শিরোনাম
◈ বিদ্যুৎ আমদানিতে আদানির ৪০ কোটি ডলারের ‘শুল্ক ফাঁকির’ অনুসন্ধানে দুদক ◈ হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের জামিন ◈ আবারও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি ◈ আজ গভীর রা‌তে বা‌র্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মু‌খোমু‌খি ◈ প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা ◈ বড় সুখবর দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য ◈ টি-টোয়েন্টি সি‌রিজ খেল‌তে পাকিস্তানে যাচ্ছে বাংলাদেশ ◈ আমার স্বামী চায় আমি খোলামেলা জামা পরি: মডেল পিয়া বিপাশা ◈ বিচারকাজে বাধা ও হুমকি: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ◈ ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ঘর হস্তান্তর: সেনাবাহিনীর দক্ষতায় অর্ধেক খরচে সফল বাস্তবায়ন

প্রকাশিত : ০৪ মার্চ, ২০২৫, ১০:৫৭ দুপুর
আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:০০ রাত

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী এক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রকাশ্যে, যা জানাগেল

এল আর বাদল : বাংলাদেশে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কোনো নেতা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এই প্লাটফরমের রংপুরের এক নেতার এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির ভিডিও এবং অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।

রংপুরের হাজির হাট এলাকায় গ্রীন সিটি ইকো পার্ক নির্মাণ প্রকল্পের এক কর্মকর্তার কাছে এক লাখ টাকা দর-কষাকষির ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর অভিযুক্ত নাহিদ হাসান খন্দকারকে সংগঠনের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছে। বিবিসি বাংলা

এরই মধ্যে গতকাল রোববার চাঁদা দাবির বিষয়ে রংপুর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে এবং প্রাথমিক অনুসন্ধানও শুরু করেছে পুলিশ। রংপুরের পুলিশ সুপার মো. আবু সাইম বিবিসি বাংলাকে জানান, চাঁদাবাজির বিষয়ে অভিযোগটি করেছেন ইকো পার্ক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আতিকুল ইসলাম।

আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি থানায়। ওইটার আজকে আমরা প্রিলিমিনারি ইনকোয়ারি করতেছি। ইনকোয়ারি করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব" বলেন পুলিশ সুপার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির যে ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, সেটির কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার মি. সাইম বলেন, ওই অভিযোগে তার কাছ থেকে টাকা চাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নাহিদ হাসান খন্দকার।বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির কাছে আজহারুল ইসলাম তার জমি দখলের অভিযোগ দিয়েছিল। তার জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। মহানগর কমিটি থেকেই অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে পাঠানো হইছে।

দুইজন যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ বিষয়টি জানতেন বলে দাবি করেন মি. খন্দকার। তবে, রংপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মি. আহম্মদ এ বিষয় অস্বীকার করেছেন।

এর আগে, কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়কের বাবার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। একইসঙ্গে ওই সমন্বয়কের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক আসাদুজ্জামান আলী বলেন, বাবার সঙ্গে একটা রাজনৈতিক বিরোধ ছিলো, মত ভিন্নতা ছিল। জামায়াতের নায়েবের আমিরের সঙ্গে একটু বাকবিতন্ডা হয় আমার বাবার। বাবার বেশ কিছু অন্যায়- অনিয়ম আমরাও শুনতে পেয়েছি। তাদের একটা রাজনৈতিক ঝামেলার কারণে তারা আমার বাসার উপরে হামলা চালাইছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা চাঁদাবাজির এসব অভিযোগকে উদ্বেগের বিষয় বলে অভিহিত করেছেন দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি মনে করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য থেকে বাস্তবতার খাতিরে প্রত্যাশিতভাবেই একপর্যায়ে রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ ঘটেছে। কিন্তু রাজনীতির মূল ধারার যে রোল মডেল সেটি অনুসরণ করছে তারা। পাঁচই অগাস্ট থেকে সারা দেশে দলবাজি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য, দখল ব্যাপকভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে বলে মন্তব্য করেন ইফতেখারুজ্জামান।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, প্রথাগত রাজনৈতিক শক্তির হাতে এসব ঘটেছে। অর্থাৎ রাজনীতি করতে গেলে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ইত্যাদি করতে হবে, এটাই কিন্তু রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা থেকে মূল ধারার রাজনৈতিক শক্তি বেরিয়ে আসতে পারে নাই। এরই প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি বা নতুন রাজনৈতিক দল, তারা ওই জায়গা অনুসরণ করা শুরু করেছে।

ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন জাতির প্রত্যাশা পূরণের জন্যই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ ধারা এখনই পরিহার করা অপরিহার্য।

ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বা জাতীয় নাগরিক কমিটির কোনো কোনো নেতার এ পথে যাওয়ার দায় মূল ধারার রাজনৈতিক মডেলের বলেও মনে করেন তিনি। আমি মনে করি অবশ্যই আমাদের মূল ধারার রাজনৈতিক শক্তিগুলোর এটার মূল দায়। এটা তাদের মেনে নিতে হবে" বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

ভিডিওতে কী রয়েছে ?

গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারি রাত এগারটায় নগরীর গ্রীন সিটি ইকো পার্কের ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেনের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরে আরও বেশ কয়েকটি কল রেকর্ডও ছড়িয়ে পড়ে।

দুই মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নাহিদ ওই কথোপকথনে আরও দুই জনের সাথে কথা বলছেন। ভিডিও তে শোনা যায় এক ব্যক্তি বলছেন, "তুমি যদি কওতো এখানে যে বালুর ব্যবসা আছে, বন্ধ করে দেবো"।

উত্তরে নাহিদ বলেন, না না ব্যবসা আপনি বন্ধ করবেন কেন? ব্যবসা চালান। দরকার হলে রাতেই ভাইয়ের সাথে কথা বলেন। সময় নেন, কোনো সমস্যা নাই।

এ সময় অপর ব্যক্তি তাকে এক লাখ টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে পাঁচ হাজার টাকা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু মি. খন্দকার ওই টাকা নিতে রাজি হননি। এ সময় কথোপকথনে যুক্ত থাকা অন্য দুজন বারবার পাঁচ হাজার টাকা নিতে অনুরোধ করলে মি. খন্দকার বলেন, "আপনি ভাইর সাথে কথা বলেন, সময় নেন। আমি তো কই নাই যে এখনই দিতে হবে। প্রকল্পের কাজে বাধা দেবেন না বলে বলে উল্লেখ করেন মি. খন্দকার।

ওই কথোপকথনের এ পর্যায়ে সমন্বয়ক নাহিদ হাসান খন্দকার বলেন, আপনিতো দেখছেন বিষয়টা কোথায় গেছে। ইউএনওকে সামলাইতে হচ্ছে, ডিসিকে সামলাইতে হচ্ছে। আপনি ভাইয়ের সাথে কথা বলেন। যদি আপনাদের মনে হয়.... ছেলে-পেলেদের একটু ইয়ে করবেন। আপনি তো জানেন একটা সংগঠন করতে গেলে কী করতে হয়, আপনিতো জানেন। আমি চাচ্ছি না আপনার কোন সমস্যা হোক। বা এদিকে আমাদের কোন সমস্যা হোক" বলেন মি. খন্দকার।

মি. খন্দকারের কথোপকথনের এই ভিডিও ছাড়াও আরও কয়েকটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়। সেগুলোর একটিতে শোনা যায়,আগের কথোপকথনের ভিডিও ফাঁস করা হয়েছে কি না, ফোন কলের অপর প্রান্তের ব্যক্তিকে প্রশ্ন করছেন নাহিদ খন্দকার।

অভিযুক্ত সমন্বয়ক নাহিদের বক্তব্য

চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে প্রথমে মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত নাহিদ হাসান খন্দকার। কিন্তু পরে তিনি দাবি করেন, তাকে ফাঁসানোর জন্যই ভিডিও করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে বেশ কিছু নিউজ হবে।

মি. খন্দকার জানান কালকে (রোববার ২ মার্চ) বিকেলে জায়গাটার আসল মালিক একটা সংবাদ সম্মেলন করেছে। আজকেও বেশ কিছু নিউজ হতে যাচ্ছে যে আমাকে কীভাবে ফাঁসানো হইছে। ওইটার বিষয়ে পরে কিছু নিউজ হবে, পুরাটাই আমাকে চাপে ফেলার জন্য এটা করা হইছে। যতগুলো ভিডিও হয়েছে, আমি কিন্তু একটাতেও বলি নাই আমাকে টাকা-পয়সা দেন।

তিনি দাবি করেন, চাঁদা দাবির যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, কোনটিতেই তার মুখ থেকে এক লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে, এমন বিষয় নেই। বরং তাকে বারবার টাকা নেয়ার জন্য অফার দেয়া হয়েছিল। আমি একবারও কিন্তু টাকা চাইনি। আমাকে বারবার টাকা দিতে চাচ্ছিল এবং আমি নিতে চাইনি, বলেন মি. খন্দকার।

যদিও ভিডিওতে দেখা যায়, নাহিদ খন্দকার টাকা দিতে অপর ব্যক্তিকে সময় নিতে বলেন। তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির কাছে জমির মালিক আজহারুল ইসলাম জমি দখলের অভিযোগ দিয়েছিল। ওই জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন। একইসাথে মহানগর কমিটি থেকেই তাকে এই অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে পাঠানো হয় বলে দাবি করেন অভিযুক্ত নাহিদ খন্দকার।

দুইজন যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মহানগরের আহ্বায়কও এ বিষয়টি জানতেন বলেও দাবি করেন মি. খন্দকার। তবে ভিডিওতে দেখা যায়, টাকা নিতে অস্বীকার করেননি তিনি। এমনকি একটি অডিওতে জেলা প্রশাসকের কথাও উল্লেখ করতে শোনা গেছে।

