ফারমিনা তাসলিম: বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে কোনো তলদেশ নেই- এমনটাই বলা হয় । কিন্তু সাগরের তলদেশে পানির গভীরতাও এখন মাপা যাচ্ছে। তিমি, হাঙ্গর ছাড়াও দামী সামুদ্রিক সম্পদের বিশাল মজুদ সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় ও নৌবাহিনীর সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য।
সাগরের নীল জলে ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিন ছুটে চলার এ অনাবিল সৌন্দর্য্যের দেখা মিলবে, সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে মংলা বন্দরের প্রায় দু’শ মাইল দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরে।
বিশাল আকারের ইরাবতী ডলফিন, ইন্দো প্যাসিফিক ডলফিন ও পাখনাহীন ইমপ্লাইস ডলফিনের পাশাপাশি ভেসে ওঠে তিমি-হাঙ্গরও। আর সোয়াচ যেন মাছের খনি।
গবেষকদের মতে, ডলফিন ও তিমির মতো বড় সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজনন কেন্দ্র- সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড। নানা জাতের কাছিম এবং কাকড়াও এখানে আসে ডিম ছাড়তে।
ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের প্রধান গবেষক ড. আনিসুজ্জামান খান বলেন, কিছু তিমি স্থায়ীভাবে বঙ্গোপসাগরে থাকে। এছাড়া মাইগ্রেটারিভাবে কিছু অল্প সময়ের জন্য আসে। এবার আমরা দুই প্রজাতির তিমি দেখেছি এবং সংখ্যায় সেটি ৭টির মতো।
গুরুত্ব ও গভীরতা বিবেচনায় সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয় ব্রিটিশ শাসনামলে। এটি বিশ্বের ১১টি গভীরতম গিরিখাতের একটি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এটি মূলত সামুদ্রিক অভয়াশ্রম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য গবেষক মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, বঙ্গোপসাগরে তিনটা ট্রল করা হয়েছে। এ তিনটা ট্রলের মধ্যে বেশকিছু মাছ আমাদের আগের তালিকায় ছিল না। আমরা সে রকম কিছু মাছ পেয়েছি।
গত মার্চ ও নভেম্বরে সোয়াচে দুই দফায় গবেষণা চালায় ইসাবেলা ফাউন্ডেশন, এ কাজে বিশেষায়িত জরিপ জাহাজ মীন সন্ধানীর সহায়তা নেন ৪০ গবেষক।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, মাছ এবং অন্যান্য নমুনাগুলো আমরা সব সংগ্রহ করেছি। আর ল্যাবে পরীক্ষা চালাচ্ছি।
তলাবিহীন সোয়াচে পানির গভীরতা প্রায় সাড়ে সাত শ মিটার বা আড়াই হাজার ফুট নিশ্চিত হয়েছেন গবেষকরা।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ সমুদ্র সম্পদকে ব্যবহার করে অর্থনৈতিক উন্নতির সাফল্যে পেলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে। তাই সমুদ্র সম্পদের যাচাই ও সঠিক ব্যবহার করার তাগিদ দিচ্ছে গবেষকরা।
সূত্র - ইনডিপেনডেন্ট টিভি