আব্দুম মুনিব, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) পূর্ব নির্ধারিত জনসভার একই জায়গায় সভা ডেকেছে যুবলীগ। জাসদের জনসভায় হাসানুল হক ইনু ও যুবলীগের জনসভায় স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে প্রাচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এ নিয়ে স্থানীয় জাসদ ও যুব এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। জাসদ নেতারা বলেছেন যে কোন পরিস্থিতিতে তারা জনসভা করবেন। আর আওয়ামীলীগ নেতারা জানান কেন্দ্রীয় এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে সভা ডাকা হয়েছে। পুুলিশ প্রশাসন বলছেন আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা দেখে দিলে হয়তো ১৪৪ ধারা জারি হতে পারে।
প্রশাসন, জাসদ ও যুবলীগ সূত্র জানায়, গত ১৫ দিন আগে থেকে দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের কামালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জাসদ রোববার জনসভার আয়োজন করে। এনিয়ে পোষ্টার মাইকিংসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে জাসদ নেতাকর্মীরা। ওই জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ইতোমধ্যে তিনি রাতেই কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন।
এদিকে শনিবার বিকেলে পিয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগ কামালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে একই সময়ে জনসভা আহ্বান করে এলাকায় মাইকিং করে। ওই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন স্থানীয় কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী। এছাড়া ওই জনসভায় উপজেলা যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এদিকে হঠাৎ করে একই স্থানে দুই পক্ষের সভা নিয়ে উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় জাসদের জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলার বাসিন্দা শরিফুল কবির স্বপন বলেন, জাসদের জনসভা পুর্ব নির্ধারিত। এজন্য পুলিশের অনুমতিসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিদ্যালয় মাঠে মঞ্চ প্যান্ডেলসহ সব আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে ইতিমধ্যে তথ্যমন্ত্রী ঢাকা থেকে রওয়ানাও দিয়েছেন। এখন কেন কি জন্য যুবলীগ একই স্থানে সভা ডাকলেন তা বোধগম্য হচ্ছে না। আমরা জনসভার জন্য সব রকম পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছি।
এ ব্যাপারে পিয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ লালু বলেন, স্থানীয় যুবলীগ কামালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সভা ডেকেছে। বিএনপি খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পায়তারা করছে। তাই কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর মতোই করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে সভা ডাকা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আমি রাস্তায় মধ্যে আছি। রাতেই ভেড়ামারায় নিজ বাড়িতে পৌছাবো। আমাদের মিটিং পূর্ব নির্ধারিত মিটিং, মাইকিং হচ্ছে সুতরাং কেউ ওখানে হুট করে কিছু করলে প্রশাসন সেটা দেখবে। এর বেশি কিছু জানি না।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ দারা খান বলেন, ১৪৪ জারি প্রস্তুতি চলছে সেটা ইউএনও দেখছেন। একই জায়গায় দুটি দলের সভা, সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। জাসদ সভা করার জন্য কোন অনুমতি নেয়নি। আর আমার কাছে অনুমতি নেবে কেন? সভা ডাকতে হলে ডিসির কাছে এসপির কাছে নেবে। আমি অনুমতি দেওয়ার কেউ না।
এ ব্যাপারে জানতে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌফিকুর রহমানের সরকারি মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।