তিনি দাবি করেন, আমি টাকা চাইনি। বলছিলাম যে ভাই আমি এক টাকাও চাই না। আমি নেই নাই। আমার কথাগুলো তারা দেয়নি। যদিও আমার কল-রেকর্ড করা নাই। যদি থাকতো আমি দিতাম। তিনি দাবি করেন, রংপুরে যতগুলো বালু মহাল আছে, সেগুলো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোকজন দখল করে আছে। এখন অন্যরা নতুন করে দখল করার চেষ্টা করছে। এখন আমরা যখন ইনভলভ হয়েছি, আমরা যাতে ভয়েস রেইজ করতে না পারি, সেজন্য এগুলো করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই গত পহেলা মার্চ অভিযুক্ত নাহিদ হাসান খন্দকারকে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রংপুর মহানগরের মুখ্য সংগঠক আলী মিলন স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়েছে, অবৈধ বালু উত্তোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির অভিযোগের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের সংশ্লিষ্টতার প্রশ্ন উঠেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো প্রকার অবৈধ কর্মকা-কে প্রশ্রয় দেয় না বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে কারণ দর্শানোর নোটিশে। কেন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানাতে বলা হয়েছে।
অন্যথায় বিষয়টি সাংগঠনিক নিয়মে সম্পন্ন করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ নিয়ে পুলিশের বক্তব্য

রংপুরের পুলিশ সুপার মো. আবু সাইম জানান, আতিকুল ইসলামরা ছয় ভাই-বোন মিলে ইকো - পার্কটি তৈরি করছেন। উনি মাটি ভরাট করছেন। এদিকে, গতকাল রোববার আতিকুল ইসলামের আপন ভাই আজহারুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, তার ভাই আতিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন জালিয়াতি করে তার ওই জমিটি দখল করেছেন। একইসাথে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমি থেকে বালু উত্তোলন করছেন।

আজহারুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। তারা সত্যতা যাচাই করতে ওই স্থানে গিয়েছিল। তাদেরকে টাকা দেয়ার লোভ দেখানো হয়। কিন্তু এডিটিং করে কথোপকথনের ভিডিও প্রকাশ করা হয়।

রোববারের ওই সংবাদ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার মি. সাইম বলেন, আমরা জানি না এটার সত্য-মিথ্যা। এটাও আমরা দেখবো। জমি-জমা নিয়ে কোন কিছু আছে কিনা, সেটাও আমরা খতিয়ে দেখে তারপরে ব্যবস্থা নেব। 

সোশাল মিডিয়ার এ সংক্রান্ত ভিডিও ক্লিপগুলো দেখেছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। সোমবার (৩ মার্চ)  ঘটনাস্থলে প্রাথমিক অনুসন্ধান করতে পুলিশ কর্মকর্তারা গেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, "প্রিলিমিনারি ইনকোয়ারি দ্রুত শেষ হয়ে যাবে আশা করি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা কী বলছেন?

রংপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ ইমতি অবশ্য কমিটির পক্ষ থেকে ওই জায়গায় অভিযুক্ত নাহিদকে পাঠানো হয়েছে এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। বরং একটি ধর্ষণের মামলায় অগ্রগতি ছিলো না, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খোঁজ খবর নিতে চার-পাঁচজন সদস্যকে পাঠানো হয় বলে জানান আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ।

বিবিসি বাংলার কাছে মি. আহম্মদ দাবি করেন, ধর্ষণের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে ওখানে অবৈধভাবে বালু তোলার ঘটনা তারা জানতে পারেন। পরবর্তীতে এতটুকু জানতে পারছি যে, ওখানে যারা ছিল তারা বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখানোর চেষ্টা করছিল। এটার পরে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিল।

মি. আহম্মদ জানান, বিভিন্ন সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে নানা ধরনের অভিযোগ আসে। এই অভিযোগটিও তালিকায় ছিল। তবে ওইদিন অভিযুক্ত নাহিদ বা কাউকে খোঁজ – খবর করতে সেখানে পাঠানো হয়নি।
এরপরে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ কমিটি পেয়েছে জানিয়ে তিনি দাবি করেন, "একটি মহল আসলে বিষয়গুলোকে অনেক বাড়াবাড়ি আকারে প্রকাশ করতেছে। কোন কোন স্থানে একটু এডিটও করা হয়েছে বলে পাচ্ছি।

সংগঠনের পক্ষ থেকেও এ ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে তদন্তের অনুরোধ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই আহ্বায়ক। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান মি. আহম্মদ।

দোষী যেই হোক, এক্ষেত্রে আমাদের আসলে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। আমার প্ল্যাটফর্মের যদি কেউ জড়িত থাকে তবে আমরা কেন্দ্রের সাথে কথা বলে, তারা যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে তাকে তা মেনে নিতে হবে" বলেন মি. আহম্মদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়