শাহানুজ্জামান টিটু: বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সরকার প্রধান আমেরিকায় থাকা অবস্থায় ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণা করায় নির্বাচন এখন সরকারের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, অতি সম্প্রতি জাতিসংঘে যোগদানের প্রশ্নে আমেরিকায় গেছেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু আমেরিকায় যাননি তিনি বেশ কিছুদিন আমেরিকায় থাকবেন। তার এতোদিন থাকার যে কর্মসূচীটা সেটাও তো সরকার প্রকাশ করেনি। কেন প্রকাশ করেনি?
দুদু বলেন, তিনি আমেরিকায় গেছেন তার সরকারের প্রশ্নে, তার নীতির প্রশ্নে, তার মতামতের প্রশ্নে। আমেরিকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করতে পারেন। তাদের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু তিনি যাওয়ার কয়দিন পরে আমেরিকার সেস্ট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে যে ভিসানীতি আগে দেওয়া হয়েছিলো সেই ভিসানীতির কার্যকর করার একটি স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কাদের ওপরে প্রয়োগ করা হবে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশের সরকার প্রধান সেখানে থাকার পরে আওয়ামী লীগের যেটা প্রত্যাশা বা সরকারের লোকজন যেটা প্রত্যাশা করছিলো হয়তো তার সঙ্গে যে দূরত্ব তিনি কমাতে পারেননি। চারিপাশের ঘটনা, বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপের বক্তব্য তাতে এটা স্পষ্ট যে সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচন অতো সহজ ব্যাপার হচ্ছে না । সেটা কিন্তু ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, যদি তারা অতীতের যে আন্দোলন অর্থাৎ কেয়ারটেকার সরকার প্রশ্নে তাদের সেই আন্দোলনের কথা তারা স্মরণ করে। একটু ভাবেন যে কেনো করেছিলো। তাদের যে ব্যাখ্যা ছিলো এটা বিদেশে রপ্তানিযোগ্য কেয়ারটেকার যে এটা এতো ভালো। আজকের সরকার প্রধান তখন বিরোধী দলের নেত্রী বলেছিলেন যে এটা এতোই ভালো যে বিদেশে রপ্তানি করা যেতে পারে। পার্লামেন্টে দাড়িয়ে বলেছিলেন। তাহলে সেই ভালো জিনিসটাকে কেনো কালো করা হয়েছে? মারা হয়েছে? কেন বাদ দেওয়া হয়েছে।
সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, আইনবিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকার যে কেয়ারটেকার পাশ করেছে সেটা অবৈধ কারণ, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগেই তারা কেয়ারটেকার বাতিলের বিল পাশ করেছে। এটা কিভাবে পাশ করে। শর্ট জাজমেন্টের প্রায় ১৮ মাস পরে অবসর নেওয়া প্রধান বিচারপতি, সেটাও আবার আরেকটি অবৈধ একটি ঘটনা সংবিধান অনুযায়ী। তিনি এটা পারেন না। খায়রুল হক সাহেব যে সই করেছেন ১৮ মাস পরে শর্ট জাজমেন্টের প্রেক্ষিতে। এটা তিনি শুধু পারেননিই আবার সেটা তিনি পরিবর্তনও করেছেন। এটাও আইন ও সংবিধানের দৃষ্টিতে অপরাধ।
তিনি বলেন, আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের দৃষ্টিতে কেয়ারটেকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হয়নি। যদি না হয়ে থাকে তাহলে আরেকটি জটিলতা তৈরি হচ্ছে। সরকার যদি বর্তমান সংবিধানের আওয়াতায় আরেকটি নির্বাচন করার গো ধরে তাহলে এই আইন বিশেষজ্ঞরা তারা যে এই কথাটা একটি সেমিনারে বলেছেন তাহলে এটির কি হবে?
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচনের বিষয়টি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। সে জন্য আমি বলবো সরকারের সঙ্গে যারা উপদেষ্টা ও আইনবিশারদরা আছেন সরকারকে বুঝানো যে অতীতে যা ছিলো তা ফিরিয়ে এনে এই জটিলতা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে। তাহলে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হবে। দেশ ও বিদেশে সবাই এটা গ্রহণ করবে। সরকার যে বিপদজনক অবস্থায় আছে হয়তো সেখান থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারবে। যদি তারা খোলা মনে স্বচ্ছ মনে, পরিষ্কার মনে এগুলো ভেবে দেখেন।