শিরোনাম
◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম  ◈ গৌরনদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে অবরোধ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩

প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ০৭:৫১ সকাল
আপডেট : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ০৭:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছত্রাক আতঙ্ক: বাংলাদেশ সীমান্তে গম চাষ নিষিদ্ধ করেছে ভারত

আনিস রহমান: ভারতের কৃষি দপ্তর জানিয়েছে যে আগামী দুই বছর বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় গম চাষ করা যাবে না। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে গমের ফসলে হুইট ব্লাস্ট নামের একটি ছত্রাক রোগ ছড়িয়ে পড়ার পর কৃষি বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে ওই রোগ ভারতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত অঞ্চলের যেসব এলাকায় এ বছর গম চাষ করেছিলেন, তা ইতোমধ্যেই জ্বালিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য মোট চার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে কৃষকদের।
পশ্চিমবঙ্গের দুটি জেলা- নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদের ওপরে কৃষি দপ্তরের বিশেষ নজর দিচ্ছে - কারণ সেখান থেকেই ভারতে রোগ ছড়ানোর সব চেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।


মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ও সীমান্তবর্তী এলাকা হরিহরপাড়ার জন প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন বলছিলেন, "গত মৌসুমে শুধু আমাদের মুর্শিদাবাদ জেলাতেই প্রায় ৪৮০ হেক্টর জমিতে বোনা গম এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার পাঁচটি ব্লকে এই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ওই ফসল নষ্ট করে দিতে হয়েছে। প্রথমে কৃষকরা বুঝতেই চাইছিলেন না, কিন্তু পরে সরকারি ব্যবস্থায় সেই সব গম নষ্ট করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণও দিয়েছি আমরা।"

 

গত বছর বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেও একইভাবে গমের ফসল নষ্ট করা হয়েছে রোগ আটকাতে। আর পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় পরের দুবছর যাতে কেউ গম চাষ না করেন, তার জন্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রচার।
কৃষিবিজ্ঞানীরা মনে করছেন ভারত- বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে আক্রান্ত গমের বীজ ভারতে প্রবেশ করে থাকতে পারে।

হরিয়ানার কারনালে কেন্দ্রীয় গম ও বার্লি গবেষণা ইন্সটিটিউটের কৃষিরোগ বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক দেবেন্দর পাল সিংয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম হুইট ব্লাস্ট রোগটি দক্ষিণ আমেরিকায় দেখা যায়, কিন্তু সেটি এই অঞ্চলে এলো কী করে?

মি. সিংয়ের কথায়, "প্রথম ব্রাজিলে গমের ফলনে এই ছত্রাক রোগ দেখা যায় - তারপরে সেটি দক্ষিণ আমেরিকার নানা দেশেও ছড়ায়। এটা এশিয়ার এই অঞ্চলের রোগ নয়। তবে বাংলাদেশ সম্প্রতি ওইসব দেশ থেকে সস্তার গম আমদানি করেছে - কিছু চাষি হয়তো সেই গম বীজ হিসাবে ব্যবহার করেছেন আর তার থেকেই সেদেশে ওই রোগ ছড়িয়েছে।"

সেইজন্যই সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেই রোগটাকে বেধে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন ভারতের গম ও বার্লি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান কৃষিরোগ বিশেষজ্ঞ মি. সিং।

মি. মোশারফ হোসেনও বলছিলেন যে এক শ্রেণি অসাধু বীজ ব্যবসায়ী বাংলাদেশ থেকে চোরাই পথে ছত্রাক রোগগ্রস্ত বীজ নিয়ে এসে থাকতে পারেন.. আর একবার হুইট ব্লাস্ট রোগ ছড়ালে তা শুধু ওই জমি নয়, ধীরে ধীরে অন্যান্য জমিতে বোনা গমের ফলনকেও ক্ষতি করবে, নষ্ট হবে মাটিও।

অন্যদিকে কৃষিরোগ বিশেষজ্ঞ দেভেন্দর পাল সিং বলছিলেন যে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের প্রতিটি রাজ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্য অঞ্চলে গম চাষ খুব একটা হয় না, তাই মূল নজরটা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দুটি জেলাতেই।

সীমান্ত অঞ্চলে হুইট ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ে নি, এটা নিশ্চিত করার পরে এই রোগ প্রতিরোধকারী উচ্চফলণশীল গমবীজ সেখানে প্রচুর পরিমাণে পাঠাবে কর্তৃপক্ষ।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়