মাজহার মিচেল: গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) প্রশান্তি দেয়। একসময় এই যন্ত্রটিকে বিলাসিতার উপকরণ মনে করা হলেও বিশ্বজুড়ে গরমের তীব্রতা বাড়তে থাকায় এটি এখন প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এর ব্যবহার বাড়ছে, তেমনি প্রায়ই এসি বিস্ফোরণের ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছে হরহামেশা। তবে সতর্কতামূলক কিছু ব্যবস্থা নিলে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা সামন্ত লাল সেন জানান, তিন-চার বছর যাবত তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা দগ্ধ রোগীদের মধ্যে অনেকেই এসি বিস্ফোরণের শিকার।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অলোক কুমার মজুমদার বলেন, এসি দুর্ঘটনার পেছনে তিন চারটি কারণ রয়েছে।
এর মধ্যে প্রধানত দুই ধরনের বিষয়কে বেশি দায়ী করে থাকেন সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা- এসির মান নিয়ন্ত্রণের ঘাটতি ও সময়মতো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়া।
এর মধ্যে ব্যবহারকারীদের অসচেতনতাই বিস্ফোরণের প্রধান কারণ বলেই তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। বুয়েটের জানান, ত্রুটিপূর্ণ তারের ব্যবহার, কমদামী ননব্র্যান্ডের এসি কেনার প্রবণতা ও একটানা বহুক্ষণ এসি চালানোসহ অসচেতনতার কারণে বিস্ফোরণ ঘটে।
অধ্যাপক অলোক কুমার মজুমদার বলেন, দেশে বেশিরভাগ বাসাবাড়ির ওয়্যারিং সিস্টেম এসি ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত না। সেজন্য তারে ত্রুটি থাকলে শর্ট সার্কিট থেকে বিস্ফোরণ হয়।
অনেকে খরচ কমাতে নন-ব্র্যান্ডের এসি কেনেন, যেগুলোতে নকল ও ত্রুটিপূর্ণ কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। তাই সেখানে বিস্ফোরণের ঝুকি থাকে। অবিরাম এসি চলতে থাকলেও বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এসি দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসির গ্যাসে আগুন লেগে সেটি ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
আবার অনেক সময় উইন্ডো এসির সামনে জানালা বা দরজার পর্দা চলে এলে বাতাস চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়। সেটিও এসিকে গরম করে তুলতে পারে বলে তিনি জানান।
এসি বিস্ফোরণ ঠেকাতে সাবেক প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে বিস্ফোরণ ব্যাবহারের ক্ষেত্রে আরও কঠোর নীতিনির্ধারণের দায়িত্ব নেয়ার পরামর্শ দেন।
এমএম/এএ