সঞ্চয় বিশ্বাস : যে কোনা সোশ্যাল মিডিয়া আর টেক কোম্পানি গুলো ইউজারদের ডাটা কালেক্ট করতে পারে এবং নিজেদের কাজে ব্যবহার করতে পারে। কারণ আমাদের ব্যবহারের প্রয়োজনে আমরা নিজেদের ইচ্ছাতেই তাদের কাছে আমাদের ব্যক্তিগত ডেটা দিচ্ছি। তবে অনেকে জানে না প্রায় সব কোম্পানিই ইউজারদের ডেটা কালেক্ট করে, আপনি সেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দেন বা না দেন। ইত্তেফাক
বেশির ভাগ কোম্পানি আপনার, লোকেশন, বয়স, কোন ডিভাইস ব্যবহার করছেন সেটা জানতে চায়। তারা বুঝতে পারে আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কোন লোকেশনে অবস্থান করছেন, বয়সের উপর ভিত্তি করে তারা আপনার আচরণ অনুযায়ী প্রোফাইল তৈরি করে।
বড় বড় কোম্পানি ইতিমধ্যে, থার্ডপার্টি এডভারটাইজারদের কাছে যেন আপনার ডেটা কম এক্সপোজ হয় সে জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সব সময় এটা কাজ করে নি। কয়েক মাস আগে অ্যাপল App Tracking Transparency (ATT), পলিসি নিয়ে এসেছিল যার মাধ্যমে ইউজার ডিসাইড করতে পারবে যে কোন কোন অ্যাপ তাদের ডেটাতে এক্সেস নিতে পারবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই পলিসি এপ্লাই করার পরে অ্যাপল নিজেই ইউজারের হিউজ ডেটা কালেক্ট করেছে।
যারা অ্যাপল ইউজার তারা চাইলে দেখতে পারেন অ্যাপল এখন পর্যন্ত আপনার কী কী তথ্য স্টোর করেছে এবং এর একটি কপিও ডাউনলোড করতে পারেন। এটা করতে প্রথমে Apple Account এ যান স্ক্রুল করে Data & Privacy তে আসুন, Manage Your Data and Privacy, ট্যাপ করুন এবং get a copy of your data সিলেক্ট করুন।
গুগলের ট্র্যাকিং
আমরা অনেকে জানি গুগল সার্চের জন্য জনপ্রিয় হলেও এটা ইউজার ডেটা সংগ্রহেও বিখ্যাত। গুগলে আপনার একাউন্ট থাকলে, এটা আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের চেয়েও আপনার সম্পর্কে বেশি তথ্য জানবে। আপনার যদি বাসায় গুগলের স্মার্ট এসিস্ট্যান্ট থাকে তাহলে, এটি আপনার ঘরের খবর যেমন, কোথায় থাকছেন, যাচ্ছেন, কী কিনছেন, কার বার্থডে কবে, কখন কোন অনুষ্ঠান হতে পারে সব জানবে।
যদি এই সব জেনে কেউ গুগলের ট্র্যাকিং বন্ধ করতে চান তাহলে একমাত্র পথ হচ্ছে এটার কোন সার্ভিসই ব্যবহার না করা। কিন্তু এটা প্রায় অসম্ভব, আপনাকে ইমেইলের জন্য হয়তো জিমেইল ব্যবহার করতে হবে, ন্যাভিগেশনের জন্য গুগল ম্যাপ ব্যবহার করতে হবে। গুগল আপনার সম্পর্কে কতটুকু জানে সেটা জানতে প্রথমে গুগল অ্যাকাউন্ট এ সাইন ইন করুন মাই একটিভিটি পেজে সাইন ইন করুন। এখান থেকে জানতে পারবেন গুগল আপনার সম্পর্কে কী কী সেভ করে রেখেছে, চাইলে আপনি search history, location tracking, YouTube history, personalized advertising ইত্যাদি ডিলিট করতে পারবেন। আপনার যদি লোকেশন ট্র্যাকিং এনেভল থাকে তাহলে গুগল এটাও জানতে পারবে আপনি কোন জায়গা থেকে কোন ছবি তুলেছেন।
তথ্য ভাণ্ডার ফেসবুক
সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে ইউজারদের সবচেয়ে বেশি ডিটেল থাকে। আর এই জন্যই হ্যাকাররা ফেসবুক ও টুইটার হ্যাক করে ক্রেডিট কার্ডের মত তথ্য পেয়ে যায়। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে আমরা নিজেদের ইচ্ছাতেই সব তথ্য দিয়ে দেই।
আমরা যখন ফেসবুকে একাউন্ট করি তখনই আমাদের নাম, বয়স, কোথায় বাস করি, আমাদের বন্ধু কারা, রাজনৈতিক দল, আগ্রহের বিষয় সব দিয়ে দেই। আপনি যদি জানতে চান কী কী তথ্য আপনার সেভ আছে তাহলে এখানে থেকে আপনার কপি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এটা করার জন্য আপনাকে প্রথমে ডেক্সটপ থেকে ফেসবুকে লগইন করতে হবে। ডানপাশের একাউন্ট বাটমে ক্লিক করুন, Settings & Privacy, এ যান এবার Download your information খুঁজে বের করে সেখানে ক্লিক করুন।
আপনার ভাবনার চেয়ে বেশি জানে মাইক্রোসফট
আপনি যদি মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই সেখানে একাউন্ট খুলতে হবে। আর এখান থেকে ডাটা কালেকশন শুরু হয়। বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন কোম্পানি অফিস ৩৬৫ ব্যবহার করে সুতরাং মাইক্রোসফট জানে আপনি কে এবং কোথায় কাজ করেন। আপনার যদি এক্সবক্স লাইভ অথবা গেমপাস এ একাউন্ট থাকে তাহলে তারা জানতে পারে আপনি কোথায় বাস করেন এবং কোন গেম পছন্দ করেন এবং কতবার সেগুলো ক্রয় করেন। আপনি মাইক্রোসফটের ক্ষেত্রেও জানতে পারবেন তারা আপনার সম্পর্কে কী কী তথ্য জানে। আপনি মাইক্রোসফটের ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার ব্রাউজিং এবং লোকেশন ডাটা দেখতে পারবেন। তাছাড়া এখান থেকে আপনি এক্সবক্স, উইন্ডোজ, মাইক্রোসফট টিমস এবং স্কাইপ এর প্রাইভেসি সেটিংস ও দেখতে পাবেন।