তসলিমা নাসরিন: এদিক ওদিক যাচ্ছি, একটু আধটু হাঁটছি, তবে সাপোর্ট ছাড়া এখনও স্বাভাবিকভাবে হাঁটা সম্ভব হচ্ছে না। আরও দু’তিন মাস ফিজিওথেরাপির পর হয়তো সম্ভব হবে। করপোরেট মাফিয়া জেনেশুনে যে ক্ষতি আমার করেছে, সে ক্ষতি কোনও কিছু দিয়েই পুরণ করা সম্ভব নয়। ওরা যে ইমপ্লান্ট বসিয়ে দিয়েছে আমার শরীরে, সেটির আয়ু বড়জোর দশ বছর। দশ বছরের মধ্যে যদি অ্যাডভান্সড ক্যান্সার বাঁধিয়ে বসি, বা হৃদপিণ্ডের অ্যাটাক বা স্ট্রোক, তাহলে একরকম বেঁচে যাবো। তা না হলে প্রথম ইমপ্লান্ট অকেজো হওয়ার পর দ্বিতীয় ইমপ্লান্টের কাজ না করার আশংকাই যেহেতু বেশি, বিতিকিচ্ছিরি একটা জীবন আমার জন্য অপেক্ষা করবে, যে জীবন যাপন করার আগ্রহ আমার আদৌ থাকবে বলে মনে হয় না। মানুষ আশি নব্বই পর্যন্ত বাঁচে, আমি না হয় সত্তর অবধিই বাঁচলাম। সত্তর, এও হয়তো লাক্সারি। যখন এক মিনিটেরই ভরসা নেই।
আমার পোশাকও পাল্টে ফেলতে হয়েছে ভয়াবহ সার্জারিটার কারণে। সালোয়ার কামিজ আমার পছন্দের পোশাক নয়। অথচ পরতে হচ্ছে এ ছাড়া অন্য কিছু পরার সুবিধে কম বলে। অনিচ্ছের সঙ্গে এমন আপোস আমি খুব কমই করেছি জীবনে। মাঝে মাঝে নিজেকে চিনতে পারি না। আমাকে আমিই প্রশ্ন করি, এ আমি তো? লেখক : কথাসাহিত্যিক। ফেসবুক থেকে