শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১১ জুন, ২০২৩, ০১:৫৯ রাত
আপডেট : ১১ জুন, ২০২৩, ০১:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রেমিটেন্স যোদ্ধাদের যেন হয়রানি করা না হয়

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: আমিও একজন ছোটখাটো রেমিটেন্স যোদ্ধা। আমার পোস্ট-ডক হোস্টের ৭০তম জন্মদিন উপলক্ষে গেলো মার্চে একটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই কনফারেন্সে যোগ দিতে আমাকে যাতায়ত ও থাকা খাওয়ার খরচ সহকারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। পুরো ভ্রমণে আমাকে একটি পয়সাও খরচ করতে হয়নি। থ্যাংকস গড। নচেৎ আমার বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে নাকি ছুটিই দিত না। এমনকি নিজের টাকায় যেতে চাইলেও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত একটি প্রজ্ঞাপনের অজুহাত দেখিয়ে নাকি কাউকেই ছুটি দিচ্ছে না। মানে ‘আর ইউ কিডিং’ সব? যতটুকু জানি প্রজ্ঞাপনটি সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত। ওই প্রজ্ঞাপনের উদ্যেশ্য হলো সরকারি টাকা খরচ করে কেউ যেন বিদেশে যেতে না পারে। উদ্দেশ্য সরকারের অর্থ/ডলার বাঁচানো। তাহলে নিজের টাকায় গেলে সমস্যা কোথায়? এইরকম একটি প্রজ্ঞাপনকে ৭৩ এর অধ্যাদেশ দ্বারা চালিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কিভাবে প্রযোজ্য হয়? 

৭৩ এর অধ্যাদেশের স্পিরিটটাই হলো স্বায়ত্বশাসন বা কারো ডিকটেশনে না চলা। আর আমার নিজের টাকায় গেলে সরকারের কী আসে যায়? দেশের হাজার হাজার মানুষ নিজের টাকায় ব্যবসা, চিকিৎসা, ঘুরতেসহ অসংখ্য ভিন্নরকম কাজে বিদেশ যাচ্ছে। সেখানে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করে আমার নিজের টাকায় যদি কনফারেন্সে যাই, ঘুরতে যেতে চাই তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে এই প্রজ্ঞাপন দেখিয়ে ছুটি না দেয়? এই ছুটি পাওয়াতো আমার অধিকার। হ্যা, কর্তৃপক্ষ বা সরকার বলতে পারে যে এই মুহূর্তে আর্থিক কারণে তারা কনফারেন্সে যোগদানের জন্য কোন শিক্ষকের কোনরকম আর্থিক ব্যায় ভার বহন করতে পারবে না। সেটা না হয় কষ্ট হলেও মানা যায়। কিন্তু কেউ যদি নিজের টাকায় কনফারেন্সে যোগ দিতে বিদেশে যেতে চায়? শুনেছি বুয়েট এই প্রজ্ঞাপন মানে না। তারা তাদের শিক্ষকদের ছুটি দিচ্ছে। বুয়েট ৭৩ এর অধ্যাদেশ দ্বারা পরিচালিত না হয়েও বুয়েট কর্তৃপক্ষ আমাদের চেয়ে মনে হচ্ছে বেশি স্বাধীন। আসলে আইন দিয়ে কাউকে স্বাধীন কিংবা পরাধীন করা যায় না। মনের স্বাধীনতাই হলো আসল স্বাধীনতা।  

যাহোক আমার ছুটি পেতে অসুবিধা হয়নি কারণ আমার হোস্ট আমার সমস্ত খরচ বহন করেছিল। তারা আমাকে এই খরচ না বহন করলেও আমি যেতাম। এইরকম নিজ খরচে আমি অনেক কনফারেন্সে যোগ দিতে আমি চীন, আমেরিকা, ভারত অনেকবার গিয়েছি। গতকাল আমার ব্যাংক থেকে একটা ফোন পেলাম যে আমাকে একটি ফর্মে স্বাক্ষর করতে হবে কারণ আমার একাউন্ট-এ কিছু ইউরো আসছে। শুধু স্বাক্ষর না, একই সাথে কারা পাঠাচ্ছে, কেন পাঠাচ্ছে ইত্যাদির সাপোর্টিং ডকুমেন্টসও নিয়ে যেতে হবে। দেশে এখন ডলার সংকট। সরকার চায় রেমিটেন্স আসুক। আমার এই সামান্য কয়টা টাকার জন্যই সাপোর্টিং ডকুমেন্টস চাচ্ছে। এইটা আমার কাছে একটা অতিরিক্ত বিড়ন্বনা লাগছে। এই অতি নঁৎবধঁপৎধপু-র জন্যই মানুষ প্রপার চ্যানেলে টাকা পাঠাতে চায় না। ব্যাংকে গিয়ে দেখি এক বৃদ্ধ প্রায় অশিক্ষিত মহিলাও সেখানে। তার কোন এক আত্মীয় হয়ত কিছু অর্থ পাঠিয়েছে। সেও নাকি দুইদিন ধরে ওখানে ঘুরছে। ভাবছি এমনি এমনি কি আর মানুষ হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করে? সেই মাধ্যমে টাকাও বেশি আবার ঝামেলাও কম। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের একটু বলে আসলাম যেন তারা রেমিটেন্স যারা পাঠায় তাদের যেন হয়রানি না করে। এর সুফল তিনি, আমিসহ আমরা সবাই পাই।

 লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়