এ সেলিম রেজা: হাদিস সংকলনের ইতিহাস কী বদলে যাবে? নতুন করে আবার সংকলিত হচ্ছে আল হাদিস? আল্লাহর প্রিয নবী ও রাসূল হজরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম)-এর কথা, কাজ ও অনুমোদনকে হাদিস বলা হয়। বোখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, জামে আত-তিরমিজি, সুনানে আন-নাসায়ী, সুনানে ইবনে মাজা, সুনানে আবু দাউদ শরীফ প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থ। এছাড়া মুয়াত্তা ইমাম মালিক, রিয়াজুস সালেহীন, ইমাম আবু হানিফা সংকলিত আরো অনেক হাদিস গ্রন্থ রয়েছে। আল্লাহর কিতাব পবিত্র আল কুরআনের পর হাদিসের কিতাবগুলো মুসলিমদের জন্য হেদায়েত এবং অনুপ্রেরণার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু জাল হাদিসের প্রচার ও সংঘবদ্ধ প্রোপাগান্ডার কারণে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে বারবার শান্তির ধর্ম ইসলামের নাম জড়িয়ে বিশ্বময় মুসলিমদের অপদস্থ করা হচ্ছিলো। তাই ইসলামের ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধারে সৌদি আরব নতুন করে পবিত্র হাদিসগুলো পুনরায় শ্রেণিবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘হাদিস ডকুমেন্টেশন প্রজেক্ট’। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে এইজন্য একটি প্রসিদ্ধ উলামা কমিটি কাজ করছে। কমিটিকে বিশেষভাবে দেখতে বলা হয়েছে, কোন হাদিসগুলো মুহাম্মদ (সা.) এর বাণীর সঙ্গে খাপ খায় না এবং হিংসা ও হত্যাকান্ডকে যথার্থ প্রমাণ করতে তাঁর কোন বাণীকে বিকৃত করা হয়েছে। যে সব হাদিস রক্তারক্তি ও হানাহানির কথা বলে, মুহাম্মদ (সা.) এর বার্তাকে বিকৃত করে সেগুলো হাদিস থেকে বাতিল করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিশ্বাস করেন যে, খাঁটি এবং যাচাইযোগ্য হাদিসের অভাবে, চরমপন্থীদের দ্বারা প্রচারিত হাদিসের ব্যাপক অপব্যবহারই ইসলাম ধর্ম বিতর্কিত হওয়ার জন্য দায়ী। এক বছর আগে আমেরিকান ম্যাগাজিন দ্য আটলান্টিকের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ বিষয়ে খোলাখুলি বলেছিলেন, হাদিসের অপব্যবহার মুসলিম বিশ্বে চরমপন্থী এবং শান্তিপূর্ণ মানুষদের মধ্যে বিভক্ত হওয়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ইউরোপ আমেরিকাপন্থী অনেক ইসলামিক স্কলাররা মনে করছেন, এই উদ্যোগের ফলে আব্বাসীয় ও উমাইয়া যুগের রাজনৈতিক রঙ মাখা অনেক হাদিস বাতিল হয়ে যাবে। এতে অবশ্য ইসলাম সম্পর্কে বিশ্বে একটি গঠনমূলক ও ইতি বাচক ধারণার বিস্তার ঘটবে এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে বলেও মনে করেন অনেকে। আল্লাহই ভালো জানেন। ফেসবুক থেকে