শিরোনাম
◈ বাংলাদেশে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ভারত, প্রধান উপদেষ্টার অভিযোগ 'দায় এড়ানোর কৌশল' বলছে দিল্লি ◈ দয়া করে থামুন, আপনি দেশের ক্ষতি করছেন, নিজের দলের ক্ষতি করছেন : তাসনিম জারা ◈ গণমাধ্যম নয়, রায়ের কপি দেখে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি: সিইসি নাসির উদ্দিন ◈ আমার পাওয়ার দরকার নাই পাওয়ার আমার পিছে ঘোরে: শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ◈ গণতন্ত্রের নিরাপদ যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, খুব শিগগিরই বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে পাবো : খালেদা জিয়া (ভিডিও) ◈ কা‌রো কথায় পদত্যাগ করার প্রশ্নই ও‌ঠে না : বি‌সি‌বি সভাপ‌তি ◈ ক্রিকেটার হাসান আলীর মা ছিনতাইকারীর কবলে, কেড়ে নিলো ২ লাখ ৩০ হাজার রুপি ◈ ঋণনির্ভর বাজেটে ভারসাম্য রক্ষার তাগিদ অর্থনীতিবিদদের ◈ আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে পুলিশের ১৯ পরামর্শ ◈ যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বাংলাদেশি অ্যাসাইলাম প্রত্যাশীদের জন্য দুসংবাদ

প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২৫, ০৪:২৩ দুপুর
আপডেট : ২৯ মে, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশে অবশেষে আসছে গুগল পে

বহু প্রতীক্ষার পর, বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে যাচ্ছে গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা গুগল ওয়ালেট—যা 'গুগল পে' নামেই বেশি পরিচিত। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো টিবিএসকে জানিয়েছে, আগামী এক মাসের মধ্যেই দেশের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় এ সেবার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। 

এর মধ্য দিয়ে হাতে থাকা স্মার্টফোনই হয়ে উঠবে গ্রাহকদের 'ডিজিটাল ওয়ালেট'। ফলে আর আলাদা করে প্লাস্টিক কার্ড বহন করার দরকার পড়বে না। আকাশপথে যাতায়াত থেকে শুরু করে কেনাকাটা কিংবা সিনেমা, সবকিছুতেই মোবাইল ফোনেই হবে লেনদেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের ভিসা ও মাস্টারকার্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায়) গুগল ওয়ালেটের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন এবং যেকোনো এনএফসি (নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন)-সাপোর্টেড টার্মিনালে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। তবে ধাপে ধাপে দেশের অন্যান্য ব্যাংকও এই সেবায় যুক্ত হবে।

এখন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং অবকাঠামোর সাথে গুগল ওয়ালেটের সমন্বয় না থাকায় বাংলাদেশে এই সেবা চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রযুক্তি-প্রেমী শহুরে ব্যবহারকারীদের মধ্যে এনএফসি পেমেন্টের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই উদ্যোগ দেশের আর্থিক লেনদেনের খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

সিটি ব্যাংক ও গুগল একসাথে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে। চালু হলে ব্যবহারকারীরা কনট্যাক্টলেস পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) টার্মিনালে সহজেই 'ট্যাপ অ্যান্ড গো' পেমেন্ট করতে পারবেন, যা তাদের কেনাকাটাকে করবে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও আধুনিক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকখাতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা টিবিএসকে এ বিষয়ে বলেন, 'এর প্রভাব ব্যাপক; খুচরা লেনদেন সহজ করার পাশাপাশি ই-কমার্সের অভিজ্ঞতাও আরও মসৃণ হবে। অন্যান্য ব্যাংক এই পথে এগোলে বাংলাদেশের ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইকোসিস্টেম এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে।' 

ডিজিটাল কন্টাক্টলেস পেমেন্টের ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে আছে ভারত। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, দেশটির মোট ডিজিটাল লেনদেনের ৯৩ শতাংশ এবং লেনদেনের মূল্যের ৯২ শতাংশই ইউপিআই (ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস)-এর মাধ্যমে হয়েছে। এর মধ্যে গুগল পে একাই লেনদেনের মোট অর্থের ৫১ শতাংশ এবং মোট লেনদেনের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি (৩৭ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ করেছে। 

এই অগ্রগতি শুধু ভারতে নয়, সম্প্রতি ১২ মার্চ থেকে পাকিস্তানেও গুগল পে চালু হয়েছে। এছাড়া, গুগল পে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও ব্যবহার হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন কি লাগবে?

ডিজিটাল ওয়ালেট সেবাগুলো সাধারণত স্পর্শকাতর আর্থিক তথ্য ও লেনদেন পরিচালনা করে, তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, গুগল ওয়ালেট ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করবে না। তাই অ্যাপ চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।

ব্যবহারকারীরা শুধু নিজেদের ব্যাংক কার্ড অ্যাপে যুক্ত করবেন, আর সব লেনদেন তাদের নিজ নিজ ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে, ডিজিটাল ওয়ালেটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন ব্যাংকগুলোকে সেবা চালুর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে।

চার্জ কত?

গুগল ওয়ালেট সাধারণত ব্যবহারকারীদের কেনাকাটা, অনলাইন পেমেন্ট বা 'পিয়ার-টু-পিয়ার' (ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি) ট্রান্সফারের মতো লেনদেনে কোনো চার্জ করে না, যদি তারা নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন। 

তবে কার্ডধারীর ব্যাংক তাদের নিজস্ব নীতিমালা, কার্ডের ধরণ এবং লেনদেনের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে ফি ধার্য করতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি লেনদেনটি আন্তর্জাতিক গেটওয়ের মাধ্যমে হয় অথবা বিদেশি মুদ্রা জড়িত থাকে, তাহলে ব্যাংকগুলো সাধারণত ১ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি লেনদেন ফি দিতে পারে। বাংলাদেশে যেসব লেনদেন স্থানীয়, অর্থাৎ দেশের ভেতরে হয়, সেখানে সাধারণত কোনো অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয় না।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র টিবিএসকে জানিয়েছে, যদি গুগল কোনো কারণে এই স্থানীয় লেনদেনটি আন্তর্জাতিক সার্ভারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণ করে, তখন হয়ত ফি লাগতে পারে।

বর্তমানে বাংলাদেশে বিকাশ, রকেট, উপায়সহ বিভিন্ন স্থানীয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্ল্যাটফর্ম ব্যাপক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। এছাড়া ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডও ডিজিটাল লেনদেনের জন্য সাধারণত ব্যবহৃত হয়।

তবে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। অপারেটররা জানান, তাদের কাজের ক্ষেত্রে স্পষ্ট নিয়ম-নীতি রয়েছে, যা ঠিক করে দেয় তারা কী করতে পারবে এবং কী করতে পারবে না। 

গড়ে প্রতিদিন দেড় কোটি লেনদেন পরিচালনা করে দেশের সবচেয়ে বড় এমএফএস প্রদানকারী অপারেটর বিকাশ। বিকাশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা চাই সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া হোক। গুগল পে একটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম, তাই এর প্রভাব আমাদের স্থানীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর কী ধরনের হবে, সেটাও বিবেচনা করতে হবে।'

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়