শিরোনাম
◈ বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় এডিবি : কান্ট্রি ডিরেক্টর ◈ ক্রিকেটারদের শ্লীলতাহানি দুঃখজনক, ভারতের ভাবমূর্তির জন্য লজ্জার: বি‌সিসিআই ◈ চট্টগ্রাম বন্দরে ট্যারিফ বৃদ্ধি ও বিদেশি অপারেটর নিয়োগে সমালোচনার ঝড় ◈ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথমবারের মতো দেশে এলো আমদানি করা প্রায় ৫৭ হাজার টন গম ◈ ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র দৃঢ় হয়, ব্যর্থ হলে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে: প্রধান বিচারপতি ◈ শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে হবে: তারেক রহমান ◈ দুই দশক পর ঢাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক, নতুন সম্ভাবনায় আশাবাদ দুই দেশ ◈ ফজরের পর কবরস্থানে দেখা গেল গা শিউরে ওঠা দৃশ্য! (ভিডিও) ◈ মিছিলে ডামি রাইফেল উঁচিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, এরপর যা ঘটল (ভিডিও) ◈ রো‌হিত ও কোহলির ব‌্যা‌টে অ‌স্ট্রেলিয়ার বিরু‌দ্ধে জয় পে‌য়ে হোয়াইটওয়াশ এড়া‌লো ভারত

প্রকাশিত : ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ০১:৫০ রাত
আপডেট : ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:০৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে কারণে জামায়াত হেফাজতের দূরত্ব!

মানবজমিন প্রতিবেদন:  দূরত্ব কমছে না জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই দুই ইসলামী দল ও সংগঠনের দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে। জামায়াতের তরফে দূরত্ব কমানোর  নানা প্রচেষ্টার মধ্যেই হেফাজত আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর একের পর এক জামায়াতবিরোধী কঠোর বক্তব্য অস্বস্তিতে ফেলছে দুই পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের। 

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, হেফাজতের আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী প্রায়ই বিভিন্ন সভা-সমাবেশে জামায়াতকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। সর্বশেষ গত ৩রা অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে জামায়াতকে ভোট না দেয়ার জন্য তার অনুসারীদের আহ্বান জানিয়েছেন বর্ষীয়ান এই আলেম। ওইদিন সন্ধ্যায় হেফাজতের হাটহাজারী শাখা আয়োজিত ‘শানে রেসালত’ সম্মেলনে তিনি বলেন, যারা পূজা আর রোজাকে একই বলে তারা যেন ক্ষমতায় গিয়ে কুফরি প্রতিষ্ঠা করতে না পারে, এজন্য আগামী সংসদ নির্বাচনে তাদের ভোট দেয়া যাবে না। যদিও হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর এই বক্তব্যকে তার ব্যক্তিগত অভিমত বলে অখ্যায়িত করেন। তার পরও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামপন্থি ভোটারের ভোট ভাগ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জামায়াত। 

সূত্র মতে, হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। বিশেষ করে হেফাজতের আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীসহ প্রথম সারির একাধিক নেতার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দলটির ওলামা কমিটিকে। ইতিমধ্যে ওলামা কমিটি সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে। তবে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।

এ ব্যাপারে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং ওলামা কমিটির সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, আমরা আশাবাদী, অচিরেই দেশের আলেম সমাজ এক কাতারে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, হেফাজতের মুরুব্বিদের সঙ্গে জামায়াতের কোনো বিরোধ নেই। যে সব কথা বলা হচ্ছে সেগুলো ব্যক্তিগত মান অভিমানের। 

একই ভাষায় মন্তব্য করেছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং প্রচার ও মিডিয়া প্রধান এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, ওলামায়ে কেরাম আমাদের মর্যাদার আসনে আছেন। কারও সঙ্গে আমাদের সমস্যা নেই। আমরা একই লক্ষ্যে কাজ করছি। হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক সংগঠন। আমরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের দোয়া ও পরামর্শ চাই। 

হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত মাওলানা মামুনুল হকসহ কয়েক নেতার নেতৃত্বাধীন কয়েকটি রাজনৈতিক দল জামায়াতের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে, তারপরও হেফাজতে থাকা ‘অরাজনৈতিক’ নেতাদের অনেককে প্রকাশ্যে জামায়াতবিরোধী ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে। জামায়াত চাইছে তাদের সঙ্গেও দ্রুত দূরত্ব কমিয়ে আনতে। এ জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর ওলামা কমিটির নেতারা। এ কারণে প্রকাশ্যে তীব্র সমালোচনার পরও জামায়াতের পক্ষ থেকে জবাব না দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রাজনীতিতে নানামুখী মেরূকরণ ঘটছে। বিএনপি’র এক সময়ের জোটসঙ্গী ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো স্বতন্ত্র নির্বাচনী জোট গড়ার চেষ্টা করছে। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল সমঝোতার পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কয়েকটি অভিন্ন দাবিতে এই দলগুলো গত মাস থেকে রাজপথে যুগপৎ কর্মসূচিও পালন করছে। 

অভিন্ন দাবিতে জামায়াতের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে সঙ্গী হয়েছে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন, মাওলানা মামুনুল হকের বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, হাফেজ্জি হুজুরের বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ড. আহমদ আবদুল কাদেরের খেলাফত মজলিস, সারওয়ার কামাল আজিজীর নেজামে ইসলাম পার্টি। এই দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাই দেওবন্দি ধারার আলেম। একইসঙ্গে তারা হেফাজতে ইসলামের নেতাও। শুধু ইসলামী আন্দোলন নেতারা সরাসরি হেফাজতের নেতৃত্বে নেই। তবে তারাও হেফাজতের মতো দেওবন্দি আদর্শে বিশ্বাসী। 

জামায়াতের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, হেফাজতের আমীরের বক্তব্য, জামায়াতের বিবৃতি ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দলটির জন্য নির্বাচনের আগে অস্বস্তির কারণ হতে পারে। এ কারণে জামায়াত এ মুহূর্তে সম্পর্ক উন্নয়নের নীতি নেয়। দলীয় কর্মীদের হেফাজতের নেতাদের বক্তব্যের নেতিবাচক সমালোচনা না করারও নির্দেশ দেন জামায়াত আমীর। 

একে অপরের সমালোচনার কারণে সম্পর্ক খারাপ হোক তা কোনোভাবেই চায় না জামায়াত। গত ৪ঠা অক্টোবর রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ্‌ মিলনায়তনে দলের কেন্দ্রীয় ওলামা কমিটির উদ্যোগে ‘দাঈ ও ওয়ায়েজ’ সম্মেলনেও জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বিতর্কিত ও সমালোচনামূলক বক্তব্য না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তার দলের অনুসারি আলেমদের। এমতাবস্থায় জামায়াত-হেফাজতের দূরত্ব কমছে কি-না এক কথায় জানতে চাইলে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়