শাহানুজ্জামান টিটু: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। তাকে কোন দেশে নিয়ে চিকিৎসা করলে ভালো হবে এবিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
দলটির সূত্র জানায়, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় নেওয়া যায় এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলেও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সরকার থেকে অনুমতি পাওয়ার সাথে সাথে যাতে তাকে বিদেশে নেওয়া যায় এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে বিএনপি।
বিএনপির এক দায়িত্বশীল নেতা জানান, সরকার হয়ত যেকোনো মুহূর্তে অনুমতি দিতে পারেন। এ কারণে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের পর নতুন কোনো কর্মসূচিতে না গিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রশ্নে ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে বিএনপির নীতি নির্ধারনীয় ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তবে বৈঠকের সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমকে এখানো জানানো হয়নি। ব্যক্তিগতভাবেও কোনো নেতা সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেননি।
ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মিসেস জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার ধরন সম্পর্কে জেনেছি। তার ভালো চিকিৎসা বিশ্বের খুব কম দেশে সম্ভব। জার্মানিতে এসব সমস্যার খুব ভালো চিকিৎসা আছে। সরকারের অনুমোদন পেলে তিনি জার্মানিতে চিকিৎসা নিতে পারেন। খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব তার মধ্যে জার্মানি অন্যতম।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসার বিষয়ে জানাতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার অবস্থা শঙ্কাজনক। আমরা অপেক্ষা করছি সরকার যতদ্রুত সম্ভব বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি অনুমতি দেবেন।
ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশে তাকে দেওয়ার মত আর কোনো চিকিৎসা নেই। এখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া জরুরি। মেডিকেল বোর্ড মনে করে সর্বসম্মতভাবে তাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অতি দ্রুত বিদেশে লিভার প্রতিস্থাপনে সম্মিলিত আধুনিক মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া জরুরি। তাহলেই তিনি শঙ্কা মুক্ত হতে পারেন বলে বোর্ড রিকমেন্ডেশনে বলেছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর লিভারের জটিলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কিডনির কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করেছে। ফলে শারীরিক অবস্থা অবনতিশীল বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।
গত ৯ আগস্ট থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি লিভার, কিডনি, হার্ট, ফুসফুসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব