শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০২:০৮ রাত
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০২:০৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রেম থেকে বিয়ে, পুরো প্রসিডিউর পুরুষের সংবিধান ও এডমিনিস্ট্রেশন!

সৈয়দা সাজিয়া আফরিন

সৈয়দা সাজিয়া আফরিন: সম্প্রদান করার, বাসস্থান পরিবর্তন করার, পরে বাঁধা পরিচারিকা ও সেবিকা হয়ে ওঠার প্রচলিত যে প্রতিষ্ঠান তার নাম বিয়ে। কেউ যতই দাবি করুন না কেন, বিয়েতে কোনো নারী বলতে কোনো নারী এবসলিউট পার্টনারের মর্যাদা পান না। কোটি কোটি মেধা পচে মরছে রান্না-ঘরে, পার্লারে, জিমে, কিটি পার্টিতে। কিছু তো পচার জন্য তর সইতে পারে না আগেভাগে প্রেমে মজে জীবনের সব স্বপ্নকে প্রেমিকের চাপাতির তলে রেখে দিচ্ছে নিজে নিজেই। প্রেম থেকে বিয়ে পুরো প্রসিডিউর পুরুষের সংবিধান এবং পুরুষের এডমিনিস্ট্রেশন। জীবনযাত্রায় আসা পরিবর্তন ও বাড়তি খরচ পুরুষকে কিছুটা আপোসে নিয়ে এসেছে। তবুও মূল ভিত্তিটা পুরুষতান্ত্রিকই রয়ে গেছে। এই ভিত্তি প্রতিবছর পাস করা বুয়েট, চুয়েট বা মেডিকেল পাস দক্ষ মেয়েগুলোর পরিচয় বানিয়েছে জসিম ভাবী, কায়সার ভাবী, আমীমের মা, জামীমের মা। পৃথিবীর জন্য তারা মৃত। অস্তিত্বহীন। আমার বিশ্বাস হয় না তারা কেউ এমন জীবন চেয়েছিল। আমার বিশ্বাস হয় না কোনো দীর্ঘশ্বাস ছাড়া তারা একটি দিন ফুরোতে পারে। ভারতীয় মডেল উরফি জাভেদ একটা সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, তার বাবা-মায়ের স্বামী-স্ত্রী কম্বিনেশনটা খারাপ ছিলো। 

মিসম্যাচ। মায়ের বলার অধিকার ছিল না। মা নরম স্বভাবের সব মেনে নেন। বাবার রক্ষণশীল গোড়ামির জন্য তার শৈশব ছিল টক্সিক। প্যারেন্টিং বা সুস্থ পরিবারের জন্য কম্বিনেশনটা ম্যাটার করে। বিয়ে প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতেও নারীর সমান পার্টনারশিপে থাকা জরুরি। একজন চাকরানী আরেকজন রাজার কম্বিনেশনের পরিবারগুলোর সন্তানকে আমি উচ্ছন্নে যেতে দেখেছি। মা যথেষ্ট সময় দেন, বাবা অনেক আয় করেন তবুও। চার ভাইবোনের একেকজনের ব্যবহারের আলাদা গাড়ি, একাধিক ড্রাইভার থেকেও আমার তাদের খুব দরিদ্র মনে হয়েছে। গাড়িতে চড়ে কলেজ আসার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ঘরের এটা সেটা কাজ করাইত বাপ ও বাপের প্যাটার্নাল পরিবার। লিপ্সটিক কাপড়চোপড়ের থেকে বড় কোন জিনিস আবদারের সুযোগ তাদের  ছিল না। কারণ তাদের মায়ের সম্মান প্রজার, স্ত্রীর নয়।

প্যারালালি একটা স্বল্প বেতন মাস্টারের মেয়ে বাদাম দুধ খেয়ে, বাটার টোস্ট খেয়ে ৩০ টাকা বাস ভাড়া নিয়ে কলেজ গেছে কোচিং গেছে। কোচিং করতে ইউনি পড়তে প্রয়োজনে শহর বদলেছে। তার স্বপ্ন দেখার অধিকার ছিল বলে বিদেশে পড়ার টাকাও বাবা ইএমআই লোন করে মেয়েকে দিয়েছেন। কারণ পরিবারটিতে মায়ের মর্যাদা ছিল, সুস্থ সম্পর্ক ছিল। মেয়ের জীবনের ভিত হয়েছে বাবা মায়ের যৌথ প্যারেন্টিংয়ে।  টাকা থেকেও একজন আনপ্রিভিলেজড অন্যজন প্রিভিলেজড। শিক্ষিত সরকারি চাকুরে স্ত্রীকে পেশা ছাড়ায়ে তার জীবন নিয়ন্ত্রণ করা নার্সিসিস্ট ধনী পুরুষকেও জেনেছি। পুরুষটি যখন ষাটের ঘরে দাঁড়িয়ে তার প্রাপ্তবয়স্ক ৪ বাচ্চার কেউ এডিক্ট, বছরে একবার রিহ্যাবে থাকে, কেউ উশৃঙ্খল, বারবার বিয়ে করছে আর স্ত্রীর নির্যাতন মামলায় জেলে যাচ্ছে জেল থেকে আসতেছে।  ক্যারিয়ারের ইয়ত্তা নাই।

ব্যাড প্যারেন্টিংয়ের অনেক বড় একটা কারণ এই অসম কম্বিনেশন। পরিবারে বাবা আর মায়ের সম্মানের  বৈষম্য বাচ্চাকে কনফিউজড, ফ্রাস্ট্রেটেড, ইন্ট্রোভার্ট আর স্যডিস্ট করে তোলে। তাই ডিভোর্সড একক প্যারেন্টিং হাজার গুণ ভালো অসম বিয়ের যৌথ প্যারেন্টিংয়ের তুললায়। বিয়ে প্রতিষ্ঠান যতদিন এম্পলয়ার ও এম্পলয়ির সম্পর্ক বিন্যাসে থাকবে ততোদিন নারীর কোনো উন্নয়ন ঘটবে না। যদিও আগে বা পরে পুরুষও মারা খাবে। চুল দাড়ি পাকিয়ে বুঝলে রিভার্স গিয়ে কেউ কিছু ঠিক করতে পারে না। ষাটের পুরুষকে দেখে বুঝি। কোনো সুস্থ নারী-পুরুষ পার্টনারকে চাকর বাকরের রূপে দেখতে চায় না। নারী পার্টনারকে চাকর বানাবে না বলেই সে যাকে তাকে বিয়ে করতে চায় না। পুরুষ স্ত্রীর মধ্যে চাকরানী খুঁজে বলে তারা যাকে তাকেও করতে পারে। মূলত পুরুষ স্ত্রীর মধ্যে যে গুণাবলী খোঁজে তা ১০-১৫ হাজারের বাঁধা বুয়ার মধ্যেই বেশি। যদিও ওই কাজ করাইতে তারা চায় উচ্চশিক্ষিত মেয়ে।

প্রথাগত ও আইনত সংসারের ঘানি পুরুষকে একা টানতে হয় এবং তা হবেও কারণ তারা পার্টনারশিপ চায় না। কামানো নারীর টাকা তারা চাইলেও কামানো নারীর সঙ্গে পার্টনারশিপের সম্পর্কে থাকতে পারে না। তাদের মেইল ইগোজনিত মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য তাদের মেয়েরা দ্রুতই তিন তালাক দিয়ে দেয়। বুঝলে ভবিষ্যতে পুরুষ ভাল থাকবে ভাল রাখতে জানবে। না বুঝলে ক্ষমতা প্রকৃতির নিয়মে উলটে যাবে একদিন। নারী হবে রাজা পুরুষ তার সেবাদাতা প্রজা। খুব সম্ভবত এইটাই তাদের ভবিষ্যত। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়