আমিনুল ইসলাম: [২] শুক্রবার সকালে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ছাত্র ও যুবকদের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।
[৩] সভায় তিনি আরো বলেছেন, প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না। জনতার রুদ্ররোষ ক্রমেই গণবিস্ফোরণে রূপ নিচ্ছে। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সব বাহিনী নামানো হয়েছে, সব রকম নির্যাতনের পরও আন্দোলন বন্ধ করা যায়নি। ক্রমেই আন্দোলন বাড়ছে, আরও বাড়বে। ইসলামী আন্দোলন এবং সকল সহযোগী সংগঠন আন্দোলনকারীদের সাথে এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
[৪] তিনি আরো বলেন, সারাদেশে পুলিশকে গ্রেপ্তার বাণিজ্যের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। নিরীহ নিরাপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকার গ্রেপ্তার বাণিজ্য করা হচ্ছে। এর সাথে পুলিশ ও সরকার দলীয় লোকজন জড়িত। কিন্তু জুলুম নির্যাতনের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেও সরকারের আখের রক্ষা হবে না। সরকারকে গণহত্যার দায় নিয়ে পদত্যাগ করতেই হবে।
[৫] ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদের সভাপতিত্বে এবং ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মানসুর আহমাদ সাকী ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মুনতাছির আহমাদের যৌথ সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
[৬] মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনের ইতিহাস তারা বলে না। তখন তারা এক ভয়ঙ্কর শাসন ব্যবস্থা উপহার দিয়েছিল জাতিকে। বাকশাল কায়েম করে জনগণের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছিল। ৭৫এর খুনিদের বিচার হলে ২০২৪ এর খুনি শেখ হাসিনারও বিচার হবে। হাজার হাজার ছাত্র ও শিশু খুন করেছে এই অবৈধ সরকার।
[৭] তিনি আরো বলেন, আমরা নমরুদ, ফেরাউন, সাদ্দাদকে দেখিনি, কিন্তু আমরা শেখ হাসিনাকে দেখছি কত ভয়ঙ্কর, কত খুনি, কত মিথ্যাবাদী, জালিম। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সভায় ওবায়দুল কাদেরকে সবাই ভুয়া ভুয়া বলে তিরস্কার করেছে। লজ্জা থাকলে কাদের জাতির সামনে মুখ দেখাতো না।
[৮] মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ববাসী এই হত্যার ভিডিও দেখেছে, সেখানে পুলিশ তাকে খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করে। কিন্তু এই জালিম ও খুনি ১৬ বছরের একটি শিশুকে আবু সাঈদের খুনি হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে। জুলুম ও মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকা চাই।
[৯] ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে কেন বিদায় নিতে হবে, কে দেশ চালাবে? এই নির্লজ্জ সরকার লজ্জা থাকলে এমন কথা বলতো না। এজন্য খুন ও নির্যাতনের পথে হাঁটছে সরকার। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ প্রমাণ হলে সংবিধান অনুযায়ী সরকারের ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। শেখ হাসিনা যাদেরকে নিয়োগ দিয়েছে এরা সবাই দুর্নীতিবাজ।
[১০] শেখ হাসিনার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হলে, শেখ হাসিনা কত কোটি টাকার মালিক? পিয়ন দুর্নীতিবাজ হলে মালিক দুর্নীতিমুক্ত হয় কিভাবে? পুলিশের আইজি, সেনাপ্রধান, মতিউরসহ সবাই দুর্নীতিবাজ। কাজেই এই সরকারও দুর্নীতিবাজ সরকার। তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
[১১] এই আন্দোলন এখন সরাসরি এসব হত্যার বিচার চায়। ওই সব মন্ত্রী, যারা গুলির নির্দেশ দিয়েছেন, উসকে দিয়েছেন ছাত্রলীগকে, তাদের পদত্যাগ চায় দল থেকে এবং সরকার থেকে। এই আন্দোলন কেবল কোটার আন্দোলন নয়, প্রধানমন্ত্রী যাতে সব হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চান, শিক্ষার্থীরা সেই দাবি করেছেন। এগুলো মানতে হবে। সরকারের মধ্যে একধরনের গৃহদাহ শুরু হয়েছে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এআই/কে/এনএইচ
