আমরা দেখতে পাচ্ছি। যারা ব্যক্তিগত স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র লাভের জন্য একটা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়, তাদের একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দেখছি একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তার বহুমুখী প্রভাব পড়ে সমাজের মধ্যে।
প্রথমত: যারা পড়াশুনা করে রেজাল্ট ভাল করতে চায় তাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়। তারা ভাবে পড়ে কি হবে? অন্যরা তো পড়ালেখা না করে প্রশ্নপত্র পেয়েই রেজাল্ট ভাল করে ফেলে। দ্বিতীয়ত: একদল সুবিধাভোগী মানুষের জন্ম হয়। তারা মনে করে পরিশ্রম করে কিছু পাওয়ার দরকার নাই। দূর্নীতির মাধ্যমেই তো সব কিছু পাওয়া যায়।
তৃতীয়ত: সমাজের মানুষরাও ঐ দুই জনকে এক পাল্লায় মাপে, যে পড়ালোখা করে ভাল রেজাল্ট করল আর যে দূর্নীতির মাধ্যমে ভাল রেজাল্ট করল। ফলে সেখানে আর যোগ্যতার কোন মূল্য থাকে না। অযোগ্যরাই সেখানে মূল্যায়িত হয়। সাধারণভাবে যুব সমাজের মধ্যে হতাশা ও জীবন বিমূখতা তৈরি হয়।
এই যে তিনটি ভয়াবহ প্রভাব পড়ে, তার ফলে আমাদের জনগোষ্ঠী একটা দক্ষ জনগোষ্ঠীতে পরিণত হওয়ার পরিবর্তে একটা মানসিক ভাবে বিকলাঙ্গ জনগোষ্ঠিতে পরিনত হচ্ছে।
পরিচিতি : কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাসদ/মতামত গ্রহণ : এইচ. এম মেহেদী/ সম্পাদনায় : শাখাওয়াত উল্লাহ
আপনার মতামত লিখুন :