স্পোর্টস ডেস্ক : ১৯৮৬ বিশ্বকাপ মানেই ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ‘হ্যান্ড অব গড’, শতাব্দীর সেরা গোল, আর অ্যাজটেকা স্টেডিয়ামে ট্রফি উঁচিয়ে ধরা আর্জেন্টিনার সেই স্বপ্নময় মুহূর্ত- সবকিছুই ফুটবল ইতিহাসের অংশ। তবে এ গল্পের আড়ালে আছে আরেকটি দৃশ্য। এমন একটি জার্সি, যা কিনতে হয়েছিল নকল পণ্যের বাজার থেকে। ‘রেপ্লিকা’ সেই জার্সিই হয়ে যায় ইতিহাসের অংশ।
মেক্সিকোয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ঠিক আগমুহূর্তে ফিফা জানায়- ইংল্যান্ড সাদা জার্সি পরবে, তাই আর্জেন্টিনাকে পরতে হবে গাঢ় রঙের বিকল্প জার্সি।
সমস্যা দেখা দেয় এখানেই। আর্জেন্টিনার সেকেন্ড কিট ছিল মোটা সুতি কাপড়ের, যা মেক্সিকোর তীব্র রোদে খেলার জন্য অস্বস্তিকর।
কোচ কার্লোস বিলার্দো বুঝে যান এই জার্সি পরে খেললে বিপদ নিশ্চিত। তবে দলের হাতে আর কোনো বিকল্প ছিল না। তাই ম্যাচের আগের দিন বিকেলেই দৌড় দিতে হয় মেক্সিকো সিটির তেপিতো এলাকায়।
এটি তখন ‘নকল পণ্যের বাজার’ নামে পরিচিত। সেই বাজারের ফুটপাতের দোকান থেকেই সংগ্রহ করা হয় হালকা, বাতাস চলাচল সুবিধাযুক্ত নীল রঙের কয়েক সেট ‘রেপ্লিকা’ জার্সি।
তবে সেই জার্সিগুলোতে ব্যাজ বা নম্বর কিছুই ছিল না। টিম হোটেলে ফিরে শুরু হয় তড়িঘড়ি প্রস্তুতি। কেউ লোগো সেলাই করছে, কেউ নম্বর লাগাচ্ছে- মাঝরাত পর্যন্ত টানা কাজ। ভোরে জার্সি দেখে ম্যারাডোনা হাসিমুখে বলে ওঠেন ‘এটা তো খুব সুন্দর।
পরদিন সেই ‘রেপ্লিকা’ জার্সি গায়েই মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। আর সেই জার্সিতেই জন্ম নেয় ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল ও 'শতাব্দীর সেরা গোল’। ইংল্যান্ডকে ২-১ হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। পরে ফাইনালে জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে আলবিসেলেস্তেরা।
তেপিতোর বাজার থেকে কেনা সেই নীল জার্সিগুলো আর কখনো ব্যবহার হয়নি। তবে ইংল্যান্ড ম্যাচে ম্যারাডোনার পরিহিত ঐতিহাসিক জার্সিটি ২০২২ সালে নিলামে বিক্রি হয় রেকর্ড ৯৩ লাখ ডলারে। ---- তথ্যসূত্র, টি স্পোর্টস