স্বকৃত নোমান: পল্টনের এক মিষ্টির দোকানে গিয়েছিলাম মিষ্টি কিনতে মরণচাঁদ ঘোষ অ্যান্ড সন্স’। সেলসম্যান যখন মিষ্টি মাপছিলেন, আমি তখন চোখ বুলাচ্ছিলাম দোকানের চারদিকে। ক্যাশবক্সের উপরের দেওয়ালে বর্তমান মালিকের পূর্বপুরুষদের ছবি টাঙানো। সেসব ছবির পাশে গেলাপে ঢাকা একটি মাজারের ছবি। নীচে উর্দুতে লেখা ‘খাজা গরিবে নেওয়াজ’। অর্থাৎ খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির মাজার। হিন্দু সম্প্রদায়ের মিষ্টি ব্যবসায়ীর দোকানে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুর সমাধির ছবি থাকার কথা নয়। সাধারণত থাকে না। এই দৃশ্য আমাদের চোখে একটু আনকোরা ঠেকে। কিন্তু এটা অস্বাভাবিক নয়। সুফিদের হাত ধরে এ দেশে যে ইসলাম এসেছিলো, তার সঙ্গে এ দেশের অন্তজ হিন্দুদের কোনো বিরোধ অতীতে ছিলো না, বর্তমানেও নেই। হিন্দুগুরু আর মুসলিম সহজিয়া পীরের মধ্যে কোনো বিরোধ ছিলো না।
বিরোধটা আমদানিকৃত। বিরোধটা চাপিয়ে দেওয়া। চাপিয়ে দেওয়া বিরোধের রেষ এখনো চলছে। হয়তো আরও কিছু কাল চলবে। ঋতুর যেমন পরিক্রমা আছে, তেমনি সব কিছুরই পরিক্রমা আছে। ঋতুর পরিক্রমায় বসন্ত যেমন ঘুরে ঘুরে আবার আসে, তেমনি পরিক্রমায় আবার ফিরে আসবে সোহার্দ্য সম্প্রীতির সেই কাল। মহাকালে রেখাপাত। লেখক: কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :