বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরার ৩ বছরের সাজা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। বুধবার (৩০ এপ্রিল) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের বিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলায় ২০০৭ সালে আমান উল্লাহ আমানকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। সেই সঙ্গে একই মামলায় তার স্ত্রী সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
সাজা বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় খালাস পেয়েছেন বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমান। আদালতের দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে তাদের করা আপিল মঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।
এ মামলায় খালাস পাওয়ায় ভবিষ্যতে নির্বাচনে অংশ নিতে আমান উল্লাহ আমানের আইনি কোনো বাধা নেই বলেও জানিয়েছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আলোচিত ‘ওয়ান-ইলেভেন’র সময় ২০০৭ সালের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৩০ মে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানি শেষে তাদের দণ্ড বহাল রেখে রায় দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রায় পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট সেই রায় প্রকাশ হয়।
২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণের পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-১ এর বিচারক আবুল কাশেম।
এরপর তিনি আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। একই সঙ্গে জামিন আবেদনও করেন। তবে আপিল বিভাগ ৪ ডিসেম্বর তাকে জামিন না দিয়ে লিভ টু আপিলের শুনানি করতে বলেন। সে অনুসারে শুনানি শেষে ১৪ জানুয়ারি লিভ টু আপিল মঞ্জুর করা হয়।
এ অবস্থায় ফের তিনি জামিন চেয়ে আবেদন করেন। পরে গত বছরের ২০ মার্চ আমানকে জামিন দেন আপিল বিভাগ।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন।
পরে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাইকোর্টে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়।
আপিল বিভাগের এই রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন আমান। পরে সে আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর হাইকোর্ট বিভাগে ফের শুনানির পর সস্ত্রীক আমানের দণ্ড বহাল রাখা হয়।